রিজার্ভ ব্যাঙ্ক গভর্নর শক্তিকান্ত দাস।—ছবি পিটিআই।
করোনার ধাক্কা যে বিশ্ব অর্থনীতিতে লাগবে, তা সোমবার স্পষ্ট করে দিলেন খোদ রিজার্ভ ব্যাঙ্ক গভর্নর শক্তিকান্ত দাস। বললেন, মনে করা হচ্ছে এর জেরে বিশ্বে বৃদ্ধির হার ০.৪%-১.৫% ধাক্কা খেতে পারে। সেই সঙ্গে তাঁর আশ্বাস, শীর্ষ ব্যাঙ্কের ঝুলিতে এমন অস্ত্র মজুত রয়েছে, যা দিয়ে দেশে করোনা থেকে তৈরি হওয়া আর্থিক সঙ্কট কাটানোর ব্যবস্থা করা সম্ভব। তবে অন্যতম অস্ত্র হিসেবে এ দিন সুদ কমানোর পথে হাঁটেনি তারা।
সোমবার বিকেলে হঠাৎই সাংবাদিক বৈঠক ডাকে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। তার পরেই বাজারে জল্পনা ছড়ায়, হয়তো রবিবার মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভ সুদ এক ধাক্কায় ১০০ বেসিস পয়েন্ট কমিয়ে শূন্যের কাছাকাছি নামানোর পরে এ বার সেই পথে হাঁটবে আরবিআই-ও। বিশেষত যখন অন্য ৪২টি দেশের শীর্ষ ব্যাঙ্কও সুদ কমিয়েছে। তার উপরে ভারতে ফেব্রুয়ারিতে খুচরো এবং পাইকারি, উভয় ক্ষেত্রেই কমেছে মূল্যবৃদ্ধির হার। কিন্তু সেই সিদ্ধান্ত না-নেওয়ার পিছনে শক্তিকান্তের যুক্তি, ‘‘প্রথামত ঋণনীতির বৈঠকেই সুদ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে আমি কোনও কিছুই উড়িয়ে দিচ্ছি না। পরিস্থিতির দিকে নজর রেখে, সেই মতোই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’
বর্তমান আর্থিক পরিস্থিতিতে শীর্ষ ব্যাঙ্ক সময় অনুসারে পদক্ষেপ করবে বলে সোমবার আশ্বস্ত করেছেন প্রিন্সিপাল আর্থিক উপদেষ্টা সঞ্জীব সান্যাল। তাঁর কথায়, এই মুহূর্তে বিশ্ব অর্থনীতির যা অবস্থা, তাতে ঝাঁকুনি দেওয়ার মতো সিদ্ধান্ত নেওয়া জরুরি নয়। অনেক উন্নত দেশের তুলনায় ভারতের সামনে ব্যবস্থা নেওয়ার পথ বেশি খোলা বলেও তাঁর মত।
এ দিন করোনা মোকাবিলায় দু’টি সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করেছে শীর্ষ ব্যাঙ্ক। প্রথমত, ২৩ মার্চ ২০০ কোটি ডলার কেনাবেচা করবে তারা। দ্বিতীয়ত, বাজারে নগদের জোগান বাড়াতে যখন যে রকম প্রয়োজন হবে, সেই মতো রেপো রেটে ব্যাঙ্কগুলিকে ১ লক্ষ কোটি টাকা পর্যন্ত দীর্ঘমেয়াদি (তিন বছরের জন্য) ঋণ দেওয়া হবে। ১৮ মার্চ ২৫,০০০ কোটি দেওয়া হবে। সেই সঙ্গে মানুষকে সরাসরি লেনদেন এড়ানোর পরামর্শও দেওয়া হয়েছে। শক্তিকান্ত বলেন, যতটা সম্ভব নেফ্ট, আইএমপিএস, ইউপিআইয়ের মতো লেনদেন ব্যবহার করুন আমজনতা। যাতে হাতে হাতে ছোঁয়া এড়ানো যায়।