রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার গভর্নর শক্তিকান্ত দাস। ছবি: সংগৃহীত।
দেশের আর্থিক বৃদ্ধির সূচক ঠিক রাখতে বৈঠকে বসছে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার (আরবিআই) মুদ্রানীতি কমিটি। শুক্রবার, ৬ ডিসেম্বর এই বৈঠকে নেওয়া সিদ্ধান্তের কথা জানাবেন কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের গভর্নর শক্তিকান্ত দাস। ঠিক তার আগে সুদের হারে আরবিআই বদল আনতে পারে বলে তুঙ্গে উঠেছে জল্পনা।
অর্থনীতির পরিভাষায় আরবিআইয়ের সুদের হারকে বলা হয় রেপো রেট। প্রকৃতপক্ষে দেশের সরকারি এবং বেসরকারি ব্যাঙ্কগুলিকে যে সুদের হারে আরবিআই ঋণ দিয়ে থাকে তাকেই বলে রেপো রেট। জাপানি বিনিয়োগকারী ব্যাঙ্ক ‘নোমুরা’র দাবি, এ বার সেই হারে বদল আনতে চলেছে ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক। মুদ্রানীতি কমিটির বৈঠকে রেপো রেট ২৫ বেসিস পয়েন্ট কমানোর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হতে পারে বলে পূর্বাভাসে জানিয়েছে টোকিয়োর এই আর্থিক প্রতিষ্ঠান।
‘নোমুরা’র সুরে সুর মিলিয়েছে দেশীয় বণিক সংগঠন ‘কনফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রিজ়’ (সিআইআই)। সংস্থাটির ডিরেক্টর জেনারেল চন্দ্রজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘‘রেপো রেট কমানোর যাবতীয় ক্ষেত্র প্রস্তুত রয়েছে। কারণ এটি হ্রাস পেলেই ঋণের খরচ কমবে। সে ক্ষেত্রে আমজনতার মধ্যে ঋণ নেওয়ার প্রবণতা বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এতে স্বাভাবিক ভাবেই ঊর্ধ্বমুখী হবে ব্যাঙ্কিং শিল্পের সূচক।’’ দেশের আর্থিক বৃদ্ধির জন্যেই এটি খুবই জরুরি বলে দাবি করেছেন তিনি।
চলতি বছরের অগস্ট মাস থেকে রেপো রেট অপরিবর্তিত রেখেছে আরবিআই। বর্তমানে এর অঙ্ক ৬.৫ শতাংশ। মুদ্রানীতি কমিটির বৈঠকে ২৫ বেসিস পয়েন্ট কমানোর সিদ্ধান্ত নিলে রেপো রেট ৬.২৫ শতাংশ নেমে আসবে। সাধারণত, রেপো রেট কমলেই গাড়ি বা বাড়ির মতো দীর্ঘমেয়াদি ঋণে সুদের হার বদল করে সরকারি এবং বেসরকারি ব্যাঙ্ক। রেপো রেটের সঙ্গেই পাল্লা দিয়ে নিম্নমুখী হয় ওই সুদের সূচকও।
আর্থিক বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, রেপো রেট পরিবর্তনের ক্ষেত্রে বেশ কয়েকটি বিষয়ের উপর নজর রাখবে আরবিআইয়ের মুদ্রানীতি কমিটি। চলতি আর্থিক বছরের (পড়ুন ২০২৪-২৫) দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) দেশের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বা জিডিপি বৃদ্ধির হার ৫.৪ শতাংশে নেমে এসেছে। তবে মুদ্রাস্ফীতির হার আরবিআইয়ের ‘সহনসীমা’ (কমফর্ট জ়োন) ৬.২ শতাংশের উপরেই রয়ে গিয়েছে। এর সূচক আরও সহজ হবে বলে মনে করছেন কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের পদস্থ কর্তারা।