প্রতীকী ছবি।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড় পাওয়ার গ্রিড সাবস্টেশনের সঙ্গে ৪০০ কেভি-র হাইটেনশন লাইনের যোগাযোগ তৈরির কাজ শেষ হয়েছিল কয়েক মাস আগেই। অত্যাবশ্যক পরিষেবা হিসেবে লকডাউন চলাকালীন শেষ পর্যায়ের পরীক্ষা-নিরিক্ষাগুলিও সারা হয়েছে। গ্রিডের লাইন ‘চার্জ’ (বিদ্যুৎ দেওয়া) করার তোড়জোড় শুরু হয় তখনই। সূত্রের খবর, সেই পরিকল্পনা মতো সম্প্রতি গ্রিড লাইনে বিদ্যুৎ দিতে শুরু করেছে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা পাওয়ার গ্রিড কর্পোরেশন। প্রতি দিন ৩০০ মেগাওয়াট করে বিদ্যুৎ আনা হচ্ছে ভাঙড়ে। রাজ্যের চাহিদা মতো পরে তা ধাপে ধাপে আরও বাড়ানো হবে।
বছর খানেক আগে এই প্রকল্পের কাজই থমকে গিয়েছিল ভাঙড় ও সংশ্লিষ্ট দু-একটি জায়গায় স্থানীয় মানুষের বাধায় ও বিক্ষোভে। পরবর্তীকালে রাজ্য প্রশাসনের সহযোগিতায় তা শেষ হওয়ার পরে লাইনে বিদ্যুতের অপেক্ষায় চলছিল দিন গোনা। সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, এই গ্রিড প্রকল্পের হাত ধরে কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকায় বিদ্যুৎ পরিষেবা আরও উন্নত হবে। বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, জাতীয় গ্রিডের সঙ্গে রাজ্যের সব সময়ই পোক্ত বিদ্যুৎ সংযোগ ব্যবস্থা থাকা দরকার। ভাঙড় গ্রিড লাইন চালু হওয়ায় রাজ্য প্রয়োজনে যেমন অনেক বেশি বিদ্যুৎ নিতে পারবে, তেমনই ভোল্টেজও শক্তিশালী হবে। শুধু তা-ই নয়, বিদ্যুৎ নেওয়ার পাশাপাশি রাজ্যের উদ্বৃত্ত বিদ্যুৎ এই গ্রিড মারফত অন্য রাজ্যকে বিক্রিও করা যাবে বলে জানাচ্ছেন তাঁরা।
বিদ্যুৎ মহলেরও দাবি, ভাঙড় পাওয়ার গ্রিড চালু হওয়ায় রাজ্য প্রয়োজনে ১০০০-১২০০ মেগাওয়াটের বেশি বিদ্যুৎ আনতে পারবে। বিশেষত উত্তর-পূর্বাঞ্চলের জলবিদ্যুৎ এই লাইন দিয়ে রাজ্যে আরও বেশি করে ঢুকবে। গ্রিড সূত্রে খবর, বিহারের পূর্ণিয়া লাইন দিয়ে জলবিদ্যুৎও আসছে।
ভাঙড় সাবস্টেশনে বিদ্যুৎ আসছে বিহারের পূর্ণিয়া ও এনটিপিসি-র ফারাক্কা থেকে। বিদ্যুৎ পাচ্ছে এই গ্রিড লাইনের সঙ্গে যুক্ত মুর্শিদাবাদের গোকর্ণ সাবস্টেশনও।
গ্রিড বৃত্তান্ত
• গ্রিড লাইন তৈরিতে লেগেছে ১৩০০ কোটি টাকা।
• ভাঙড় থেকে দু’টি হাইটেনশন লাইন মারফত গড়ে উঠেছে পরিকাঠামো।
• একটি লাইন ভাঙড় থেকে ফারাক্কায় এনটিপিসি-র সাবস্টেশনে যুক্ত হয়েছে।
• বিহারের পূর্ণিয়া থেকে একটি পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ সংবহন সংস্থার মুর্শিদাবাদের গোকর্ণ সাবস্টেশন হয়ে ভাঙড়ে এসে জুড়েছে।
• ভাঙড়-গোকর্ণ-পূর্ণিয়া লাইনের বিদ্যুৎ সংবহন ক্ষমতা প্রায় ২০০০ মেগাওয়াট।
• শুধু ভাঙড়-গোকর্ণে প্রায় ২১০ কিলোমিটার টাওয়ার বসিয়ে লাইন টানার কাজেই খরচ হয়েছে ৮০০
কোটির বেশি।
• ভাঙড় পাওয়ার গ্রিড চালু হওয়ায় রাজ্য প্রয়োজনে ১০০০-১২০০ মেগাওয়াটের বেশি বিদ্যুৎ আনতে পারবে।
• শক্তিশালী হবে ভোল্টেজও।