আর কে সিং। —ফাইল চিত্র।
কয়লার সঙ্কটে বহু তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছিল। ফলে গ্রীষ্মের দাবদাহের মধ্যেই লোডশেডিং বাড়ে অনেক রাজ্যে। সমস্যা মেটাতে বিভিন্ন বিদ্যুৎ উৎপাদন সংস্থাকে কয়লা আমদানির নির্দেশ দেয় কেন্দ্র। চড়া দামের কয়লা কেনার সেই নির্দেশ নিয়ে যখন ক্ষুব্ধ কিছু রাজ্য এবং বিদ্যুৎ মহলের একাংশ, তখন বর্ষার মরসুমে তার সরবরাহ অব্যাহত রাখতে রাজ্যগুলিকে ফের বার্তা দিলেন বিদ্যুৎমন্ত্রী আর কে সিংহ। মুখ্যমন্ত্রীদের চিঠিতে বললেন, বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলি যেন মজুত বাড়ানোর ব্যবস্থা করে। পশ্চিমবঙ্গ-সহ কিছু রাজ্য কয়লা আমদানির প্রক্রিয়া হয় শুরু বা শেষ করেনি বলে উদ্বেগ জানিয়ে আলাদা চিঠি দিয়েছেন তিনি।
পশ্চিমবঙ্গ কয়লা উন্নয়ন নিগম অবশ্য বার বারই দাবি করেছে, তাদের নিজস্ব কয়লা খনি থেকেই প্রায় পুরো চাহিদা মেটানো যাচ্ছে। এ ছাড়া, কোল ইন্ডিয়ার থেকেও এখন কিছুটা মিলছে। ফলে মজুত ভান্ডার যথেষ্ট পোক্ত। ফলে এ রাজ্যে লোডশেডিংয়ের সমস্যা নেই। আর সেই কারণেই যৌক্তিকতা নেই চড়া দামে কয়লা আমদানি করার।
দেশে কয়লার জোগান সঙ্কট যুঝতে ৩১ মে-র মধ্যে ১০% আমদানির বরাত দিতে বলেছে কেন্দ্র। সেটা না করতে পারলে এবং ১৫ জুনের মধ্যে কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রে না পৌঁছলে সংশ্লিষ্ট উৎপাদন সংস্থার আমদানির বরাত বেড়ে হবে ১৫%। যদিও চড়া দরে কয়লা আমদানির এই বাধ্যবাধকতার বাস্তবতা নিয়েই প্রশ্ন তুলছে বিদ্যুৎ কর্মী-ইঞ্জিনিয়ারদের সংগঠন এআইপিইএফ। বুধবার তাদের দাবি, ওই বাড়তি খরচের দায় রাজ্যের ঘাড়ে না চাপিয়ে বরং কেন্দ্রই নিক। বিদ্যুৎ, কয়লা এবং রেলের মতো বিভিন্ন মন্ত্রকের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব কয়লার সঙ্কটের কারণ বলেও ফের তোপ দাগে তারা। বস্তুত আগেই অভিযোগ উঠেছিল, কয়লা সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না রেলের রেক-এর অভাবে। এআইপিইএফ-এর দাবি, তাই অহেতুক রাজ্যগুলিকে চড়া দামে বিশ্ব বাজার থেকে কয়লা আমদানির জন্য চাপ দেওয়া উচিত নয় কেন্দ্রের।
মন্ত্রীর বার্তা, রেল-কাম-রোড (রেল ও সড়ক পথে) পদ্ধতিতে দেশে কয়লার জোগান বাড়াতে রাজ্যগুলির জন্য যে বরাদ্দ স্থির করা হয়েছে, বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মজুত বাড়াতে তা তারা একবারেই তুলে নিতে পারে। তবে একই সঙ্গে ফের হুঁশিয়ারি, কেউ বরাদ্দ ঠিক মতো না তুললে অন্য রাজ্যকে প্রয়োজনে তা দেওয়া হবে।