প্রতীকী ছবি
করোনার কামড়ে যখন মানুষের রুজি-রোজগার অনিশ্চিত, তখন কলকাতায় পেট্রলের দাম ছুটছে লিটারে ৮০ টাকার দিকে। ডিজ়েলও পেরিয়েছে ৭১ টাকা। আজ, বুধবার শহরে আইওসির পাম্পে জ্বালানি দু’টি কিনতে হবে যথাক্রমে ৭৯.০৮ ও ৭১.৩৮ টাকায়। রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থাগুলি এই নিয়ে টানা ১১ দিনে পেট্রলের দাম বাড়াল ৫.৭৮ টাকা, ডিজ়েল ৫.৭৬ টাকা।
শিল্প থেকে আমজনতা সকলেরই বক্তব্য, লকডাউনের মধ্যে ৮২ দিন (পশ্চিমবঙ্গ ছাড় তোলায় ১ এপ্রিল দাম বাড়ে) দাম অপরিবর্তিত রাখার মাসুল যে এত চড়া হবে ভাবা যায়নি। সেটাও এই আর্থিক সঙ্কটের মধ্যে এবং বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেল ব্যারেলে ৪০-৪১ ডলার ছুঁতেই। যদিও তা ৪০ ডলারের নীচে নামছে মাঝে-মধ্যেই। সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, সাধারণ মানুষের স্বার্থে তেলে উৎপাদন শুল্ক কমাক কেন্দ্র। না-হলে যাতায়াতের খরচই শুধু বাড়বে না, আগামী দিনে নতুন সমস্যা তৈরি করতে পারে পণ্যের দাম বৃদ্ধিও।
কেন্দ্রকে দুষে কাঠগড়ায় তুলছে বিরোধীরা। যে ভাবে কংগ্রেস নাগাড়ে তোপ দাগছে, তাতে স্পষ্ট তেল নিয়ে মোদী সরকারকে বিন্দুমাত্র তিষ্ঠোতে না-দেওয়ার পণ করেছে তারা। কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধী অন্যান্য দিনের মতোই মঙ্গলবার টুইটে আক্রমণ শানান। এ দিন আসরে নামেন তাঁর মা, কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী-ও। দাম বাড়িয়ে সরকার নাগরিকদের যন্ত্রণা কমানোর বদলে বাড়াচ্ছে, এই অভিযোগ তুলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি দেন তিনি। সেখানে দাবি করেন, তেলে শুল্ক ও বর্ধিত দাম এখনই ফেরানো হোক।
লকডাউনের মধ্যে অশোধিত তেলের দাম যখন রেকর্ড তলানি ছুঁয়েছিল, তখন দেশে পেট্রল-ডিজ়েল কমেনি। বরং লিটারে পেট্রলে ১০ টাকা ও ডিজেলে ১৩ টাকা উৎপাদন শুল্ক ও সেস বাড়িয়ে কোষাগার ভরেছে কেন্দ্র। সূত্রের দাবি, একে তখন তেলের চাহিদা কম ছিল। তার উপরে শুল্ক বাড়ায় ক্ষতি বইতে হয় সংস্থাগুলিকে। যে কারণে মে-র শেষে নিজেদের বৈঠকে তেল সংস্থাগুলি বলেছিল, জোগানের খরচ ও বিক্রির মধ্যে প্রায় ৪-৫ টাকা ঘাটতি। তা মেটাতে প্রায় দু’সপ্তাহ ধরে দিনে লিটারে ৪০-৫০ পয়সা করে দাম বাড়াতে হবে। কিন্তু কেন্দ্র তাতে আপত্তি তোলে। সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, এখন সেটাই হচ্ছে। অথচ মঙ্গলবার খোদ তেলমন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানই জানিয়েছেন, দেশে তেলের বিক্রি বাড়ছে।