প্রতীকী ছবি।
অবশেষে সংশোধন, বহু দিন বাদে। মাত্র দু’দিন ঘর করার পরে ৬০ হাজারের মায়া ছাড়তে হল সেনসেক্সকে। গত সপ্তাহের পাঁচটি কাজের দিনে মোট ১২৮২ পয়েন্ট পড়ে সে নামল ৫৮,৭৬৬ অঙ্কে। নিফ্টি পড়েছে ৩২১ পয়েন্ট। অর্থনীতির বহু সমস্যাকে উপেক্ষা করে লাগাতার উঠছিল সূচক। স্বাভাবিক নিয়মে চড়া বাজারে যে সংশোধন হয়, তা-ও হচ্ছিল না। স্বস্তির সেই পতন এল সেনসেক্সের ৬০ হাজারে পৌঁছনো মাত্র।
পতনের কারণগুলি গুরুতর। বাজারে তাদের বিরূপ প্রভাব কতটা গভীর ছাপ ফেলবে সেই চিন্তা থাকছেই। এগুলি হল—
* ইউরোপ, চিন-সহ বহু দেশে জ্বালানি সঙ্কট। বিরূপ প্রভাব পড়ার আশঙ্কা দেশগুলির অর্থনীতিতে। তার ছায়া বিশ্ব বাজারে।
* বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের দাম বৃদ্ধি। ফলে ভারতেও চড়ছে তেল। এতে মূল্যবৃদ্ধির মাথা তোলার আশঙ্কা, চোট খেতে পারে চাহিদা।
* অদূর ভবিষ্যতে আমেরিকার ফেডারাল রিজ়ার্ভের বন্ড কেনা কমানো এবং সুদ বাড়ানোর সম্ভাবনা। যা বাজারে নগদের জোগান কমাবে।
* আমেরিকা ও ভারতে বন্ড ইল্ড বৃদ্ধি। গত শুক্রবার এ দেশে তা ৬.২৪% ছুঁয়েছে।
* চিনের বৃহত্তম আবাসন সংস্থা এভারগ্রান্ডের ঋণের বোঝা। তারা সময়ে সুদ দিতে না-পারলে বা ঋণ শোধে ব্যর্থ হলে বিশ্ব বাজার সঙ্কটে পড়তে পারে।
* সেমিকনডাক্টর চিপের অভাবে বিশ্ব জুড়ে গাড়ি তৈরিতে ভাটা। ফলে ভারতে বিক্রিও কমেছে। ধাক্কা ইস্পাত, টায়ার, রং ও বৈদ্যুতিন যন্ত্রাংশ শিল্পে।
কেন্দ্রের বার্তা, ভারতের অর্থনীতি দ্রুত ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। এর সমর্থনে পরিসংখ্যানগুলি— অগস্টে আটটি মূল পরিকাঠামোয় ১১.৬% উৎপাদন বৃদ্ধি। সেপ্টেম্বর ১.১৭ লক্ষ কোটি টাকা জিএসটি আদায়। বছরের প্রথম পাঁচ মাসে কর বাবদ নিট ৬.৪৫ লক্ষ কোটি সংগ্রহ (আগের বছর ছিল ২.৮৪ লক্ষ কোটি)। তবে যে সব কারণে গত সপ্তাহে সূচক পড়েছে তা এই সপ্তাহেও সূচককে অস্থির করতে পারে।
চলতি সপ্তাহেই রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের ঋণনীতি বৈঠক। সুদ হয়তো কমবে না। তবে নজর থাকবে রির্ভাস রেপোতে (যে সুদে ব্যাঙ্কগুলি রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ককে ধার দেয়)। আরবিআই মূল্যবৃদ্ধিতে রাশ টানাতে টাকার জোগানের কিছুটা শুষে নিতে চাইলে ওই সুদ বাড়বে।
(মতামত ব্যক্তিগত)