রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর শক্তিকান্ত দাস। ফাইল চিত্র।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউ দেশবাসীকে নতুন করে চিন্তায় ফেললেও, লকডাউনের বর্ষপূর্তির দিনে অর্থনীতি নিয়ে আশ্বাসের বার্তাই শোনা গেল রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর শক্তিকান্ত দাসের মুখে। বৃহস্পতিবার এক আলোচনাসভায় তাঁর দাবি, ফের বাড়তে থাকা সংক্রমণ উদ্বেগ বাড়াচ্ছে বটে, তবে তাতে অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানোর প্রক্রিয়ায় হয়তো ছেদ পড়বে না। এমনকি আরও এক বার দেশব্যাপী লকডাউন হওয়ার আশঙ্কাও চোখ পড়ছে না বলে জানান তিনি।
গত বছর আজকের দিনেই করোনাকে রুখতে লকডাউনে ঢুকে পড়েছিল ভারত। দিনের পর দিন স্তব্ধ হয়ে থাকা বহু ব্যবসা তার পরে আর মাথা তুলে দাঁড়াতেই পারেনি। বহু মানুষ চাকরি খুইয়ে বিপর্যস্ত হয়েছেন। সেই বিধিনিষেধ শিথিলের পরে আর্থিক কর্মকাণ্ড শুরু হয়েছে ঠিকই, কিন্তু অর্থনীতির এখনও ছন্দে ফেরেনি। ক্ষত এখনও এতটাই গভীর যে, চলতি অর্থবর্ষে (২০২০-২১) মোট জাতীয় উৎপাদন (জিডিপি) প্রায় ৭% সঙ্কুচিত হতে পারে বলে আঁচ করা হচ্ছে। তবে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের অনুমান, পরের আর্থিক বছরে (২০২১-২২) ১০.৫% বৃদ্ধিতে ফিরবে অর্থনীতি। কিন্তু ফের কোভিড সংক্রমণের শুরু করায় ফের জাঁকিয়ে বসছে ভয়। তবে শক্তিকান্তের আশ্বাস, অর্থনীতির চাঙ্গা হওয়ার প্রক্রিয়া নিরবচ্ছিন্ন ভাবেই চলবে।
শক্তিকান্তের দাবি, ‘‘অর্থনীতির পুনরুজ্জীবন প্রক্রিয়াকে রক্ষা করার জন্য আমাদের ‘বিমা’ আছে তো। যেমন, দ্রুত প্রতিষেধক প্রয়োগ, সাধারণ মানুষের কোভিড-বিধি মেনে চলার ক্ষমতা। দেশের অনেক জায়গায় নতুন করে কোভিড সংক্রমণ বৃদ্ধি নিশ্চয়ই আশঙ্কার ব্যাপার। তবে আমার মনে হয়, আর্থিক কর্মকাণ্ড যে ভাবে এখন ঘুরে দাঁড়াচ্ছে, আগামী দিনেও তা বহাল রাখা উচিত। প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে, পরের বছরের বৃদ্ধির পূর্বাভাস সংশোধন করে নীচে নামাতে হবে না।’’
ভারতে নতুন করে ৫০ হাজারেরও বেশি মানুষ করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। মহারাষ্ট্রের মতো রাজ্যে হু-হু করে বেড়েছে সংক্রমণ। ভাইরাসের নতুন স্ট্রেনও খুঁজে পাওয়া গিয়েছে। যে কারণে দেশের কিছু কিছু অঞ্চলে কড়া লকডাউন জারি হয়েছে। তবে শক্তিকান্তের বার্তা, ‘‘গত বছর আমরা যে লকডাউন দেখেছিলাম, সেটা ছিল বিরাট ধাক্কা। এই মুহূর্তে ফের তেমন লকডাউনের আশঙ্কা দেখা যাচ্ছে না।’’ অতিমারির প্রভাব মুছে জিনিসপত্রের দাম এবং অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে শীর্ষ ব্যাঙ্ক সমস্ত নীতি যথাযথ ভাবে কাজে লাগাতে দায়বদ্ধ বলেও এ দিন বার্তা দিয়েছেন তিনি।