শ্রমমন্ত্রী সন্তোষ গঙ্গোয়ার।
সরকারি তথ্যই বলেছিল, নোট বাতিলের পরে ২০১৭-১৮ সালে ভারতে বেকারত্ব দাঁড়িয়েছে চার দশকে সব থেকে বেশি। বিভিন্ন উপদেষ্টা সংস্থার সমীক্ষাতেও ধরা পড়ে কর্মসংস্থানের বিবর্ণ ছবি। চাহিদার অভাবে ঝিমিয়ে থাকা অর্থনীতিকেই যার জন্য দায়ী করেছে সংশ্লিষ্ট মহল। অথচ সোমবার লোকসভায় শ্রমমন্ত্রী সন্তোষ গঙ্গোয়ারের মন্তব্য, কর্মসংস্থান কমার মতো কিছুই ঘটেনি কোথাও। যা শুনে কার্যত অবাক গোটা দেশ। অনেকেরই প্রশ্ন, এই তথ্য কোথা থেকে পেলেন তিনি? তবে কি সরকারি তথ্যকেও অস্বীকার করছেন শ্রমমন্ত্রী?
এ দিন অবশ্য ‘বিস্ময়ের’ কারণ ছিল আরও। রাজ্যসভায় ভারী শিল্প প্রতিমন্ত্রী অর্জুনরাম মেঘওয়ালের দাবি, এই মুহূর্তে গাড়ি শিল্পে চাকরি নিয়ে সঙ্কট নেই। অথচ একের পর এক পরিসংখ্যানে ইতিমধ্যেই স্পষ্ট হয়েছে, দীর্ঘ এক বছর ধরে নাগাড়ে গাড়ি বিক্রি কমছে। শো-রুম বন্ধ করেছে বহু ডিলার। গাড়ি তৈরি কমিয়েছে বেশির ভাগ সংস্থা। ধাক্কা খেয়েছে যন্ত্রাংশ তৈরির শিল্পও। যার জেরে সব মিলিয়ে প্রায় ৩.৫ লক্ষ কর্মীর চাকরি গিয়েছে।
অথচ রাজ্যসভায় মেঘওয়ালের দাবি, এই শিল্পে চাকরি হারানো নিয়ে ভয়ের কারণ নেই। তাঁর কথায়, ‘‘গাড়ি সংস্থাগুলি পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এপ্রিল থেকে সব গাড়ি বিএস-৬ দূষণ মাপকাঠির হবে। যে উদ্বেগের (চাকরি যাওয়ার) কথা বলা হচ্ছে, তা ওই পরিবর্তনেরই অঙ্গ।’’ ভারী শিল্পমন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর জানান, তিন বছরে গাড়ি বা তার যন্ত্রাংশের কোনও কারখানা বন্ধ হয়নি।
পরিসংখ্যান বলছে...
• এনএসএসও: ২০১৭-১৮ সালে ভারতে বেকারত্ব ৬.১%, ৪৫ বছরে সর্বোচ্চ।
• সিএমআইই: অক্টোবরে বেকারত্ব ৮.৫%। ২০১৬ সালের অগস্টের পরে যা সর্বাধিক।
• উপদেষ্টা সংস্থা অক্সফ্যাম: বাড়ছে বেকারত্ব। কাজের বাজারের ছবি ভয়াবহ ও হতাশাজনক।
• গাড়ি শিল্প: এই শিল্পে কাজ হারিয়েছেন ৩.৫ লক্ষ কর্মী।
এ দিন লোকসভায় তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, নোটবন্দির জেরে তাঁর কেন্দ্রে বহু মানুষ কাজ হারিয়েছেন। তার জবাবেই কর্মসংস্থান হোঁচট না-খাওয়ার যুক্তি খাড়া করেন গঙ্গোয়ার।