ফাইল চিত্র।
অতিমারির মাত্রাছাড়া দুর্ভোগের মধ্যেই আরও একটি মাইলফলক পার করল সেনসেক্স। নজিরবিহীন ভাবে এই প্রথম পা রাখল ৫৫ হাজারের ঘরে। শুক্রবার ৫৯৩.৩১ উঠে এই সূচকের নতুন শিখর ৫৫,৪৩৭.২৯। নিফ্টিও নতুন রেকর্ড গড়ে ১৬,৫২৯.১০ অঙ্কে দৌড় শেষ করেছে। উত্থান ১৬৪.৭০। তবে বিশেষজ্ঞদের একাংশের সতর্কবার্তা, মাত্র ১১ দিনে ২৫০০ পয়েন্ট পাড়ি দিয়ে এখানে উঠেছে সূচক। সাড়ে ছ’মাসে ৫০ হাজার থেকে ৫৫ হাজার। এত দ্রুত চড়া বাজারে লগ্নির ঝুঁকিও বেশি। সাধারণ লগ্নিকারীদের সচেতন হয়ে সাবধানে বিনিয়োগের পরামর্শ দিচ্ছেন তাঁরা। বলছেন, কোনও সংস্থার শেয়ারের দাম তরতর করে উঠলে তাতে লগ্নির ব্যাপারে সাবধানে পা ফেলতে হবে। বাড়তি মন দিতে হবে সত্যিকারের ভাল শেয়ার বাছাইয়ে।
বাজার মহলের দাবি, অর্থনীতির দ্রুত ঘুরে দাঁড়ানোর আশাই উত্থানে জ্বালানি। যা এ দিন আরও উস্কে দিয়েছে জুলাইয়ে মূল্যবৃদ্ধির মাথা নামানো এবং জুনে শিল্পবৃদ্ধির উঁচু হার। যদিও বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, বাস্তবে শিল্পোৎপাদন এত বেশি দেখাচ্ছে গত বছর তার তলিয়ে যাওয়ার হিসেবের সঙ্গে তুলনা হওয়ায়। অর্থনীতির তাক লাগানো কোনও উন্নতির কারণে নয়।
বিশেষজ্ঞ সংস্থা ভ্যালু রিসার্চের এমডি ধীরেন্দ্র কুমার বলেন, ‘‘শেয়ার বাজারে লগ্নির জন্য নগদ টাকার অঢেল জোগানই সূচককে চাঙ্গা করে তুলেছে।’’ ধীরেন্দ্র-সহ অনেকের মতে, নতুন প্রজন্ম শেয়ারের লগ্নিতে ঝুঁকছেন। এমনকি রক্ষণশীল লগ্নিকারীদের একাংশও। যার কারণ, ব্যাঙ্ক-ডাকঘরে নামতে থাকা সুদ।
তবে দেকো সিকিউরিটিজ়ের কর্ণধার অজিত দে-র হুঁশিয়ারি, দেশ-বিদেশের কোনও ঘটনার সামান্য ঠোক্করেই এত চড়া বাজার হুড়মুড়িয়ে পড়তে পারে। সেটা অস্বাভাবিক বা খারাপ নয়। কিন্তু যে শেয়ারের দাম যোগ্যতার তুলনায় বেশি, তার সেই পতন সামলে উঠে দাঁড়ানো কঠিন। তাই লগ্নিকারীদের ভাল শেয়ার বাছাই করতে হবে সতর্ক ভাবে। সংস্থার শেয়ার পিছু আয়, শেয়ারের দাম ও আয়ের অনুপাত, সংস্থার আয়-মুনাফা, ব্যবসার চলন ইত্যাদি দেখে। প্রয়োজনে উপদেষ্টার পরামর্শ নিতে হবে। ক্যালকাটা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রাক্তন ডিরেক্টর বিনয় আগরওয়ালের পরামর্শ, ‘‘সংস্থার পরিচালনার পদ্ধতি, প্রোমোটারদের সুনাম এবং আর্থিক ফলাফল দেখে লগ্নি করলে হাত পোড়ানোর আশঙ্কা কম।’’ আর ধীরেন্দ্রর মতে, ‘‘একলপ্তে নয়, ক্ষুদ্র লগ্নিকারীদের উচিত ফান্ডে এসআইপি (কিস্তিতে লগ্নি) করা। এতে বাজারের ওঠানামায় ক্ষতির ভয় কম।’’