ছবি: সংগৃহীত।
অর্থনীতিকে উপেক্ষা করেই গত কয়েক মাস ধরে নাগাড়ে বেড়ে চলেছিল শেয়ার বাজার। একের পর এক নজির ভেঙে ৫০,০০০ ছুঁয়েও ফেলেছিল সেনসেক্স। কিন্তু তার পর থেকেই শুরু হয়েছে টানা পতন। বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, রকেট গতিতে উত্থানের সময়ে অতিমারির সমস্যা এবং বেহাল আর্থিক পরিস্থিতির কথা মাথায় রাখেনি বাজার। সে ভাবেই যখন করোনার প্রতিষেধক দেওয়া শুরু হয়েছে, ভাল ফল ঘোষণা করছে সংস্থাগুলি এবং বাজারে চাহিদা ফেরার ইঙ্গিত মিলছে, তখনই শুরু হয়েছে পতন। বাস্তব পরিস্থিতি উপেক্ষা করেই।
আর সেই পতনের তীব্রতা এতটাই যে, পাঁচ দিনের লেনদেনেই সেনসেক্স নেমেছে ৪৬ হাজারের ঘরে। বৃহস্পতিবার তা পড়েছে আরও ৫৩৫.৫৭ পয়েন্ট। থেমেছে ৪৬,৮৭৪.৩৬ অঙ্কে। নিফ্টিও ১৪৯.৯৫ পয়েন্ট পড়ে শেষ হয়েছে ১৩,৮১৭.৫৫ অঙ্কে। এই পাঁচ দিনে সেনসেক্স খুইয়েছে ২৯১৭.৭৬ পয়েন্ট এবং নিফ্টি ৮২৭.১৫। সব মিলিয়ে লগ্নিকারীরা হারিয়েছেন ৯.৫৬ লক্ষ কোটি টাকার শেয়ার সম্পদ।
বাজার মহলের একাংশের যদিও মত, সূচক যে ভাবে উঁচুতে উঠেছিল, তাতে কৃত্রিমতা ছিল। বিশেষত সূচকের উত্থানের কারণ ছিল বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলির বিনিয়োগ। তারা দেশের বাজারে গত বছরে ঢেলেছিল ১.৬৩ লক্ষ কোটি টাকা। ফলে এক সময়ে সংস্থাগুলি যে মুনাফার টাকা তুলবে, সেটাই স্বাভাবিক। ঠিক যেটা ঘটছে এখন, বাজেটের আগে। গত চার দিনেই বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলি এখানে শেয়ার বেচেছে প্রায় ৬৮০০ কোটি টাকার। এ দিন সেই অঙ্ক ৩৭১২.৫১ কোটি। ফলে সূচক যে ভাবে উঠেছিল, সে ভাবেই নামছে।
তার উপরে এ বছরের মতো বাজেট আগে কখনও হয়নি বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। যে কারণে আগামী সোমবার বাজেটের ঘোষণার আগে নতুন পদক্ষেপ করতে চাইছেন না লগ্নিকারীরা। বরং তাঁরা যতটা পারছেন, হাতের শেয়ার বেচে টাকা তুলে নিচ্ছেন। সেই সঙ্গে করোনার ব্রিটেনের স্ট্রেন বিশ্বের ৭০টি ও দক্ষিণ আফ্রিকার স্ট্রেন ৩১টি দেশে ছড়িয়ে যাওয়া এবং অতিমারির উপরে আমেরিকার অর্থনীতির গতিপ্রকৃতি নির্ভর করবে বলে শীর্ষ ব্যাঙ্ক ফেডারেল রিজ়ার্ভের গভর্নর জেরম পাওয়েলের মন্তব্য দুশ্চিন্তা বাড়িয়েছে।
তবে পড়তি বাজার শেয়ার কেনার ভাল সুযোগ করে দিয়েছে বলে মনে করেন ক্যালকাটা স্টক এক্সচেঞ্জের উপদেষ্টা কমিটির সদস্য বিধান দূগারের মতো বিশেষজ্ঞেরা। তাঁদের মতে, সেটা করতে হবে বুঝেশুনে।