এ বার গঙ্গাসাগরের গঙ্গাজল বিক্রি শুরু করল ডাক বিভাগের পশ্চিমবঙ্গ সার্কল। —ফাইল চিত্র।
ডাকঘরের আর্থিক পরিষেবায় নানা ধরনের হয়রানির অভিযোগ তোলেন গ্রাহকদের একাংশ। কারও দাবি, অনেক সময়েই ইন্টারনেটের লিঙ্ক থাকে না কিংবা পাওয়া যায় না টাকা। কখনও কখনও একই কাজের জন্য একাধিকবার দৌড়তে হওয়ায় বাড়তি সময় খরচ হয়। সমস্যা কর্তৃপক্ষের নজরে আনলেও সব সময় তার সমাধান হয় না। এই পরিস্থিতিতে তাদের মূল পরিষেবার (চিঠি বা পার্সেল বণ্টন, স্বল্প সঞ্চয় প্রকল্প ইত্যাদি) পাশাপাশি কিছু ডাকঘর থেকে এ বার গঙ্গাসাগরের গঙ্গাজল বিক্রি শুরু করল ডাক বিভাগের পশ্চিমবঙ্গ সার্কল (পশ্চিমবঙ্গ, সিকিম ও আন্দামান-নিকোবর মিলে)। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, আগে প্রধান পরিষেবাগুলিতে নজর দিয়ে গ্রাহকের হয়রানি কমানোর ব্যবস্থা করা উচিত ছিল। তবে সার্কল কর্তৃপক্ষের দাবি, বিক্ষিপ্ত সমস্যার ঘটনা ঘটলেও, সার্বিক ভাবে ডাকঘরের পরিষেবার মান ভাল। তাতে উন্নতির পাশাপাশি সব ধরনের পণ্যের (চিঠি বা পার্সেল ছাড়াও) বণ্টন বা জোগানের ব্যবসায় জোর দেওয়াও ডাক বিভাগের অন্যতম লক্ষ্য।
সোমবার জিপিও থেকে গঙ্গাজল বিক্রির আনুষ্ঠানিক সূচনা করেন ওই সার্কলের পিএমজি (মেল অ্যান্ড বিজ়নেস ডেভেলপমেন্ট) অনিল কুমার এবং পিএমজি (কলকাতা) সঞ্জীব রঞ্জন। অনিল জানান, আপাতত সার্কলের ৪৮টি প্রধান ডাকঘর থেকে তা বিক্রি হবে। পরে ধাপে ধাপে ১১০০টি ছোট ডাকঘরেও মিলবে। চাইলে অনলাইনে কেনা যাবে। অনিল বলেন, ‘‘শুধু চিঠি বা পার্সেল বিলিই যোগাযোগের মাধ্যম নয়। আমজনতার যে কোনও প্রয়োজন মেটাতে চেষ্টা করা উচিত যোগাযোগ ব্যবস্থার দায়িত্ব থাকা ডাক বিভাগের।’’ তাঁর দাবি, এর আগে গঙ্গোত্রী, হরিদ্বার ও ঋষিকেশের মোট চার লক্ষেরও বেশি গঙ্গাজলের বোতল বিক্রি করে সার্কল গত অর্থবর্ষে প্রায় ১৭ লক্ষ টাকা আয় করেছে।
অনিল জানিয়েছেন, গত অর্থবর্ষে ডাকঘরের সব রকম পরিষেবা দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ সার্কল প্রায় ৩০০ কোটি টাকা আয় (২০২১-২২ সালে ছিল ১৫৫ কোটি) করেছিলেন। এর মধ্যে আধার ও পাসপোর্ট তৈরি, গঙ্গাজল ও জৈব পণ্য ইত্যাদি বিক্রির মতো ব্যবসা থেকে আয় ছিল ৩১ কোটি টাকা। কলকাতার ১০টি স্থানে ৮০টি বৈদ্যুতিক স্কুটার ভাড়ায় চালানোর পরিষেবাও সম্প্রতি চালু করেছে সার্কল। খড়্গপুর, বর্ধমান, আসানসোল, দুর্গাপুর ও শিলিগুড়িতেও সেই পরিকল্পনা রয়েছে। কলকাতায় চার্জিং স্টেশন হয়েছে কয়েকটি জায়গায়। সৌর বিদ্যুৎ পণ্যও বিক্রি হবে।
পরিষেবার মানের প্রশ্নে তাঁর দাবি, ক্যাগ এবং কেপিএমজি সব ধরনের ক্যুরিয়র পরিষেবার ক্ষেত্রে জানিয়েছে, ডাক বিভাগ ৯৭% ক্ষেত্রে ঠিক সময়ে তা পৌঁছে দেয় গ্রাহককে। দ্বিতীয় স্থানাধিকারীর ক্ষেত্রে তা ৭২%। পশ্চিমবঙ্গ সার্কলে দৈনিক ২৫-৩০ লক্ষ লেনদেন হয়। লিঙ্কের সমস্যার কথা মানলেও অনিলের দাবি, সবটা তাঁদের হাতে নেই। তবুও ৪জি পরিষেবা চালু হয়েছে। পাশাপাশি অল্প কিছু জায়গায় কর্মীদের একাংশের কর্মসংস্কৃতির অভাবে সমস্যা হয়। সে জন্য কর্মীদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন তাঁরা।