সারা বিশ্বই এখন অনিশ্চিত ও অস্পষ্ট সময়ের মধ্য দিয়ে এগিয়ে চলেছে। কাজের জগতের ভবিষ্যৎ নিয়ে সব মহলে চর্চা চলছে নিরন্তর। সেই অনিশ্চয়তার মধ্যেও কোন পথে এগোনোর দিশা মিলবে, এ বার তারই খোঁজের চেষ্টা চলছে তথ্যপ্রযুক্তি জগতের রাজসূয় যজ্ঞ ইনফোকমে।
বৃহস্পতিবার থেকে কলকাতায় শুরু হয়েছে ১৮তম ইনফোকম। তিন দিনের এই শিল্প সম্মেলনে এ বার মূল বিষয়— ‘উইনিং ইন দিস ভিইউসিএ (ভোলাটাইল, আনসার্টেন, কমপ্লেক্স, অ্যামবিগুয়াস) ওয়ার্ল্ড’। অর্থাৎ অস্থির, অনিশ্চিত, জটিল ও অস্পষ্ট বিশ্বে জয় ছিনিয়ে আনার কৌশল। কারও কারও মতে, এই অনিশ্চয়তা সব কিছু নিয়েই সংশয়ের সৃষ্টি করছে সর্বত্র। কেউ আবার মনে করছেন, আসলে এই পরিস্থিতি চোখে দেখে যতই নেতিবাচক মনে হোক না কেন, আদতে এটাই বড় সুযোগ সকলের সামনে।
এরিকসন ইন্ডিয়া গ্লোবাল সার্ভিসেসের এমডি অমিতাভ রায়ের মতে, গোটা বিশ্বই এই মুহূর্তে অস্পষ্ট এবং জটিল। কিন্তু এর মধ্যেও তিনি যতটা সম্ভব আশাবাদী থাকতে চান। অমিতাভবাবুর দাওয়াই, নিরন্তর নতুন কিছু উদ্ভাবন করতে হবে।
অনেকের আবার আশঙ্কা, আগামী দিনের তথ্যপ্রযুক্তি বহু কাজ কেড়ে নেবে। বহু মানুষ বেকার হয়ে পড়তে পারেন। দেখা দিতে পারে আর্থিক সঙ্কট। এ দিন ইনফোকমে আন্তর্জাতিক সমীক্ষার উল্লেখ করে অমিতাভবাবু কিন্তু স্পষ্ট জানিয়েছেন,আগামী পাঁচ বছরে গোটা বিশ্বে প্রায় ১২.৭ কোটি চাকরি যেমন খোয়া যাবে, তেমনই কিন্তু একই সঙ্গে ২০ কোটিরও বেশি নতুন কাজের সৃষ্টি হবে। অমিতাভবাবু বলেন, ‘‘নতুন সুযোগ অবশ্যই তৈরি হবে। সব শিল্প বিপ্লবেই তা হতে দেখা গিয়েছে। আমাদের ভাবনায় স্বচ্ছতা থাকলে এই অনিশ্চয়তাকেও আমরা জয় করতে পারব।’’
কিন্তু সকলে কি এখনই প্রযুক্তির হাত ধরার মতো জায়গায় রয়েছেন?
স্টেট ব্যাঙ্কের এমডি অরিজিৎ বসু জানাচ্ছেন, তাঁদের ৪৩ কোটি গ্রাহকের মধ্যে আট কোটি গ্রাহক ইন্টারনেট ব্যাঙ্কিং পরিষেবা নেন। ফলে প্রযুক্তি নির্ভর পরিষেবার পাশাপাশি গ্রামীণ এলাকার মতো প্রান্তিক জায়গায় সাধারণ ব্যাঙ্কিং পরিষেবার প্রয়োজন এখনও যথেষ্ট রয়েছে। তাই চলতি অর্থবর্ষে তাঁরা সারা দেশে আরও ৫০০টি শাখা খুলছেন।
ভাবনা ও সৃজনশীলতার ক্ষেত্রে ভারতের শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে কিছুটা সংশয় থাকলেও ওয়াল্ট ডিজ়নির চিফ ইনোভেশন অফিসার ডানকান ওয়ার্ডলের মতে, ২০৫০ সালে ভারত বিশ্বে অন্যতম বৃহৎ শক্তিতে পরিণত হবে।
এ বারের ইনফোকমে প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনী শক্তির মেলবন্ধনে ব্যবসায় সফল হওয়ার দিশা খুঁজবে সংশ্লিষ্ট শিল্পমহল। এ নিয়ে চলবে বিস্তারিত আলোচনা। ১২০০ প্রতিনিধি শুনবেন ১২০ জন বক্তার কথা।