অনলাইনে পণ্য বেচার ব্যবসায় (ই-কমার্স) প্রত্যক্ষ বিদেশি লগ্নি-নীতি কী হওয়া উচিত, তা নিয়ে বৈঠক ডেকেছিলেন কেন্দ্রীয় শিল্প ও বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। কিন্তু সেখানে এলেনই না খুচরো ব্যবসা সংস্থাগুলির সংগঠন রিটেলার্স অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়ার (রাই) প্রতিনিধিরা। তাঁদের দাবি, এক ছাদের তলায় বিভিন্ন ব্র্যান্ডের পণ্য কেনা-বেচা (মাল্টি ব্র্যান্ড রিটেল) এবং ইন্টারনেটে পণ্য বেচা-কেনার মধ্যে ফারাক করা বন্ধ করুক কেন্দ্র। ব্যবসার জন্য সমান সুযোগ দিক দু’পক্ষকে। তা না-করে কেন্দ্র একই খুচরো ব্যবসার দুই মাধ্যমের জন্য দু’রকম নীতি নিচ্ছে বলে অভিযোগ তাঁদের।
এ প্রসঙ্গে এক বিবৃতিতে রাই-এর সিইও কুমার রাজাগোপালনের অভিযোগ, এক দিকে ই-কমার্সে বিদেশি বিনিয়োগকে ছাড়পত্র দিচ্ছে কেন্দ্র। অথচ সেই একই সুযোগ দিতে কার্পণ্য করছে খুচরো ব্যবসাকে।
সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, সরকারের ‘দু’রকম’ নীতি নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে ক্ষোভ জমছিল রিটেল সংস্থাগুলির মধ্যে। তাদের অভিযোগ, ই-কমার্স হোক বা রিটেল স্টোর— দুই ব্যবসারই চরিত্র মূলত এক। বিভিন্ন পণ্য ক্রেতার হাতে পৌঁছে দেওয়া। অথচ নীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে এই দুই ব্যবসার জন্য দু’ধরনের অবস্থান নিচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার।
ই-কমার্সে দুই ব্যবসায়ী সংস্থার মধ্যে বেচা-কেনার (বি-টু-বি) ব্যবসায় ১০০% বিদেশি বিনিয়োগে সায় দেওয়া হয়েছে। কথা চলছে ওই মাধ্যমের খুচরো ব্যবসাতেও (বি-টু-সি) সেই সুযোগ সম্প্রসারিত করার। অথচ সেখানে খুচরো ব্যবসায় ইউপিএ জমানার ৫১% পর্যন্ত বিদেশি লগ্নির ছাড়পত্রের কথাই শুধু দায়সারা ভাবে উল্লেখ করেছে কেন্দ্র। করের ক্ষেত্রেও অনলাইনে বিক্রির ব্যবসা বাড়তি সুবিধা পায় বলে খুচরো ব্যবসা সংস্থাগুলির অভিযোগ।
দু’পক্ষের লড়াই নেমেছে রাজনীতির উঠোনেও। এ দিনই যেমন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি বলেছেন, বহু ব্র্যান্ডের পণ্যের খুচরো ব্যবসা নিয়ে বিজেপির অবস্থান বদলায়নি। তাঁরা নীতিগত ভাবে এখনও এর বিরোধী। অন্য দিকে, অনলাইনে কেনাকাটায় কর বসিয়েছেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার।
এই পরিস্থিতিতে এ দিন সিআইআই, ফিকি, ন্যাসকম, ই-বে, অ্যামাজন ইত্যাদির প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলেন মন্ত্রী। অনলাইন ও অফলাইন রিটেলের জন্য নীতির সাযুজ্য রাখতে কেন্দ্রকে আর্জি জানিয়েছে বণিকসভাগুলিও।