—প্রতীকী চিত্র।
পুজোয় শেষ মুহূর্তে উড়ানের টিকিট কাটতে গিয়ে হাতে ছেঁকা লাগছে ঘরমুখো বাঙালির।অনেকেই পুজোর ক’দিন পরিবারের সঙ্গে কাটাতে দিল্লি, মুম্বই, বেঙ্গালুরু থেকে বাংলায় আসেন। কিন্তু, শেষ মুহূর্তে উড়ানের টিকিট কাটতে গিয়ে মাথায় বজ্রপাত। বেঙ্গালুরু, হায়দরাবাদ থেকে তিন জনের যাতায়াতে লাগছে ৬০-৭০ হাজার টাকা! এখন চাইলেও ট্রেনের টিকিট মিলবে না। অগত্যা সটান গাড়ি নিয়ে কলকাতা। বেঁচে যাচ্ছে খরচ।
হায়দরাবাদের তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী অর্পণ সেনগুপ্ত-র তিন জনের সংসার। হিসাব কষে দেখেছেন, গাড়িতে কলকাতায় এলে টাকা বাঁচবে। হায়দরাবাদ থেকে ফোনে বললেন, ‘‘বছরের অন্য সময়ে উড়ানের টিকিট থাকে ৬-৭ হাজারের কাছে। পুজোর সময় প্রতি বারই বাড়ে। কিন্তু, এ বার হাত দেওয়া যাচ্ছে না।’’ অর্পণের হিসাব, হায়দরাবাদ থেকে কলকাতা আসতে গাড়িতে তেল লাগে ১০ হাজার টাকার। মাঝে এক দিন কোথাও থাকা-খাওয়ার খরচ হাজার পাঁচেকে। অথচ এক পিঠে তিন জনের উড়ানের টিকিট পড়ছে প্রায় ৪০ হাজার টাকা।
দিল্লি থেকে কলকাতায় আসার এই উপায় দেখিয়েছিল ‘পিকু’। অমিতাভ বচ্চন, দীপিকা পাড়ুকোনকে নিয়ে সুজিত সরকারের সেই ছবি দেখে বাঙালি শিখেছে, দিল্লি থেকে সকালে সড়কপথে রওনা হয়ে সন্ধ্যার মুখে বারাণসী। সেখানে রাত কাটিয়ে পর দিন কলকাতা। দিল্লি থেকে অনিকেত সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘গত ১১ বছরে এ ভাবে অনেক বার দিল্লি-কলকাতা করেছি। সঙ্গে থাকে জার্মান শেপার্ড। এ বার পঞ্চমীর রাতে বেরিয়ে পড়ব।’’
বেঙ্গালুরু থেকে স্ত্রী-ছেলেকে নিয়ে কলকাতায় ঢুকেছেন শুভ দাস। বললেন, ‘‘প্রথমে বিশাখাপত্তনম, তারপর পুরী হয়ে কলকাতা। উড়ানে লাগছিল প্রায় ৭০ হাজার টাকা। গাড়িতে তেল লেগেছে ১০ হাজার টাকার। যেতে আরও ১০ হাজার। যাতায়াতে দু’রাত থাকা-খাওয়া নিয়ে ১০ হাজার। ৪০ হাজার টাকা বাঁচালাম!’’ হাওড়ার বাগনানের সাগ্নিক মানিক শুক্রবার বাড়ি এসেছেন গাড়ি চালিয়ে। বেঙ্গালুরুর এই তথ্যপ্রযুক্তি কর্মীর দাবি, ‘‘কত দিনের ছুটি মিলবে ঠিক থাকে না। আমাদের পেশায় শেষ মুহূর্তেই টিকিট কাটতে হয়।’’ বেঙ্গালুরু থেকে আত্রেয় নাথ মোটরবাইকে এসেছেন। বললেন, ‘‘নিজের সময় মতো আসা যায়। আগে গাড়ি নিয়েও এসেছি।’’ উড়ান সংস্থার কর্তাদের দাবি, চড়া জ্বালানি। টিকিটের দাম বাড়াতে ‘বাধ্য’ হয়েছেন। পুজো বলেও দাম বাড়ে। এক কর্তার কথায়, ‘‘এটাই তো ব্যবসার সময়।’’