ধার ফেরতে ভরসা দেউলিয়া আইনেই

এ দিন ঋণদাতা সংস্থার নিজেদের বৈঠকের পরে জারি করা বিবৃতিতে স্টেট ব্যাঙ্ক জানায়, জেটের নিয়ন্ত্রণ হাতে নিতে এখনও পর্যন্ত আগ্রহপত্র জমা পড়েছে মাত্র একটি। তা-ও আবার শর্তসাপেক্ষে। সেই কারণেই দেউলিয়া আইনের আশ্রয় নেওয়ার এই সিদ্ধান্ত।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

মুম্বই শেষ আপডেট: ১৮ জুন ২০১৯ ০১:০৮
Share:

মাঝে ঠিক দু’মাস।

Advertisement

১৭ এপ্রিল বন্ধ হয়েছিল উড়ান। আর সোমবার, ১৭ জুন জেট এয়ারওয়েজকে শেষ পর্যন্ত জাতীয় কোম্পানি আইন ট্রাইবুনালে (এনসিএলটি) নিয়ে যাওয়ারই সিদ্ধান্ত নিল স্টেট ব্যাঙ্ক-সহ ২৬ ঋণদাতা। যাতে বসে যাওয়া বিমান সংস্থাকে দেউলিয়া আইনের আওতায় পাঠিয়ে বকেয়া ঋণ (অন্তত ৮,০০০ কোটি টাকা) যতটা সম্ভব উদ্ধার করতে পারে তারা।

এ দিন ঋণদাতা সংস্থার নিজেদের বৈঠকের পরে জারি করা বিবৃতিতে স্টেট ব্যাঙ্ক জানায়, জেটের নিয়ন্ত্রণ হাতে নিতে এখনও পর্যন্ত আগ্রহপত্র জমা পড়েছে মাত্র একটি। তা-ও আবার শর্তসাপেক্ষে। সেই কারণেই দেউলিয়া আইনের আশ্রয় নেওয়ার এই সিদ্ধান্ত।

Advertisement

শোনা গিয়েছে, যে একমাত্র আগ্রহপত্র জমা পড়ার কথা বলা হয়েছে, যৌথ ভাবে তা পেশ করেছিল এতিহাদ ও হিন্দুজা গোষ্ঠী। এদের মধ্যে জেটের বিমানকে ফের আকাশে ডানা মেলাতে গোড়া থেকেই আগ্রহ দেখাচ্ছিল পশ্চিম এশীয় বিমান পরিবহণ বহুজাতিক এতিহাদ। যারা জেটের অন্যতম অংশীদারও। উল্টো দিকে, হিন্দুজা গোষ্ঠীর রাশ রয়েছে দুই ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ ধনকুবেরের হাতে— গোপীচাঁদ ও শ্রীচাঁদ হিন্দুজা। যাঁদের নাম নিয়মিত ঠাঁই পায় ব্রিটেনের সেরা ধনীদের তালিকায়। তাই কেউ কেউ মনে করছিলেন, ৮,০০০ কোটি টাকা দেনার বোঝা চেপে থাকা জেটকে চাঙ্গা করার মতো পকেটের জোর এই দুই গোষ্ঠীর যুগলবন্দির রয়েছে। কিন্তু সূত্রের খবর, একটিমাত্র আগ্রহপত্রের ভিত্তিতে জেটের মালিকানা বদলের সম্ভাবনায় আস্থা রাখতে পারেনি ঋণদাতারা। বিশেষত তাতে ধারের বড় অংশ মকুবের শর্ত লেপ্টে থাকায়।

জেট-বৃত্তান্ত
• ১৭ এপ্রিল বন্ধ হয় উড়ান।
• মাঝে সংস্থা হাতে নিতে আগ্রহী হিসেবে নাম ভেসে উঠেছিল বিভিন্ন গোষ্ঠীর।
• কিন্তু শেষমেশ আগ্রহপত্র এসেছে একটি। তা-ও আবার শর্তসাপেক্ষে।
• ধারের টাকা ফেরত পেতে জেটকে দেউলিয়া আইনে এনসিএলটিতে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত স্টেট ব্যাঙ্ক-সহ ২৬ ঋণদাতার।

গত দু’মাসে ‘জেটের ককপিটে’ নতুন মালিকের সন্ধান পাওয়া নিয়ে জল্পনা শোনা গিয়েছে বিস্তর। যেমন শোনা যায় জেট হাতে নিতে প্রাথমিক ভাবে আগ্রহী মার্কিন বিমান পরিবহণ সংস্থা ডেল্টা। এ জন্য আর্থিক সংস্থা টিপিজি ক্যাপিটালের সঙ্গে জোট বাঁধবে তারা। খবর ছিল, এতিহাদ শেয়ার বেচে সরলে টাকা ঢালতে পারে কাতার এয়ারওয়েজ। ঘুরপাক খেয়েছে টাটা গোষ্ঠী, আদানিদের নামও। অনেকে বলছিলেন, ফিরতে পারেন প্রতিষ্ঠাতা ও প্রায় সিকি শতক পরে পর্ষদ থেকে সরে দাঁড়ানো নরেশ গয়ালও।

বাজার দখলের বিচারে এক সময়ে দেশের বৃহত্তম বিমান সংস্থার মুকুট ছিল জেটের মাথায়। সময়ে টাকা না পেয়ে তাদের একশোরও বেশি বিমান ফিরিয়েছে লিজদাতারা। ব্র্যান্ডের দর তলানিতে। সম্পদ পড়ে আছে নামমাত্র। এই অবস্থায় দেউলিয়া আইনেও তাই কতটা ঋণ উদ্ধার করা যাবে, তা নিয়ে সন্দিহান অনেকে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement