ফাইল ছবি
ডলারের নিরিখে টাকার দাম কমে তা নতুন তলানিতে ঠেকা কার্যত নিয়মিত ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বুধবারও যার ব্যতিক্রম হল না। একই দিনে ভারতীয় মুদ্রার পতন, মূল্যবৃদ্ধি এবং বেকারত্ব নিয়ে কেন্দ্রকে আক্রমণ করেছে কংগ্রেস ও তাদের নেতা রাহুল গান্ধী। তবে স্টেট ব্যাঙ্কের গবেষণা শাখা ইকোর্যাপের যুক্তি, মূল্যবৃদ্ধি এখনও মূলত জোগান সংক্রান্ত সমস্যা।
এ দিন ৮০ টাকার পথে আরও এক ধাপ এগিয়েছে ডলার। আমেরিকার মুদ্রা ২২ পয়সা বেড়ে হয়েছে ৭৯.৮১ টাকা। বাজার বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, এ দিন টাকার পতনের প্রধান কারণ মূল্যবৃদ্ধিকে ঠেকাতে আরও সুদ বৃদ্ধির সম্ভাবনা, শেয়ার বাজারের পতন এবং সেখান থেকে বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলির পুঁজি প্রত্যাহার। সেনসেক্স ৩৭২.৪৬ পয়েন্ট পড়ে ৫৩,৫১৪.১৫ অঙ্কে থেমেছে। নিফ্টি ৯১.৬৫ পয়েন্ট পড়ে হয়েছে ১৫,৯৬৬.৬৫। তাঁদের বক্তব্য, গত তিন দিনে তেলের দাম অনেকটা কমে ১০০ ডলারের নীচে নেমেছে। না হলে টাকা আরওপড়তে পারত।
জুনে দেশের খুচরো বাজারে মূল্যবৃদ্ধির হার যৎসামান্য কমে হয়েছে ৭.০১%। যা এখনও রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক নির্ধারিত সহনসীমার অনেকটা উপরে। উপদেষ্টা সংস্থা সিএমআইই-র রিপোর্ট অনুযায়ী, বেকারত্বের হার বেড়ে হয়েছে ৭.৮%। এরই সঙ্গে টাকার পতন এবং সরকারের ঋণকে জুড়ে মোদী সরকারের উদ্দেশে আক্রমণ শানিয়েছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। এ দিন নিজের টুইটার অ্যাকাউন্টে এই সংক্রান্ত এক তালিকা দিয়েছেন তিনি। দেখিয়েছেন, ২০১৪ সালে সরকারের ঋণ ছিল ৫৬ লক্ষ কোটি টাকা। ২০২২ সালে তা দাঁড়িয়েছে ১৩৯ লক্ষ কোটি। বেকারত্বের হার ৪.৭% থেকে উঠেছে ৭.৮ শতাংশে। ডলারের দর ৫৯ টাকা থেকে পৌঁছেছে ৮০ টাকার কাছাকাছি। গৃহস্থের রান্নার গ্যাসের দাম ৪১০ টাকা থেকে হয়েছে ১০৫৩ টাকা। বেড়েছে মাথাপিছু ঋণ এবং বাণিজ্য ঘাটতিও। পাশাপাশি, কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনকে আক্রমণ করে কংগ্রেস মুখপাত্র গৌরব বল্লভের বক্তব্য, ‘‘ওঁর (নির্মলা) প্লুটো, ইউরেনাস এবং জুপিটার নিয়ে আগ্রহ রয়েছে। দুর্ভাগ্যজনক ভাবে অর্থনীতির ভবিষ্যৎ নিয়েই কোনও দৃষ্টিভঙ্গি নেই।’’ উল্লেখ্য, মঙ্গলবার নাসার ওয়েব টেসিস্কোপে তোলা ছবি টুইটারে আপলোড করেছিলেন নির্মলা।
এ দিন ইকোর্যাপের রিপোর্টে জানানো হয়েছে, খুচরো মূল্যবৃদ্ধি যে ২৯৯টি পণ্যের দামের ভিত্তিতে মাপা হয় তার ২০০টির দাম এখন নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে জোগান পরিস্থিতির মাধ্যমে। বাকি ৯৯টিকে নিয়ন্ত্রণ করছে চাহিদা। ফলে এখনও পর্যন্ত মাথা তোলা এই মূল্যবৃদ্ধির ৬৪% জোগান নির্ভর। অতিমারি এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে রিপোর্টে। মূল্যবৃদ্ধিকে নিয়ন্ত্রণে আনতে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ককে ফের সুদ বাড়াতে হতে পারে বলে মনে করছে তারা। চলতি অর্থবর্ষে বৃদ্ধির হার ৭.১-৭.৬% হতে পারে বলে মনে করছে উপদেষ্টা সংস্থা ডেলয়েট।