মূলধনী বাজারে সঙ্কট এলে সাধারণত সোনায় লগ্নিতে ঝোঁকেন বিনিয়োগকারীরা। প্রতীকী ছবি।
আমেরিকার সিলিকন ভ্যালি ব্যাঙ্ক (এসভিবি) দেউলিয়া হওয়ার বিরূপ প্রভাব যে ভারতের মূলধনী বাজারেও পড়তে পারে, সেই আশঙ্কার কথা আগেই শুনিয়েছিলেন বিশেষজ্ঞেরা। তাকে সত্যি প্রমাণ করে প্রথম আঘাত এল শেয়ার বাজারে। এক দিনে লগ্নিকারীরা হারালেন ৪.৪ লক্ষ কোটি টাকার সম্পদ। মূলধনী বাজারে সঙ্কট এলে সাধারণত সোনায় লগ্নিতে ঝোঁকেন বিনিয়োগকারীরা। সোমবার তারও ব্যতিক্রম হয়নি। ফলে তার এক ধাক্কায় দাম বেড়েছে অনেকটা।
এ দিন সেনসেক্স ৮৯৭.২৮ পয়েন্ট হারিয়ে ৫৮,২৩৭.৮৫ অঙ্কে থেমেছে। পাঁচ মাসের সর্বনিম্ন। নিফ্টি ২৫৮.৬০ নেমে হয় ১৭,১৫৪.৩০। ডলারের নিরিখে টাকার দরও পড়েছে। ১ ডলার ১৭ পয়সা বেড়ে হয়েছে ৮২.২৩ টাকা। অন্য দিকে কলকাতায় ১০ গ্রাম ২৪ ক্যারাট পাকা সোনা ১১৫০ টাকা বেড়ে হয়েছে ৫৭,৪৫০ টাকা। বিশ্ববাজারে তার দাম আউন্সে ২৩ ডলারবেড়ে হয়েছে ১৮৯১ ডলার। রুপোর বাট কিলোগ্রামে ১৯৫০ টাকা বেড়ে হয়েছে ৬৩,৯০০ টাকা। সোনা ব্যবসায়ীরা বলেন, বিশ্ব বাজারে দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় দেশে সোনা মাথা তুলেছে। তা আরও বাড়তে পারে।
এ দিন সকালে অবশ্য সেনসেক্স ৩৭৫ পয়েন্ট উঠে গিয়েছিল। ধস নামে পরে। বাজার বিশেষজ্ঞ আশিস নন্দী বলেন, ‘‘এসবিভি এবং সিগনেচার ব্যাঙ্কের সমস্যা যুঝতে আমেরিকা, ব্রিটেন, জার্মানির মাঠে নামার খবরে প্রথমে বাজার চাঙ্গা হয়েছিল। কিন্তু আমেরিকার আগাম লেনদেন এবং ইউরোপ ও এশিয়ার বাজারের পতনের প্রভাবে পরে ভারতেও ধস নামে।’’ এ দিনের ১৫৪৬.৮৬ কোটি মিলিয়ে দু’দিনে বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলি তুলেছে মোট ৩৬০৮.৩৩ কোটি টাকা। তবে বিএনকে ক্যাপিটালসের এমডি অজিত খণ্ডেলওয়াল বলেন, ‘‘আমেরিকার দুই ব্যাঙ্কের সমস্যার প্রভাব ভারতে যতটা না গুরুতর, সেই তুলনায় আতঙ্ক তৈরি হয়েছে বেশি।’’
ব্যাঙ্কিং বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, সুদ যে গতিতে চড়ছে, তাতে আরও অনেক ব্যাঙ্ক এই সমস্যায় পড়তে পারে। তাই বিশ্ব জুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। অনেকের মতে, এই অবস্থায় আমেরিকার ফেডারাল রিজ়ার্ভ সুদ বাড়ানোয় রাশ টানতে পারে। তবে আর্থিক বিশেষজ্ঞ অনির্বাণ দত্তের কথায়, ‘‘ভারতে ব্যাঙ্কগুলির হাল যথেষ্ট পোক্ত। তাদের তহবিলের মূল সূত্র দেশীয় আমানত। বিদেশি ব্যাঙ্কের উপরে ভারতীয় ব্যাঙ্কগুলির নির্ভরতা কম। ফলে ব্যাঙ্ক শেয়ারে আতঙ্কের তেমন কারণ নেই।’’