রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক। ফাইল চিত্র
শ্লথ বিশ্ব বাজার। ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা দীর্ঘস্থায়ী হয়েছে। চড়া মূল্যবৃদ্ধি এবং লাগাতার সুদ বৃদ্ধির জেরে বিভিন্ন দেশে ঝুঁকির মুখে পড়েছে আর্থিক বৃদ্ধি। কিন্তু তার মধ্যে দাঁড়িয়েও ভারতের অগ্রগতি নিয়ে আশাবাদী রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক। মঙ্গলবার প্রকাশিত গত অর্থবর্ষের (২০২২-২৩) বার্ষিক রিপোর্টে শীর্ষ ব্যাঙ্কের দাবি, আন্তর্জাতিক দুনিয়া কঠিন পরীক্ষার মুখে ফেললেও চলতি অর্থবর্ষে দেশে আর্থিক বৃদ্ধির গতি বহাল থাকতে পারে। কারণ এখানে অর্থনীতির জমি যে পোক্ত, তা স্পষ্ট বিভিন্ন পরিসংখ্যানে। তবে বিশ্ব অর্থনীতির মন্থর বৃদ্ধি, এখনও চলতে থাকা যুদ্ধ এবং আর্থিক বাজারের অস্থিরতার দরুন কিছু ঝুঁকিও যে পথ আটকাতে পারে, সে ব্যাপারে সতর্ক করেছে তারা। সেগুলির সঙ্গে যুঝতে এবং মধ্যবর্তী মেয়াদে বৃদ্ধির ধারাবাহিক উন্নতির খাতিরে তাই কাঠামোগত সংস্কারে জোর দিয়েছে শীর্ষ ব্যাঙ্ক।
গত অর্থবর্ষে দেশের প্রকৃত আর্থিক বৃদ্ধির পূর্বাভাস রয়েছে ৭%। রিপোর্টে সে কথা বলা হয়েছে ফের। সেখানে আরবিআইয়ের দাবি, চাহিদা, বিশেষ করে পরিষেবা ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের খরচ বৃদ্ধি, ক্রেতাদের ফিরে আসা আস্থা, কোভিডের কবল থেকে বেরিয়ে গত বছর উৎসবের মরসুমে বিপুল খরচ-খরচা এবং সরকারের মূলধনী খরচের উপরে জোর মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন (জিডিপি) বৃদ্ধিতে জ্বালানি জুগিয়েছে।
তবে গত অর্থবর্ষের দ্বিতীয়ার্ধ (অক্টোবর-মার্চ) যে প্রথমার্ধের (এপ্রিল-সেপ্টেম্বর) মতো সুখকর কাটেনি, সে কথাও বার্ষিক রিপোর্টে মনে করিয়েছে আরবিআই। তার আগের বছরের তুলনায় দ্বিতীয়ার্ধে আর্থিক বৃদ্ধির হার কমেছে চড়া মূল্যবৃদ্ধি, ঢিমে চাহিদা, বিশ্ব বাজারে চাহিদা কমায় শ্লথ রফতানি বৃদ্ধি এবং পণ্যের কাঁচামালের খরচের চাপে।
যদিও রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের বার্তা, পোক্ত আর্থিক নীতি, পণ্যের কমতে থাকা দাম, চাঙ্গা আর্থিক ক্ষেত্র, মজবুত কর্পোরেট ক্ষেত্র, সরকারি খরচে জোর দেওয়ার আর্থিক নীতি এবং আন্তর্জাতিক জোগান শৃঙ্খল শোধরানোর পরে নতুন করে বৃদ্ধির পথে হাঁটার সুযোগ ভারতে আর্থিক বৃদ্ধির গতি বহাল রাখতে পারে ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষেও। কারণ মূল্যবৃদ্ধি মাথা নামাচ্ছে। তবে ধারাবাহিক ভাবে কাঠামোগত সংস্কার চালিয়ে যাওয়া দেশের পক্ষে অত্যন্ত জরুরি। যাতে মধ্যবর্তী মেয়াদে এগিয়ে যাওয়ার ক্ষমতা আরও বাড়ে।