রিজার্ভ ব্যাঙ্কের চাপে সুদ কমলো ঋণে

নিজে সুদ না কমিয়েও সুদ কমানোর ‘রাস্তা খুললেন’ রঘুরাম রাজন। ঋণে সুদ না-ছাঁটা নিয়ে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক গভর্নরের চাঁচাছোলা আক্রমণের উত্তরে প্রথমে পাল্টা যুক্তি দিলেও, দিনের শেষে তা ১৫ থেকে ২৫ বেসিস পয়েন্ট কমানোর কথা ঘোষণা করল দেশের তিন প্রধান ব্যাঙ্ক— স্টেট ব্যাঙ্ক, এইচডিএফসি ব্যাঙ্ক এবং আইসিআইসিআই ব্যাঙ্ক।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

মুম্বই শেষ আপডেট: ০৮ এপ্রিল ২০১৫ ০২:২৪
Share:

নিজে সুদ না কমিয়েও সুদ কমানোর ‘রাস্তা খুললেন’ রঘুরাম রাজন।

Advertisement

ঋণে সুদ না-ছাঁটা নিয়ে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক গভর্নরের চাঁচাছোলা আক্রমণের উত্তরে প্রথমে পাল্টা যুক্তি দিলেও, দিনের শেষে তা ১৫ থেকে ২৫ বেসিস পয়েন্ট কমানোর কথা ঘোষণা করল দেশের তিন প্রধান ব্যাঙ্ক— স্টেট ব্যাঙ্ক, এইচডিএফসি ব্যাঙ্ক এবং আইসিআইসিআই ব্যাঙ্ক। একই পথে হাঁটল লক্ষ্মীবিলাস ব্যাঙ্কও। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, শীঘ্রই সুদ কমাবে আরও অনেক ব্যাঙ্কই। ফলে সাধারণ মানুষকে কিছুটা স্বস্তি দিয়ে এ বার কমবে গৃহঋণ, গাড়িঋণ এবং ব্যক্তিগত কারণে নেওয়া ধারের কিস্তি। কমবে শিল্প সংস্থার তহবিল সংগ্রহের খরচও।

প্রায় নিঃশব্দে এ দিন বড় মাপের একটি আর্থিক সংস্কারও সেরে ফেলেছেন রাজন। বন্ড (ঋণপত্র) ছেড়ে বিদেশের বাজার থেকে টাকা তোলার অনুমতি যে-সমস্ত ভারতীয় সংস্থার রয়েছে, তাদের এ বার ওই বন্ড টাকায় বিক্রির অনুমতি দিয়েছেন তিনি। অনেকেই মনে করছেন, বিদেশে ডলারের বদলে টাকায় ওই বন্ড বিক্রি হলে, তা কিনতে ভারতীয় মুদ্রার চাহিদা বাড়বে। ফলে ডলারের সাপেক্ষে পোক্ত হবে তার বিনিময়মূল্য।

Advertisement

দিনের শেষে যে এত নাটক অপেক্ষা করে আছে, শুরুতে তা বোঝা যায়নি। কারণ, প্রত্যাশিত ভাবেই এ বার রেপো রেট (স্বল্প মেয়াদে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলিকে যে-সুদে ঋণ দেয়) কমানোর পথে হাঁটেননি রাজন। বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলিকে শীর্ষ ব্যাঙ্কের কাছে বাধ্যতামূলক ভাবে যে অনুপাতে নগদ জমা রাখতে হয় (ক্যাশ রিজার্ভ রেশিও বা সিআরআর), বদলাননি তা-ও। ফলে সেই অর্থে চমক মঙ্গলবারের ঋণনীতিতে ছিল না।

কিন্তু এর পরেই আগের দু’বার আরবিআইয়ের (মোট ৫০ বেসিস পয়েন্ট) সুদ কমানোর সুফল সাধারণ মানুষের দরজায় পৌঁছে না-দেওয়ার জন্য ব্যাঙ্কগুলিকে কড়া কথা শোনান রাজন। বলেন, ‘‘ব্যাঙ্কের হাতে টাকা রয়েছে। তাদের বাড়তি তহবিল সংগ্রহের খরচ কমছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও সুদ না-কমা অর্থহীন।’’ তিনি স্পষ্ট জানান, ফের এক বার রেপো রেট ছাঁটাইয়ের আগে ব্যাঙ্কগুলির সুদ কমানোর জন্য অপেক্ষা করবেন তিনি। পাল্টা যুক্তি দেয় ব্যাঙ্কগুলিও। স্টেট ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান অরুন্ধতী ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘রাতারাতি সুদ কমানো সম্ভব নয়। আন্তর্জাতিক ব্যাঙ্কগুলি যে-ভাবে কাজ করে, ভারতে তা হয় না।’’ উল্লেখ্য রাজন আন্তর্জাতিক মুদ্রাভাণ্ডারের প্রাক্তন মুখ্য অর্থনীতিবিদ। একই সুরে এইচডিএফসি ব্যাঙ্কের সিইও আদিত্য পুরী এবং আইসিআইসিআই ব্যাঙ্কের কর্ণধার ছন্দা কোছরও বলেন, ঋণে সুদ কমতে সময় লাগবে। তার আগে আমানতে সুদ ছাঁটা জরুরি। অথচ সন্ধ্যায় সকলকে চমকে দিয়ে সবার আগে ১৫ বেসিস পয়েন্ট সুদ কমায় স্টেট ব্যাঙ্ক। তারপরেই এইচডিএফসি ব্যাঙ্ক (১৫ বেসিস পয়েন্ট) এবং আইসিআইসিআই ব্যাঙ্ক (২৫ বেসিস পয়েন্ট)। তিন ব্যাঙ্কের ঋণে সুদের ন্যূনতম হার দাঁড়াল যথাক্রমে ৯.৮৫, ৯.৮৫ ও ৯.৭৫%। এমনকী অরুন্ধতীদেবী জানান, স্টেট ব্যাঙ্ককে দেখে বাকিরাও একই পথে হাঁটবে বলে তাঁদের আশা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement