পুরনো পেনশন প্রকল্প রাজ্যগুলির ঋণ বাড়িয়ে দেবে। — ফাইল চিত্র।
বিভিন্ন রাজ্যই ন্যাশনাল পেনশন সিস্টেম (এনপিএস) ছেড়ে ফিরে যাচ্ছে পুরনো পেনশন প্রকল্পে। এ নিয়ে এ বার সতর্কবার্তা শোনা গেল রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের গলাতেও। নিজেদের ‘স্টেট ফিনান্সেস: আ স্টাডি অব বাজেটস অব ২০২২-২৩’ রিপোর্টে শীর্ষ ব্যাঙ্ক জানিয়েছে, এই সিদ্ধান্ত আগামী দিনে রাজ্যগুলির দায় তথা ঋণ আরও বাড়িয়ে দেবে। ফলে বাড়বে তাদের ঝুঁকিও। এর আগেই বিষয়টি নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বহু অর্থনীতিবিদ।
সম্প্রতি কংগ্রেসশাসিত রাজস্থান ও ছত্তীসগঢ় পুরনো পেনশন ব্যবস্থায় ফিরে গিয়েছে। পঞ্জাব ও ঝাড়খণ্ডও সেই পথে হাঁটার কথা বলেছে। আর মঙ্গলবার হিমাচলপ্রদেশের নতুন কংগ্রেস সরকার সেই প্রকল্প ফিরিয়ে আনার জন্য বিজ্ঞপ্তি জারির নির্দেশ দিয়েছে। তাদের দাবি, কর্মীদের কাছে সত্যিকারের সামাজিক সুরক্ষা পৌঁছে দিতেই এই সিদ্ধান্ত। তবে আগেই এ নিয়ে তোপ দেগে বিজেপির দাবি ছিল, ক্ষমতায় এসেই কংগ্রেস যে তেলে ভ্যাট বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা আদতে পুরনো পেনশন প্রকল্পের টাকা জোগাড়ের জন্য।
এই পরিস্থিতিতে আরবিআই-এর মতে, পুরনো পেনশনে ফিরে রাজ্যগুলি বছরে যে অর্থ বাঁচানোর কথা ভাবছে, তা আদতে ক্ষণস্থায়ী। বরং এতে হাতের খরচকে সরিয়ে রাখার চেষ্টায় দায় বাড়তে বাড়তে ভবিষ্যতে আরও বেশি চাপে পড়বে তারা। এর আগেই বিভিন্ন রাজ্যের আর্থিক স্বাস্থ্য নিয়ে সতর্ক করেছিল রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক। এ বার অবশ্য তাদের বক্তব্য, সামগ্রিক ভাবে তাদের হাল ফেরার ইঙ্গিত মিলেছে।
উল্লেখ্য, পুরনো প্রকল্পে সরকারই বাজেট বরাদ্দ থেকে পেনশনের ব্যবস্থা করত। ২০০৩ সালে এনডিএ সরকারের আমলে তা বন্ধ হয়। ২০০৪ সালের ১ এপ্রিল থেকে চালু হয় নতুন পেনশন প্রকল্প এনপিএস। এতে পেনশন প্রকল্পের তহবিলে কর্মী তাঁর বেতনের ১০% জমা দেন। সরকার দেয় ১৪%। অবসর নেওয়ার পরে কর্মীকে নিজের পেনশন তহবিলের একাংশ দিয়ে অ্যানুইটি কিনে সারা জীবনের পেনশনের ব্যবস্থাকরতে হয়।
ইতিমধ্যেই রাজ্যগুলির সিদ্ধান্ত নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন পূর্বতন যোজনা কমিশনের ডেপুটি চেয়ারম্যান মন্টেক সিংহ অহলুওয়ালিয়া। প্রধানমন্ত্রীর আর্থিক উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সঞ্জীব সান্যালের মতে, আগে থেকে আর্থিক সংস্থান না-করে পুরনো পেনশন প্রকল্পে ফিরলে তা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ক্ষেত্রে ক্ষতিকারক হবে। এটি রাজ্যগুলির পক্ষে অবিবেচকের কাজ হবে বলে মন্তব্য করেছেন পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের চেয়ারম্যান এন কে সিংহ। আর নীতি আয়োগের ভাইস চেয়ারম্যান সুমন বেরির বার্তা, এই চাহিদা পূরণ করা হলে আগামী দিনের করদাতারা সমস্যায় পড়বেন।
সংবাদ সংস্থা