বাণিজ্যে বাধানিষেধের পাঁচিল ভেঙে বিশ্ব অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার পক্ষেই রায় দিল জি-২০ গোষ্ঠী। আর সংস্কারের পথে হেঁটেই তা সম্ভব বলে গোষ্ঠীর দু’দিনের শীর্ষ বৈঠক শেষে আজ মেনে নিয়েছেন সদস্য দেশগুলির শীর্ষ নেতৃত্ব। দুনিয়া জুড়ে বৃদ্ধির চাকায় গতি ফেরাতে যৌথ বিবৃতিতেও এই দাওয়াই বাতলেছে ভারত-সহ জি-২০ গোষ্ঠীর সব সদস্য। বাণিজ্য ও বিনিয়োগের অনুকূল পরিবেশ তৈরির ব্যাপারেও একমত বিভিন্ন দেশ।
বিশ্ব বাণিজ্যে রক্ষণশীল নীতির বিরুদ্ধে লড়তে তারা যে তৈরি, সে কথাও জানানো হয়েছে বিবৃতিতে। এখানে আমেরিকার নাম না-করেও সদস্য দেশগুলি বলেছে, তারা এই ধরনের বাধানিষেধের বিপক্ষে। অবাধ বাণিজ্যের পথে বাধা তৈরি করে বলেই অপ্রয়োজনীয় খাতে ভর্তুকি তুলে নেওয়া ও অবৈধ বাণিজ্যে রাশ টানারও ডাক দিয়েছে জি-২০। শিল্পে উদ্বৃত্ত উৎপাদন ক্ষমতা কাজে লাগাতেও আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বড় ভূমিকা নিতে পারে বলে মনে করে এই গোষ্ঠী। সেই লক্ষ্যেই বিভিন্ন দেশকে সহযোগিতার পথে হাঁটতে বলেছেন বৈঠকে যোগদানকারী শীর্ষ নেতারা। তাঁরা বলেছেন, বিশ্ব অর্থনীতির বৃদ্ধির সম্ভাবনা উজ্জ্বল, তবে ‘কাঙ্ক্ষিত হারের চেয়ে তা এখনও অনেকটাই নীচে’।
রাষ্ট্রনেতাদের পাশাপাশি এই সুপারিশ করেছেন আন্তর্জাতিক অর্থভাণ্ডার (আইএমএফ)-এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর ক্রিস্টিন ল্যাগার্দে, বিশ্বব্যাঙ্কের প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিম এবং বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (ডব্লিউটিও)-র সেক্রেটারি জেনারেল রবার্টো অ্যাজেভেদো। এক বিবৃতিতে তাঁরা জানান, ‘‘বিশ্বে কোটি কোটি মানুষের ভাল থাকা নির্ভর করছে বাণিজ্যের প্রসারের উপর। সেই লক্ষ্যেই নীতি তৈরি করতে হবে সব দেশকে।’’
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বিশ শতকের শেষের দিকে বিশ্ব জুড়ে অবাধ বাণিজ্যের পথে বাধা সরছিল যথেষ্ট দ্রুতগতিতে, যার জেরে আয় ও জীবনযাত্রার মান বেড়েছে উন্নত ও উন্নয়নশীল সব দেশেই। তবে একুশ শতকের শুরু থেকেই বাণিজ্যে বাধানিষেধ তোলার বিষয়টি এগোচ্ছে ঢিমেতালে। স্থানীয় শিল্পকে প্রাধান্য দিতে গিয়েই বেশ কিছু দেশ নতুন করে বিদেশি পণ্যকে ঢুকতে না-দেওয়ার নীতি নিয়েছে বলেও অভিযোগ জানিয়েছে আন্তর্জাতিক অর্থভাণ্ডার, বিশ্বব্যাঙ্ক, ডব্লিউটিও-র মতো প্রতিষ্ঠান।
লগ্নির আর্জি মোদীর: নরওয়ের বিভিন্ন পেনশন ফান্ড সংস্থাকে ভারতের লগ্নি ও পরিকাঠামো তহবিলে বিনিয়োগের আর্জি জানালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। নরওয়ের প্রধানমন্ত্রী এরনা সোলবার্গ-এর সঙ্গেও দেখা করেন মোদী। দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জে-ইন এবং ইতালির প্রধানমন্ত্রী পাওলো জেন্টিলোনি-র সঙ্গেও বৈঠক করে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও লগ্নি বাড়ানোর আর্জি জানান তিনি।