• ডিভিডেন্ড ডিস্ট্রিবিউশন ট্যাক্স কী? যে-মিউচুয়াল ফান্ড প্রকল্পে ৩ বছরের লক-ইন পিরিয়ড আছে, তাতেও এটি প্রযোজ্য কি?
দিলীপ কুমার সরকার, চেতলা্
• ইকুইটি (শেয়ার ভিত্তিক) ফান্ড ছাড়া অন্য কোনও মিউচুয়াল ফান্ড (যেমন, লিকুইড ফান্ড বা অন্য কোনও ঋণপত্র নির্ভর ফান্ড বা ডেট ফান্ড) যখন আয় বণ্টন করে বা ডিভিডেন্ড দেয়, তখন তার উপরে নির্ধারিত হারে সরকারের ঘরে কর জমা দিতে হয় তাদের। এটাই হল ডিভিডেন্ড ডিস্ট্রিবিউশন ট্যাক্স বা ডিভিডেন্ড বণ্টন-কর। প্রাপ্ত লভ্যাংশের উপর লগ্নিকারীকে আর কোনও কর দিতে হয় না।
হ্যাঁ, লক-ইন পিরিয়ডে যদি কোনও ফান্ড আয় বণ্টন করে বা ডিভিডেন্ড দেয়, তবে তার উপরেও ডিভিডেন্ড বণ্টন কর প্রযোজ্য হয়।
পরামর্শদাতা: বিনিয়োগ বিশেষজ্ঞ অমিতাভ গুহ সরকার
• ডাকঘরে পাঁচ বছরের রেকারিং ডিপোজিটে পাওয়া সুদ কি করযোগ্য? ফ্ল্যাট কেনার আগের নিয়মগুলি জানাবেন। কেনার আগে কোন কোন বিষয়ে যাচাই করে নেব?
বাসুদেব পাল, বসিরহাট
• হ্যাঁ, ডাকঘরের রেকারিং ডিপোজিট থেকে যে-সুদ পাওয়া যাবে তার উপর কর দিতে হবে আপনাকে।
ফ্ল্যাট কেনার জন্য গৃহঋণ নিতে হবে। যা পাওয়া এখন সহজ একটা ব্যাপার। এমনকী বাড়ি বয়ে এসে ব্যাঙ্কের স্মার্ট এগ্জিকিউটিভ কাগজপত্র তৈরি করতেও সাহায্য করতে পারেন। তবে নিজের দিক থেকে কিছু তথ্য-প্রমাণ হাতে রাখতে হবে। যেমন, স্যালারি সার্টিফিকেট, আয়কর সংক্রান্ত কাগজপত্র, প্যান কার্ড, বর্তমান বাসস্থানের প্রমাণ ইত্যাদি। ব্যাঙ্ক প্রথমেই এগুলি চাইবে।
ঋণ নেওয়ার আগে বাজারে ঘুরে বা নেট ঘেঁটে আপনাকে দেখে নিতে হবে কোন ব্যাঙ্ক কেমন সুবিধা দিচ্ছে। অর্থাৎ সুদের হার ও প্রসেসিং ফি কে কতটা নেয়। সুদের হার ফিক্সড বা স্থির ও ভ্যারিয়েবল বা পরিবর্তনশীল, দু’ধরনের হয়। স্থির হার কখনওই বদলায় না। তবে পরিবর্তনশীল হার বাজারের ওঠাপড়া অনুযায়ী বাড়তে বা কমতে পারে। ঝুঁকি নিতে পারলে পরিবর্তনশীল সুদ অনেক সময়ে আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে গ্রাহকের কাছে।
প্রসেসিং ফি বলতে বোঝায় ব্যাঙ্ক নথিপত্র তৈরি করা বাবদ যে-টাকা নিয়ে থাকে।
কিছু সংস্থা ‘প্রপার্টি ভেরিফিকেশন’ বাবদও টাকা নেয়। এ ধরনের ‘হিডেন কস্ট’ বা আপাতদৃষ্টিতে এড়িয়ে যাওয়া খরচ যাচাই করে নিতে হবে।
