প্রতীকী ছবি।
লকডাউনে বিদ্যুতের চাহিদা কমায় আয় কমেছে বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থাগুলির। উৎপাদক সংস্থাগুলির কাছে তাদের বকেয়ার বোঝাও চড়ছে। এই অবস্থায় তাদের কিছুটা সুরাহা দিতে মে মাসে উদয় প্রকল্পে ৯০,০০০ কোটি টাকার বিশেষ ঋণ ঘোষণা করেছিল কেন্দ্র। তবে শর্ত ছিল, গত বছরের আয়ের ২৫% কার্যকরী মূলধন হিসেব ঋণ পাবে সংস্থাগুলি। বুধবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে সেই বিধি এককালীন শিথিল করার সিদ্ধান্ত নিল কেন্দ্র। ফলে সংস্থাগুলির সামনে আগের চেয়েও বেশি ঋণ পাওয়ার সুযোগ খুলে যাবে। প্রকল্পের সুবিধা পাবে আরও বেশি সংস্থা।
অতিমারির আবহে ধাক্কা খাওয়া অর্থনীতিকে ঘুরিয়ে দাঁড় করাতে ২১ লক্ষ কোটি টাকার প্যাকেজ ঘোষণা করেছিল কেন্দ্র। তার মধ্যে ছিল বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থাগুলিকে নগদের জোগান দিতে ৯০,০০০ কোটি টাকার ঋণ প্রকল্পও। যেখানে কম সুদে পাওয়ার ফিনান্স কর্পোরেশন (পিএফসি) এবং রুরাল ইলেকট্রিসিটি কর্পোরেশনের (আরইসি) কাছ থেকে ঋণ পাচ্ছে সংস্থাগুলি। কোনও কোনও ক্ষেত্রে রাজ্য এই প্রকল্পে ঋণ নিয়ে নগদ জোগাচ্ছে তাদেরকে। এ দিন বৈঠকের শেষে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর বলেন, ‘‘দেশে বিদ্যুতের চাহিদা কমেছে। ফলে বিদ্যুৎ ক্ষেত্র সমস্যায় রয়েছে। তারা ঠিক মতো বিল সংগ্রহও করতে পারছে না। বণ্টন সংস্থাগুলি যাতে কার্যকরী মূলধনের ২৫ শতাংশের বেশি ঋণ পেতে পারে, সে ব্যাপারে পিএফসি এবং আরইসি-কে অনুমতি দেওয়া হয়েছে।’’
সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, বণ্টন সংস্থাগুলির বকেয়ার বোঝা বাড়ছিল অনেক দিন ধরেই। লকডাউনের সময়ে বিদ্যুতের চাহিদা তো কমেছেই। সেই সঙ্গে রোজগারে টান পড়ায় বহু সাধারণ মানুষও নিয়মিত বিল দিতে পারছেন না। সব মিলিয়েই বণ্টন সংস্থাগুলির উপরে চাপ বেড়েছে। তার উপরে আর্থিক কর্মকাণ্ড এবং তার ফলে বিদ্যুতের চাহিদা রাতারাতি মাথা তুলবে, এমন প্রত্যাশাও করা যাচ্ছে না। এই অবস্থায় ঋণ প্রকল্পের বিধি শিথিল করা জরুরি হয়ে পড়েছিল। এ দিনের সিদ্ধান্তে বণ্টন সংস্থাগুলির নগদের সমস্যা আপাতত কমবে বলেই মত ওয়াকিবহাল মহলের।
আর্থিক সমস্যায় পড়া বণ্টন সংস্থাগুলিকে কম সুদে ঋণ জোগাতে ২০১৫ সালে উদয় প্রকল্প চালু করেছিল কেন্দ্র। কিন্তু তাতে কার্যকরী মূলধনের ঊর্ধ্বসীমার কড়াকড়ি থাকায় করোনার আবহে নতুন করে ঋণ পাচ্ছিল না অনেক সংস্থাই। এককালীন বিধি শিথিলের ফলে সেই সংস্থাগুলিরও ঋণ পেতে সুবিধা হবে।