প্রতীকী ছবি।
কলকাতায় ডিজেলের দামের রেকর্ড দৌড় শুরু হয়েছিল আগেই। আজ, মঙ্গলবার আইওসি-র পাম্পে ফের ৩০ পয়সা বেড়ে তা লিটার পিছু ৮৫.২০ টাকা ছুঁয়ে নতুন নজির গড়ল। সেই সঙ্গে আমজনতার উদ্বেগ আরও বাড়িয়ে কলকাতায় এই প্রথম পেট্রল পৌঁছে গেল ৯২ টাকার কাছাকাছি। আজ শহরে এক লিটার পেট্রল বিক্রি হচ্ছে ৯১.৯২ টাকায়। এর আগে ২০ ফেব্রুয়ারি তার দর ছিল সর্বোচ্চ, ৯১.৭৮ টাকা।
পশ্চিমবঙ্গ-সহ পাঁচ রাজ্যে ভোট পর্ব মিটতে না-মিটতেই গত মঙ্গলবার ফের বাড়তে শুরু করেছিল তেলের দাম। মাঝে শনি, রবি বাদে নাগাড়ে চড়েছে দর। ফলে রাজস্থান (শ্রী গঙ্গানগর), মধ্যপ্রদেশের (অনুপ্পুর) পরে সোমবার মহারাষ্ট্রেও ‘সেঞ্চুরি’ হাঁকিয়েছে পেট্রল। সে রাজ্যের পারভানিতে লিটার পিছু তা ছুঁয়েছে ১০০.২০ টাকা। বাণিজ্য নগরী মুম্বইয়ে তা ৯৭.৮৬ টাকা। আর মধ্যপ্রদেশের ভোপালে ১০০ ছুঁইছুঁই (৯৯.৫৫ টাকা)।
ভোট পর্বে ২৪ মার্চ থেকে ১৫ এপ্রিলের মধ্যে চার দিনে কলকাতায় জ্বালানি দু’টির দাম কমেছিল যথাক্রমে ৭৩ ও ৭৪ পয়সা। সংশ্লিষ্ট মহলের অভিযোগ, ভোটের মুখে তেলের দাম কমে যাওয়া আর তা মেটার পরে বৃদ্ধির অভিজ্ঞতা আগেও হয়েছে। সেই কারণেই মার্চ-এপ্রিলের ওইটুকু দাম ছাঁটাই অস্বস্তি বাড়িয়েছিল।
দৈনিক চার লক্ষ পেরিয়ে যাওয়া করোনা সংক্রমণ আর চার হাজার ছাপানো মৃত্যু নিয়ে যখন গোটা দেশ কাঁপছে, তখন তেলের দামের এমন নজিরবিহীন দৌড়ে ফের সন্ত্রস্ত আমজনতা। যাতায়াত, বাজারহাটের খরচ এ বার আরও কতটা মাথা তুলে আমজনতাকে বিপর্যস্ত করবে, সেই প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে দেশ জুড়ে। বিশেষ করে রাজ্যে রাজ্যে লকডাউন, দেশ জুড়ে লকডাউনের আশঙ্কা, উৎপাদন-পরিষেবায় ধাক্কা যখন ফের রুটি-রুজির অনিশ্চয়তা বাড়িয়েছে।
সরকারি মহলের অবশ্য দাবি, বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেল তো চড়া বটেই। বহু রাজ্যে চড়া ভ্যাটও তেলের দাম এত বৃদ্ধির কারণ। তবে বিরোধীদের প্রশ্ন, অশোধিত তেল ব্যারেলে ৬৮ ডলার ছাড়াতেই পেট্রল ১০০ টাকা পার করল। ইউপিএ জমানার মতো ১০০ ডলার পেরোলে কত হত? সংশ্লিষ্ট মহলের তোপ, তেল থেকে রোজগার করা বিপুল উৎপাদন শুল্কের (প্রতি লিটার পেট্রলে ৩২.৯০ টাকা এবং ডিজেলে ৩১.৮০ টাকা) টাকা দিয়েই অতিমারির আবহে বাড়তি খরচ সামাল দিচ্ছে। এর আগে তেলমন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান এই ইঙ্গিত দিয়েওছেন। অথচ ভুগছেন সাধারণ মানুষ। সেই শুল্ক ছেঁটে তাঁদের সুরাহা দেওয়ার দাবি নিয়ে উদাসীন সরকার। জিনিসপত্র এবং খাদ্যপণ্যে দাম আগুন হওয়ার আশঙ্কা থাকলেও।