বাজারে শেয়ার ছাড়তে চলেছে অ্যারামকো। ফাইল চিত্র
মহারাষ্ট্রের পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গে লগ্নির সম্ভাবনা খতিয়ে দেখছে ব্যবসার অঙ্কে বিশ্বের বৃহত্তম তেল সংস্থা সৌদি আরবের অ্যারামকো। নবান্ন সূত্রের খবর, বিনিয়োগের ঠিকানা হিসেবে তাদের হলদিয়ার কথা বলেছে রাজ্য।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সৌদি আরবের সংস্থাটির পদস্থ আধিকারিকদের বৃহস্পতিবারের বৈঠকের পরে তারা জানিয়েছে, নিজেদের সদর দফতরে আলোচনার পরে লগ্নি-পরিকল্পনা নিয়ে রাজ্যের সঙ্গে ফের আলোচনায় বসবে সংস্থা। অ্যারামকো এশিয়া ইন্ডিয়া প্রাইভেট লিমিটেডের ‘সিনিয়র অ্যাডভাইজর’ জাভেদ ইউনুস ও ডিরেক্টর ইয়েদ আল সুবেই প্রায় এক ঘণ্টা মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করেন। তবে বিষয়টি নিয়ে মুখ খোলেননি সংস্থার প্রতিনিধিরা।
পরবর্তী শিল্প সম্মেলন ‘বেঙ্গল গ্লোবাল বিজনেস সামিট’-এর প্রস্তুতি চলাকালীন অ্যারামকো প্রতিনিধিদের কলকাতা সফরকে ইতিবাচক বলে মনে করছে রাজ্য। নবান্নের এক শীর্ষ কর্তা বলেন, ‘‘রাজ্যে লগ্নিতে অ্যারামকোর উৎসাহের কথা জানান সংস্থার আধিকারিকরা। তখনই তাঁদের হলদিয়ার কথা বলা হয়েছে।’’
সংশ্লিষ্ট সূত্রে খবর, ২০১৬ সালের হিসেবে ৪৭,৮০০ কোটি ডলার ব্যবসা করা সংস্থা অ্যারামকো হলদিয়ার পেট্রোপণ্য শিল্প নিয়ে উৎসাহী। তেল পরিশোধনের পাশাপাশি ‘ডাউনস্ট্রিম’ বা পেট্রোপণ্য শিল্প নিয়েও সংস্থার আগ্রহ রয়েছে। তবে এখনই নির্দিষ্ট পরিকল্পনা নেই। সংস্থার দাবি, আলোচনা এখন প্রাথমিক স্তরে। তবে মুখ্যমন্ত্রীর ডাকে সাড়া দিয়ে আগামী বছরের সম্মেলনে যোগ দিতে ইচ্ছুক তারা। লগ্নি-সম্ভাবনা খতিয়ে দেখতে মহারাষ্ট্রের সঙ্গেও কথা চালাচ্ছে সংস্থা।
•সৌদি আরবের রাষ্ট্রায়ত্ত তেল-গ্যাস ও পেট্রোরসায়ন সংস্থা
•ব্যবসার হিসেবে বিশ্বের বৃহত্তম তেল সংস্থা
•ব্যবসার অঙ্ক ৪৭,৮০০
•কোটি ডলার বা ৩০.৫৯ লক্ষ কোটি টাকা
•কর্মী সংখ্যা ৬৫ হাজারের বেশি
•তেলের ভাণ্ডার ২৬,০৮০ কোটি ব্যারেল
•উৎপাদনের পরিমাণ দিনে ১.৩৫ কোটি ব্যারেল
প্রসঙ্গত, বিশ্ব বাজারে পেট্রোপণ্যের এখন সুদিন। লাভের মুখ দেখছে রাজ্যের হলদিয়া পেট্রো -কেমিক্যালস। দীর্ঘদিন লোকসানের ভারে প্রায় অস্তিত্ব হারাতে বসেছিল যে-সংস্থা। বিশেষজ্ঞদের দাবি, ঊর্ধ্বমুখী বাজারের সুযোগ নিয়ে সম্প্রসারণের পরিকল্পনা করা বাণিজ্যিক কৌশলেরই অঙ্গ। আর সেই সুযোগ কাজে লাগাতে পারলে লাভবান হবে এ রাজ্যও।
৬৫ হাজারের বেশি কর্মী ও ২৪টি শাখা সংস্থা রয়েছে অ্যারামকোর। ১০০টি তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের ভাণ্ডার সামলায় সৌদি আরবের এই সংস্থা। তাদের বাণিজ্যিক মানচিত্রে ঠাঁই পেলে পশ্চিমবঙ্গ শিল্পায়নের দিক থেকে অনেকটা উপরে উঠে আসবে বলে দাবি তাঁদের।