প্রধানমন্ত্রীর আর্থিক উপদেষ্টা পরিষদের চেয়ারম্যান বিবেক দেবরায়। —ফাইল চিত্র।
পণ্যের চড়া দামে দিশাহারা দেশের বহু মানুষ। সম্প্রতি সরকারি সূত্রের ইঙ্গিত, ভোটের আগে আমজনতা চাপ কমাতে কিছু পদক্ষেপ করতে পারে কেন্দ্র। যার অন্যতম তেলে শুল্ক ছাঁটাই। এই পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার বণিকসভা ক্যালকাটা চেম্বারের সভায় দেশের উন্নয়নে সরকারের খরচ বাড়ানোর জন্য তাদের আয় বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তার কথা বললেন প্রধানমন্ত্রীর আর্থিক উপদেষ্টা পরিষদের চেয়ারম্যান বিবেক দেবরায়। সে জন্য করের হার বৃদ্ধির পক্ষেও সওয়াল করলেন। তাঁর বক্তব্য, অত্যাবশ্যক কয়েকটি খাতে কেন্দ্রের যা বরাদ্দ, তার চেয়ে কর বাবদ আয় অনেক কম। তাই কর ছাড়ের সুবিধাও ধাপে ধাপে তুলে দেওয়াই লক্ষ্য হওয়া উচিত। যদিও ভোটের আগে যে এগুলির সম্ভাবনা নেই, সেই ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি। জিএসটি জমানায় সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে দাবি করেও করের একটি হারের পক্ষে বার্তা দেন এই অর্থনীতিবিদ।
এ দিন ২০৪৭ সালে ভারত বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি হয়ে উঠবে বলে আশা প্রকাশ করেন বিবেক। অর্থনীতির মূল চার চালিকাশক্তির অবস্থা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তোলেন সরকারি ব্যয়ের কথা। দাবি করেন, সরকারের ব্যয়ের দুই-তৃতীয়াংশের দায় রাজ্যগুলির। ফলে কেন্দ্র কেন ব্যয় বাড়াতে পারছে না, সে প্রশ্ন করলে আদপে রাজ্যগুলিকেই তা করা উচিত। তাঁর কথায়, খরচ বাড়াতে সরকারের আয় বৃদ্ধিও জরুরি। কিন্তু যেখানে আশা করা হয় স্বাস্থ্য, শিক্ষা, প্রতিরক্ষা ও পরিকাঠামো মিলিয়ে জিডিপির ২৩% কেন্দ্র খরচ করবে, সেখানে জিডিপির মাত্র ১৫% আসে কর থেকে। দেবরায়ের বক্তব্য, ‘‘পছন্দ হোক বা না হোক, হয় আমাদের বেশি কর দিতে হবে, নয়তো পশ্চিমী দুনিয়ার মতো বিমানবন্দর বা চিনের মতো রেল স্টেশনের আশা রাখলে চলবে না। অথচ আমার কাছে এলেই শিল্পের প্রতিনিধিরা সবাই বলেন অন্যদের উপরে কর চাপলেও আমাদেরটা তুলে দিন।’’ তাঁর মতে, যে কোনও ছাড় জীবনকে জটিল করে তোলে। উল্টে নিয়ম মানতে গিয়ে খরচ বাড়ে। ‘‘এতে আইনজীবী আর চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টদেরই সুবিধা হয়’’ বলেও হাল্কা ভাবে মন্তব্য করেন তিনি।
সেই সঙ্গে জিএসটি ব্যবস্থায় একটি করের পক্ষেও এ দিন সওয়াল করেছেন বিবেক। তাঁর দাবি, জিএসটির অধীনে করের হারকে এমন ভাবে স্থির করার কথা ছিল, যাতে আগের জমানার তুলনায় রাজস্ব কম না আসে। সে জন্য করের গড় হার হওয়া দরকার ১৭%। কিন্তু বর্তমানে গড়ে তা ১১.৪%। চেয়ারম্যানের কথায়, ‘‘জিএসটিতে একটিই হার হওয়া উচিত। কিন্তু সকলেই, এমনকি জিএসটি পরিষদও ২৮% কমানোর কথা বলে। কেউ শূন্য বা ৩% হারকে বাড়াতে দিতে চান না।’’