২০২২-২৩ অর্থবর্ষে মূল্যবৃদ্ধির গড় হার হতে পারে ৬.৫%। জানুয়ারি-মার্চে ৫.৬%। প্রতীকী ছবি।
গত নভেম্বর ও ডিসেম্বরে দেশের খুচরো বাজারে মূল্যবৃদ্ধির হার ছিল রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক নির্ধারিত সহনসীমার (৬%) নীচে। সংশ্লিষ্ট মহলের বড় অংশের আশা ছিল, জানুয়ারিতে তা আরও নামতে পারে। সে ক্ষেত্রে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক হয়তো সুদ বৃদ্ধির গতি আরও কমাবে। কিন্তু সোমবার জাতীয় পরিসংখ্যান দফতরের (এনএসও) রিপোর্ট প্রকাশ হতেই জানা গেল, গত মাসে তা তো কমেইনি, উল্টে ফের লাফ দিয়ে পার করেছে সেই সহনসীমা। পৌঁছেছে ৬.৫২ শতাংশে। যা গত তিন মাসের সর্বোচ্চ। খাদ্যপণ্যের দাম বৃদ্ধিই প্রধান কারণ। মাঝে নভেম্বর ও ডিসেম্বর বাদ দিলে ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে মূল্যবৃদ্ধি টানা ওই সীমার উপরে।
গত সপ্তাহে রেপো রেট (যে সুদে শীর্ষ ব্যাঙ্ক বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলিকে ঋণ দেয়) ২৫ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়েছিল রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক। যা ইদানীংকালে সব চেয়ে কম। জানিয়েছিল, ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে মূল্যবৃদ্ধির গড় হার হতে পারে ৬.৫%। জানুয়ারি-মার্চে ৫.৬%। সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, ত্রৈমাসিকের শুরুতেই দাম ফের মাথাচাড়া দেওয়ায় গোটা হিসাব গুলিয়ে যেতে পারে। আর উঁচু দামকে নিয়ন্ত্রণে আনতে শীর্ষ ব্যাঙ্ককে লড়াই জারি রাখতে গেলে অদূর ভবিষ্যতে সুদের হার কমানো কিংবা স্থগিত রাখারও সম্ভাবনা কার্যত থাকল না। সে ক্ষেত্রে বাড়ি, গাড়ি-সহ বিভিন্ন ঋণের সুদও চড়াই থাকবে।
আর্থিক বিশেষজ্ঞ অনির্বাণ দত্তের বক্তব্য, ভারতে পেট্রল-ডিজ়েলের দাম পণ্যের দরকে অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করে। ফলে জ্বালানির দাম না কমলে শুধু সুদের হার বাড়িয়ে মূল্যবৃদ্ধিকে নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন। আইআইটি পটনার অর্থনীতির অধ্যাপক রাজেন্দ্র পরামানিকের অবশ্য মত, ‘‘গত বছরের জানুয়ারি থেকে খাবারের দাম কম। সেই নিচু ভিতের প্রেক্ষিতেই তার মূল্যবৃদ্ধির হার অনেকটা বেড়েছে। তবে খাদ্য ও জ্বালানি বাদে বাকি পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণেই থাকবে।’’
গত মাসে খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি ৪.১৯% থেকে বেড়ে ৫.৯৪ শতাংশে পৌঁছেছে। আনাজের দাম কমলেও (১১.৭%) ডালের দাম ১৬.১২%, ডিম (৮.৭৮%) ও দুধ (৮.৭৯%) বেড়েছে।দামি হয়েছে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ।