টনির দোসর কারা, জাল ছড়াতে জেরা  

বিজেপির সুব্রহ্মণ্যম স্বামী আদালতে মামলা ঠুকে ওই গাঁটছড়া বাতিলের দাবি জানান। চিদম্বরমের পাশাপাশি তিনি অভিযোগ করেন টাটা গোষ্ঠীর প্রাক্তন কর্ণধার রতন টাটার বিরুদ্ধেও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ মে ২০১৮ ০২:৪২
Share:

এয়ার এশিয়া ইন্ডিয়া কাণ্ডে ক্রমশ জড়িয়ে যাচ্ছে রাঘব-বোয়ালদের নাম। প্রাক্তন বিমান পরিবহণ মন্ত্রী প্রফুল্ল পটেল থেকে শুরু করে ইউপিএ জমানার অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম— ঘুরপাক খেতে শুরু করেছে বহু ওজনদার নামই। শোনা যাচ্ছে, জেরার জন্য তাঁদের ডাকতে পারে সিবিআই। ফলে ফের এক দফা রাজনৈতিক দড়ি টানাটানির আবহ তৈরি হচ্ছে এই কাণ্ড ঘিরে। আর সেই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মহল মনে করছে, এই কেলেঙ্কারির জেরে এ দেশে আপাতত বেশ বেকায়দায় টনি ফার্নান্ডেজের সংস্থা। এয়ার এশিয়া ইন্ডিয়ার প্রথম বার শেয়ার ছাড়ার (আইপিও) পরিকল্পনা তো আপাতত ধাক্কা খেলই। এ দেশ থেকে আন্তর্জাতিক উড়ান পরিষেবা বাড়ানোর পরিকল্পনা রূপায়ণেও এখন বেগ পেতে হবে তাদের।

Advertisement

ভারতে টাটাদের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে বিমান পরিষেবা চালুর জন্য সরকারি আধিকারিকদের সঙ্গে যোগসাজশে ‘৫/২০ নিয়ম’ শিথিলের চেষ্টা করেছিলেন টনি। এই অভিযোগের তদন্তে নেমে তাঁর নামে মামলা ঠুকেছে সিবিআই। সূত্রের খবর, আগামী দিনে এই তদন্তের জন্য দেশের দুই প্রাক্তন বিমানমন্ত্রী প্রফুল্ল পটেল ও অজিত সিংহকে জেরা করতে পারে তারা। চিদম্বরমকে জেরা করা হতে পারে বলেও অসমর্থিত সূত্রে খবর। এই সবের জেরে এয়ার এশিয়ার শেয়ারের দাম বুধবার এক ধাক্কায় ১০% কমেছে। মালয়েশিয়ার শেষ নির্বাচনের সময়ে ১৩০টি দেশীয় উড়ান বাতিলের জন্য টনির বিরুদ্ধে মালয়েশীয় পুলিশ যে তদন্ত চালাচ্ছে, তা-ও নতুন করে মাথাচাড়া দিয়েছে।

২০১৪ সালে এয়ার এশিয়া ইন্ডিয়া ভারতের আকাশে ডানা মেলতে চাইছিল, তখন নিয়ম ছিল এখানে অন্তত পাঁচ বছর উড়ান চালালে এবং ২০টি বিমান হাতে থাকলে, তবেই আন্তর্জাতিক উড়ান চালুর অনুমতি দেওয়া হবে। টনির বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি এই নিয়ম বদলে মরিয়া ছিলেন। পরে ২০১৬ সালে সেই নিয়ম পরিবর্তনও করে এনডিএ সরকার। বলা হয়, পাঁচ বছর উড়ান চালানোর বাধ্যবাধকতা থাকছে না। ২০টি বিমান থাকলেই হবে। এই মুহূর্তে এয়ার এশিয়া ইন্ডিয়ার হাতে ১৮টি বিমান রয়েছে। বিমান পরিবহণে ভারতে বিদেশি লগ্নির ঊর্ধ্বসীমা ৪৯%। পরিচালনার নিয়ন্ত্রণ থাকার কথা ভারতীয় সংস্থার হাতে। কিন্তু সিবিআইয়ের অভিযোগ, এয়ার এশিয়া ইন্ডিয়া পরিচালনার নিয়ন্ত্রণ কার্যত টনির হাতেই ছিল।

Advertisement

এই কেলেঙ্কারিতে নাম জড়িয়েছে টাটা গোষ্ঠীর আর বেঙ্কটরমন এবং দীপক তলোয়ার নামে লবিস্টের। সিবিআইয়ের অভিযোগ, ২০১৪ সালেই নাকি মন্ত্রিসভায় নিয়ম শিথিল করার জন্য গোপনে ‘নোট’ গিয়েছিল। কিন্তু, সেই সময়ে লোকসভা নির্বাচন থাকায় তা নাকি সম্ভব হয়নি।

বিজেপির সুব্রহ্মণ্যম স্বামী আদালতে মামলা ঠুকে ওই গাঁটছড়া বাতিলের দাবি জানান। চিদম্বরমের পাশাপাশি তিনি অভিযোগ করেন টাটা গোষ্ঠীর প্রাক্তন কর্ণধার রতন টাটার বিরুদ্ধেও। পরে ২০১৬ সালে সাইরাস মিস্ত্রিও রতন টাটার বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন, এয়ার এশিয়া ইন্ডিয়া চালুর সময়ে বেআইনি লেনদেনের। বেঙ্কটরমন অবশ্য দাবি করেছেন, তিনি কিছু জানতেন না। তাঁর নাম ভুল করে জড়ানো হয়েছে। তাঁর আরও অভিযোগ, টাটার প্রাক্তন কর্তা সাইরাস মিস্ত্রি এবং সাপুরজি-পালনজি গোষ্ঠী বদলা নিতেই বিভিন্ন ভাবে তাঁর ও টাটা ট্রাস্টসের অন্য ট্রাস্টিদের নাম জড়ানোর চেষ্টা করছে। কোনও নিয়ম ভাঙেনি বলে বিবৃতিতে দাবি করেছে এয়ার এশিয়াও।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement