ফাইল চিত্র।
প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার আওতায় গৃহঋণের সুদে ভর্তুকি গোনার কথা যখন বলা হয়েছিল, তখন দাবি ছিল, তার মূল লক্ষ্য শহুরে গরিবরা। পাখির চোখ বস্তিবাসীদের মাথায় পাকা ছাদ। কিন্তু সংশ্লিষ্ট পরিসংখ্যান বলছে, ভর্তুকির সেই ঘি মূলত পাতে পড়ছে মধ্যবিত্তদেরই।
একে চাহিদা সম্পর্কে ধারণা তেমন স্পষ্ট নয় বলে, গরিবদের জন্য খুব কম দামি আবাসন নির্মাণে এখনও পর্যন্ত আগ্রহ দেখাচ্ছে না সংশ্লিষ্ট শিল্প। তার উপর, ফ্ল্যাট তৈরির সময়ে বস্তিবাসীদের সাময়িক পুনর্বাসনের ঝক্কি নিতে নারাজ অধিকাংশ প্রোমোটারই। তাই সব মিলিয়ে, সরকার ভর্তুকি গুনলেও তা পৌঁছচ্ছে না চাঁদমারির ধারেপাশেও।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে খবর, সম্প্রতি এ নিয়ে একটি রিপোর্ট সংসদে জমা দিয়েছে আবাসন মন্ত্রক। কেন্দ্রের পরিকল্পনা অনুযায়ী, ২০২২-এর মধ্যে গ্রাম-শহর মিলিয়ে ২ কোটি বাড়ি তৈরি হওয়ার কথা। এর মধ্যে ১.৮০ কোটিই শহরে। কিন্তু সরকারি তথ্য বলছে, এ পর্যন্ত অনুমোদিত ফ্ল্যাট ও বাড়ির মাত্র ২০% বস্তিবাসীদের জন্য!
কেন্দ্রের দাবি, শহরে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় গত দু’বছরে প্রায় ২৪ লক্ষ বাড়ি তৈরির ছাড়পত্র দিয়েছে তারা। সুদে ভর্তুকি সমেত নানা সুবিধা দিতে খরচ করেছে ১ কোটি ২৭ লক্ষ টাকা। লক্ষ্য, গত ৩১ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা মেনে মূলত গরিবদের মাথায় ছাদ জোগাতে গৃহঋণে সুদে ভর্তুকি জোগানো।
এই সুবিধায় বাজার বাড়ার আশায় প্রায় সব নির্মাণ সংস্থা নতুন পরিকল্পনা করছে বলে দাবি তাদের সংগঠন ক্রেডাইয়ের। সেই অনুযায়ী দেওয়া হচ্ছে বিজ্ঞাপনও। কিন্তু উৎসাহের আঁচ মূলত মধ্যবিত্ত আবাসন ঘিরেই দেখা যাচ্ছে। বস্তি অঞ্চলে তা তৈরির আগ্রহ সে ভাবে দেখায়নি নির্মাণ শিল্প। ক্রেডাইয়ের মতে, বিকল্প ব্যবস্থা তৈরি করে বস্তিবাসীদের সরানো কঠিন কাজ। কারণ, এলাকার সঙ্গে জড়িয়ে থাকে তাঁদের রুজি-রুটির প্রশ্ন। প্রায় সব শহরেই বহু দামি (প্রাইম) এলাকা জুড়ে রয়েছে বস্তি। সেই বাসিন্দাদের উঁচু বহুতলে নিয়ে গেলে অনেকটা জমি হাতে আসবে, যা ব্যবহার করা যাবে বাণিজ্যিক কাজে। তৈরি হতে পারে আধুনিক আবাসনও। কিন্তু এই যাবতীয় হাতছানি এবং ভর্তুকির সুবিধাতেও সেই কাজে অন্তত এখনও পর্যন্ত গতি তেমন আসেনি।