আর একটি বিষয় হল ‘প্রিপেমেন্ট চার্জ’। অনেক সময়ে হাতে কিছু থোক টাকা এলে তা ঋণ শোধ করে দিতে ব্যবহার করতে চান গ্রাহক। কিন্তু সময়ের আগে শোধ করতে চাইলে ব্যাঙ্ক সুদের ক্ষেত্রে মার খাবে। তাই অনেক ব্যাঙ্ক ‘পেনাল্টি চার্জ’ বা জরিমানা বাবদ কিছু টাকা নেয়। এই বিষয়টি দেখে নিতে হবে। ভবিষ্যতের কথা ভেবে এই চার্জ আছে কি না বা থাকলে কতটা দিতে হবে, জেনে নেওয়া জরুরি।
এ বার বলব, বাড়ি কেনার আগে কোন কোন বিষয় যাচাই করে নেওয়া উচিত সকলের।
ঋণের মতোই সবার আগে দেখে নিতে হবে সম্পত্তি সংক্রান্ত আইনি ব্যাপারগুলি।
কতগুলি বিষয় একেবারে অঙ্কের নিয়মে মেনে চলা জরুরি। প্রথমেই দেখে নিতে হবে আইনি ব্যাপারটা। খতিয়ে দেখতে হবে, প্রোমোটার ও জমির মালিকের মধ্যে যে এগ্রিমেন্ট বা চুক্তি সই হয়েছে তাতে কোনও রকম গরমিল আছে কি না।
দেখে নিতে হবে, ওই জমির উপর নির্মাণ কাজ শুরু করার অনুমতি বা পাওয়ার অব অ্যাটর্নি প্রোমোটারের হাতে আছে কী না।
অনেক ক্ষেত্রেই ক্রেতার পক্ষে এ সব আইনি মারপ্যাঁচ বুঝে ওঠা সম্ভব হয় না। সে ক্ষেত্রে একটু খরচ করে আইনজীবীর পরামর্শ নিতে হবে। গোটা জীবনের জন্য স্থায়ী লগ্নির প্রশ্ন যেখানে জড়িয়ে, সেখানে এই বাড়তি খরচ জরুরি বলে দাবি বিশেষজ্ঞদের।
প্রথম দফায় টাকা দেওয়ার সঙ্গে পাকা সেল-এগ্রিমেন্ট করে নেওয়ার উপর জোর দিতে হবে। একই সঙ্গে দেখে নিতে হবে বাড়ির অনুমোদিত নকশা। সম্পত্তি রেজিস্ট্রেশন করার বিষয়টিও মাথায় রাখতে হবে। সম্পত্তি পাকাপাকি ভাবে নেওয়ার আগে রেজিস্ট্রেশন-এর পর্ব অবশ্যই শেষ করে নিতে হবে। এবং সংশ্লিষ্ট পুর কর্তৃপক্ষের দেওয়া কমপ্লিশন সার্টিফিকেট-ও প্রোমোটারের থেকে নেওয়া জরুরি।
কোথায় বাড়ি বা ফ্ল্যাট কেনা হচ্ছে, তা অবশ্যই নির্ভর করে ক্রেতার পছন্দের উপর। উত্তর না দক্ষিণ? বাইপাস না রাজারহাট? বা মেট্রো স্টেশন থেকে কতটা দূর, এ সব প্রশ্ন তো থাকবেই।
এ ছাড়াও সম্পত্তি কেনার সময়ে দেখে নিতে হবে বাড়িতে ঢোকার রাস্তা বা ‘অ্যাপ্রোচ রোড’ কেমন? অর্থাৎ রাস্তার পরিসর ও কোনও বেআইনি নির্মাণ সেখানে রয়েছে কী না।
জল ও বিদ্যুৎ সংযোগ, নিকাশি ব্যবস্থা ও জঞ্জাল ফেলার পরিকল্পনাও খতিয়ে দেখা দরকার। কারণ, কয়েকটি সংস্থার অনুমোদন প্রোমোটারের নেওয়া আবশ্যিক। যেমন পুর কর্তৃপক্ষ, এয়ারপোর্ট অথরিটি, ইলেকট্রিসিটি বোর্ড ও দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ। ওই এলাকায় দূষণ ছড়ায়, এমন কোনও শিল্প থাকলে, পরে তা সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।