ফাইল চিত্র।
একটু জিরিয়ে নেওয়া। তার পরেই ফের ছুট। দেশে এ ভাবেই ক্রমাগত বেড়ে চলেছে তেলের দর। যার ব্যতিক্রম দেখা গেল না চলতি সপ্তাহেও। উৎসবের আবহের মধ্যে সোম ও মঙ্গলবার থেমে থাকার পরে মানুষকে উদ্বেগে ফেলে বুধবার কলকাতায় ডিজ়েলের দাম পেরিয়েছিল ৯৮ টাকা। আর আজ, বৃহস্পতিবার শহরে ১০৭ টাকা ছাড়িয়ে গেল পেট্রলও। ৩৪ পয়সা বেড়ে তা বিকোচ্ছে ১০৭.১১ টাকায়। ডিজ়েল আরও ৩৫ পয়সা বেড়ে লিটারে ৯৮.৩৮ টাকায়।
তবে ডিজ়েলের দর ১০০ টাকা ছোঁয়ার দৌড়ে কলকাতার থেকে এগিয়ে রাজ্যের জেলা শহর। উত্তরবঙ্গের আলিপুরদুয়ারে আজ লিটারে জ্বালানিটির দাম হয়েছে ৯৯.৪৭ টাকা। ফলে রাজ্যে তার সেঞ্চুরি করা আর মাত্র ক’দিনের অপেক্ষা বলেই মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল। এই অবস্থায় সরকার শুল্ক না-কমালে দাম যে কোথায় গিয়ে থামবে, তা নিয়েই চিন্তায় সকলে।
আমজনতা বলছে, করোনার ধাক্কা সামলে উৎসবের মরসুমে কিছুটা স্বস্তি ফেরার স্বপ্ন দেখছিল গোটা দেশ। কিন্তু জ্বালানির ছেঁকায় তার ফানুস ফেটে যাওয়ার উপক্রম। অথচ রেকর্ড শুল্ক ছেঁটে সুরাহা দিতে এখনও নারাজ মোদী সরকার। তারা এর দায় চাপাচ্ছে চড়া অশোধিত তেল ও রাজ্যগুলির যুক্তমূল্য করের উপরে। সরকারি সূত্রের খবর, কেন্দ্র তেল ও রান্নার গ্যাসের দরের আঁচ নিয়ে দ্বিধায় থাকলেও, আয়ে টান পড়ার আশঙ্কায় শুল্ক কমিয়ে বা বিকল্প কোনও রফাসূত্র এখনও বের করতে পারেনি। তবে অতীত অভিজ্ঞতার প্রেক্ষিতে ভোটের আগে অবশ্য বিজেপি-র পক্ষে থেকে সেই তাস খেলার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছে না সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশ।
যদিও কেন্দ্রের তরফে এখনও সে রকম বার্তা আসেনি। উল্টে বারবার তেল রফতানিকারী দেশগুলিকেই উৎপাদন বাড়ানো এবং তেলের দাম কমানোর বার্তা দিচ্ছে তারা। বুধবার বহুজাতিক তেল ও গ্যাস সংস্থার সিইও এবং এই ক্ষেত্রের বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বৈঠকেও সেই প্রস্তাব করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তেলমন্ত্রী হরদীপ সিংহ পুরীও দাবি করেছেন, চাহিদা ও জোগানের অভাব রয়েছে। ফলে উৎপাদন বাড়ানো জরুরি। কারণ, বিশ্ব অর্থনীতির পুনরুজ্জীবন ধাক্কা খাচ্ছে অশোধিত তেলের চড়া দরের জন্য। কিন্তু তেল রফতানিকারী দেশগুলির সংগঠন ওপেকের তরফে সেই আশ্বাস মেলেনি। তাদের বক্তব্য, তেলের জোগান নিয়ে তাদের পদক্ষেপই বাকিদের অনুসরণ করা উচিত। ফলে জনগণের সুরাহার রাস্তা এখনও চোখে পড়ছে না।