আইন-আদালত

আমার স্বামী পৈতৃক সম্পত্তি হিসেবে একটি জমি উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছেন। সেখানে থাকি। এর চার দিকে আমরা দেওয়াল তুলেছি। কিন্তু আমাদের প্রতিবেশী নিউ ব্যারাকপুর মিউনিসিপ্যালিটিতে সেই দেওয়ালের বিরুদ্ধে ‘অবজেকশন’ দিয়েছেন এবং মিউনিসিপ্যালিটির সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার বা ওভারশিয়ারের মতের সঙ্গে আমরা একমত হতে পারেননি।

Advertisement
শেষ আপডেট: ০৫ মে ২০১৬ ০৩:৫১
Share:

আমার স্বামী পৈতৃক সম্পত্তি হিসেবে একটি জমি উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছেন। সেখানে থাকি। এর চার দিকে আমরা দেওয়াল তুলেছি। কিন্তু আমাদের প্রতিবেশী নিউ ব্যারাকপুর মিউনিসিপ্যালিটিতে সেই দেওয়ালের বিরুদ্ধে ‘অবজেকশন’ দিয়েছেন এবং মিউনিসিপ্যালিটির সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার বা ওভারশিয়ারের মতের সঙ্গে আমরা একমত হতে পারেননি। এই অবস্থায় কী করা উচিত?

Advertisement

চন্দ্রা সরকার, নিউ ব্যারাকপুর

আপনার মূল সমস্যা হল ‘গ্রাউন্ড লেভেল’-এর সংজ্ঞা কী হবে বা হওয়া উচিত, তা নিয়ে। চিঠি পড়ে বুঝতে পারলাম, মিউনিসিপ্যাল ওভারশিয়ার আপনার দেখানো গেজেট ও তাতে দেখানো ‘গ্রাউন্ড লেভেল’-এর সংজ্ঞা মানতে নারাজ। তিনি আপনার বাড়ি পর্যবেক্ষণ করে গিয়েছেন এবং তাঁর বক্তব্য—

Advertisement

(১) প্রাচীর বা ‘বাউন্ডারি ওয়াল’ (প্রতিবেশীর বাড়ির দিকের) হওয়া উচিত ‘গ্রাউন্ড লেভেল’ থেকে ১.৫০ মিটার (২) যে-কোনও বাড়ির ‘গ্রাউন্ড লেভেল’ হওয়া উচিত নিকটবর্তী বা সংযুক্ত রাস্তার লেভেলের সমান।

‘গ্রাউন্ড লেভেল’-এর সংজ্ঞা ‘পশ্চিমবঙ্গ মিউনিসিপ্যাল বিল্ডিং রুল ২০০৭’-এ স্পষ্ট বলা আছে। তবুও কোনও ভিন্নমত পোষণের ক্ষেত্রে যদি আপনার উপর নোটিস বা বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়, তা হলে আপনি সেই বিজ্ঞপ্তির বিরুদ্ধে মিউনিসিপ্যালিটির আধিকারিকের কাছে লিখিত আপত্তি দাখিল করতে পারেন। সেই আপত্তি দাখিলের পরিপ্রেক্ষিতে শুনানি না হলে বা শুনানির পরে ন্যায়বিচার না পেলে আপনি কলকাতা হাইকোর্টে ‘রিট’ মামলার মাধ্যমে ন্যায়বিচার চাইতে পারেন।

• বাবা-মায়ের নামে তিন কাঠা জমি-সহ বাড়ি রয়েছে। বাবা মারা গিয়েছেন। এখন দুই দাদা এবং মা আছেন। ওই সম্পত্তির কোনও ভাগ হয়নি। এখন ছোড়দা এবং মা আমাকে বাড়ির একটা অংশ দিতে চান। কিন্তু বড়দা কোনও ভাবেই রাজি নন। আমার প্রশ্ন, উক্ত যৌথ সম্পত্তিতে বাবার অবর্তমানে মালিক ক’জন? বিবাহিতা মেয়ে বলে কি ওই সম্পত্তির উপর আমার কোনও অধিকার নেই? থাকলে কী ভাবে তা পাওয়া যাবে?

সৌমিলি দত্ত, কলকাতা

আপনার কথানুযায়ী, ওই জমি সমেত বাড়ির ‘দলিল’ আপনার বাবা ও মা দু’জনের নামে। তার মানে ওই সম্পত্তিতে অর্ধেক অংশের মালিক আপনার বাবা ছিলেন। অর্ধেক অংশের মালিক মা। আপনার মা এখনও জীবিত। কিন্তু যে-অর্ধেক অংশের মালিক আপনার বাবা ছিলেন, সেই অর্ধেক অংশের মালিক বর্তমানে আপনারা সবাই অর্থাৎ জীবিত উত্তরাধিকারীরা। যেমন, আপনার মা, দুই দাদা ও আপনি। দাদারা চাইলেও, আপনার প্রাপ্য অংশ অস্বীকার করতে পারবেন না।

আপনি অবশ্যই ‘বিবাহিতা কন্যা’ হিসেবে বাবার রেখে যাওয়া অর্ধাংশের দাবিদার। তবে সে ক্ষেত্রে ওই অর্ধাংশের একের চার অংশ আপনি পেতে পারেন।

আপনার মা যেহেতু এখনও বেঁচে আছেন এবং সম্ভবত বড়দার সঙ্গে থাকেন, সেই হেতু মা যদি ‘চান’, তাহলে তিনি তাঁর পছন্দ মতো কাউকে ‘দানপত্র’ করে দিতেই পারেন। তবে তিনি শুধু তাঁর অর্ধাংশ এবং বাবার রেখে যাওয়া অর্ধাংশের এক চতুর্থাংশ কাউকে দিয়ে যেতে পারেন। যদি আপনার কখনও মনে হয় মাকে দিয়ে জোর করে ‘দানপত্র’, ‘উইল’ ইত্যাদি করানো হয়েছে, সে ক্ষেত্রে তা চ্যালেঞ্জ করে আপনি আদালতের শরাণাপন্ন হতে পারেন। সে ক্ষেত্রে আপনার মায়ের সই জোর করে করানো হয়েছে, অথবা সই জাল করা হয়েছে ইত্যাদি আপনাকে আদালতে প্রমাণ করতে হবে। যদি মা এখনও শারীরিক ও মানসিক ভাবে সুস্থ থাকেন এবং আপনার সঙ্গে যোগাযোগ থাকে, তা হলে তাঁর নির্দিষ্ট সম্পত্তির আইনানুগ ও তাঁর মর্জিমাফিক ভাগবণ্টনের ব্যাপারে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে রফাসূত্র বার করার চেষ্টা চালাতে পারেন।

পরামর্শদাতা: আইনজীবী
জয়ন্ত নারায়ণ চট্টোপাধ্যায়

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement