—প্রতীকী চিত্র।
চাকরি থেকে অবসরের পরে অনেকেই চিন্তা করেন বাকি জীবন কী ভাবে কাটবেন? জীবনের অবসর অধ্যায়ের সময়টা অর্থনৈতিক ভাবে কী ভাবে আরও দৃঢ় করা যায় সেই চিন্তাই করেন অধিকাংশ মানুষ। সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে পেনশন পাওয়া যায় ঠিকই। কিন্তু তাতেও চিন্তা থেকেই যায় সরকারি কর্মীদের। অবসরের পরে তাঁদের আর্থিক নিশ্চয়তা দিতে করা হয়েছে ন্যাশনাল পেনশন সিস্টেম (এনপিএস)। ভারত সরকার এই প্রকল্পকে নতুন করে হাজির করেছে। একটু পরিকল্পনা করে ন্যাশনাল পেনশন সিস্টেমে টাকা জমালেই পরবর্তীকালে ফেরত পাওয়া যায় বেশ মোটা অঙ্কের টাকা। তাই বর্তমানে চাকরিজীবীদের কাছে আদর্শ বিনিয়োগ বিকল্প হল এনপিএস। ২০০৪ সালে চালু হয় নিউ পেনশন স্কিম। তার পর থেকে এই প্রকল্প ধীরে ধীরে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এনপিএসের মূল লক্ষ্য, যাঁরা সরকারি চাকরি করেন অবসরের পরে তাঁদের আর্থিক নিশ্চয়তা দেওয়া। কেন্দ্রীয় সরকার মূলত সরকারি কর্মীদের জন্য এই প্রকল্প করে থাকলেও পরবর্তীকালে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের জন্যও উন্মুক্ত করা হয়। যে কোনও ভারতীয় নাগরিক ১৮ বছর বয়স হলেই এই প্রকল্পে বিনিয়োগ করতে পারবেন। প্রাথমিক ভাবে এবং ন্যূনতম ৫০০ টাকা জমা করেই টিয়ার১ বা টিয়ার২ অ্যাকাউন্টে নাম নথিভুক্ত করতে পারেন। ৬০ বছর বয়স পর্যন্ত টাকা জমা দেওয়া যায়। তার পরে যে টাকা জমা পড়েছে সেই হিসাবে পেনশন পাওয়া যায়। এই প্রকল্পের প্রধান উদ্দেশ্য হল অবসর গ্রহণ করার আগে সঞ্চয় করা। এই টাকা সরকারের ঘরে সঞ্চয় হওয়ার কারণে একেবারে সুরক্ষিত থাকে।
অবসরের পর এই এনপিএস থেকে প্রতি মাসে পাওয়া যেতে পারে ৫০ হাজার টাকা। কী ভাবে?
এনপিএসে অ্যানুইটি প্ল্যান কেনা বাধ্যতামূলক। এখানে জমা হওয়া অর্থের ৪০ শতাংশ বিনিয়োগ করতে হয়। প্রায় ১ কোটি টাকার অ্যানুইটি প্ল্যান কেনা যায়। এখন ১ কোটি টাকার অ্যানুইটি প্ল্যানে বার্ষিক ৬ শতাংশ সুদের হার ধরে নিলে, এনপিএস থেকে বার্ষিক ৫০ হাজার টাকা মাসিক পেনশন পাওয়া যেতে পারে। মূল অর্থ হল, এনপিএসে যত তাড়াতাড়ি বিনিয়োগ শুরু হবে, জমা অর্থ বৃদ্ধির তত বেশি সময় পাবে। এখানেই শেষ নয়। নিয়মিত বিনিয়োগে কমপাউন্ডিংয়ের সুবিধা পাওয়া যায় এনপিএসে। যার অর্থ, বিনিয়োগকারী বিনিয়োগ থেকে যে সুদ পান তা ফের বিনিয়োগ করা হয়। ফলে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আরও বেশি সুদ আসতে থাকে। তবে মাথায় রাখতে হবে, এনপিএস থেকে প্রতি মাসে ৫০ হাজার টাকা পেতে হলে দীর্ঘমেয়াদে মোটা অঙ্কের টাকা বিনিয়োগ করে যেতে হবে।
যাঁরা এনপিএসে বিনিয়োগ করবেন বলে ভাবছেন, তাঁদের জেনে রাখা ভাল, এনপিএসে প্রতি মাসে ৫০ হাজার টাকা পেনশনের জন্য ৩০ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ৪০ থেকে ৫০ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করতে হবে। এখানে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল ফান্ডকে ইক্যুইটি, ডেট এবং সরকারি সিকিউরিটিজের মধ্যে ভাগ করা। ঝুঁকি থাকলেও ইক্যুইটি থেকে সবচেয়ে বেশি রিটার্ন পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এনপিসিতে। ডেট ফান্ডে ঝুঁকি কম, ফলে রিটার্নও কম আসে। অন্য দিকে, সরকারি সিকিউরিটিজে কম ঝুঁকিতে মাঝারি রিটার্ন পাওয়া যায়।