প্রতীকী ছবি।
অর্থ জোগাড়ের জন্য পেটিএমের মূল সংস্থা ওয়ান৯৭ কমিউনিকেশন্স প্রথম বার বাজারে শেয়ার ছেড়েছিল (আইপিও) এক একটি প্রায় ২১৫০ টাকা দামে। ভারতের বৃহত্তম আইপিও এটি, প্রায় ১৮,৩০০ কোটি টাকার। সংস্থার ওই শেয়ার কিনতে প্রয়োজনের তুলনায় ১.৮৯ গুণ আবেদন জমা পড়ে। কিন্তু বৃহস্পতিবার বাজারে সেই শেয়ারই নিয়মিত লেনদেনের জন্য নথিবদ্ধ হতেই দাম নামল। দিনের শেষে ২৭ শতাংশের বেশি কমে বিএসই-তে তা দাঁড়াল প্রায় ১৫৬৪ টাকায়।
সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, এমনিতে শেয়ার দরে ওঠানামা স্বাভাবিক ঘটনা। আইপিও-তে চড়া দামে বিক্রির পরে বাজারে লেনদেনের সময় শেয়ার দর কমেছে, সেটাও অস্বাভাবিক নয়। অনেক সময় পরে আবার তা ওঠেও। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের দাবি, পেটিএমের আর্থিক পরিস্থিতি, চড়া মূল্যায়ন, আইপিও-তে শেয়ার দর, লগ্নিকারীদের মাতামাতি এবং শেষে এমন পতন সামঞ্জস্যহীন। বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, যেখানে পেটিএম বাজার নিয়ন্ত্রক সেবিকে জানিয়েছিল তিন বছর তারা মুনাফা দেখেনি এবং অদূর ভবিষ্যতেও দেখার সম্ভাবনা নেই, সেখানে তাদের ১ লক্ষ কোটি টাকার বেশি মূল্যায়ন হয় কী করে? এত বেশি দামে আইপিও হল কেন এবং লগ্নিকারীরাই বা তা নিয়ে মাতামাতি করলেন কেন সেটাও প্রশ্ন।
বিশেষজ্ঞ আশিস নন্দীর মতে, ‘‘আগে নিয়ম ছিল আইপিও-র আগের তিন বছর মুনাফা না-করলে শেয়ার ছাড়া যাবে না। কিন্তু সম্প্রতি সেবি ওই নিয়ম তুলে নিয়েছে। কড়াকড়িটা থাকলেই ভাল হত, অন্তত
লগ্নিকারীর স্বার্থে।’’
মূলধনী বাজার নিয়ে গবেষণাকারী ভ্যালু রিসার্চের এমডি ধীরেন্দ্র কুমার বলেন, শেয়ার ছাড়ার আগে সেবির কাছে জমা দেওয়া ঝুঁকি-সহ বিভিন্ন তথ্যে স্পষ্ট লেখা ছিল সংস্থাটি তিন বছর ধরে লোকসান করেছে। কবে লাভ হবে সেটাও বলা যাবে না জানিয়েছে। অথচ প্রতিটি শেয়ার আইপিও-তে ২১৫০ টাকায় বিক্রি হল। লগ্নিকারীদের সচেতন হওয়া উচিত তাঁরা কোন শেয়ার কেন কিনছেন।
বিএসই-তে পেটিএমের শেয়ার লেনদেন শুরুর সময় চোখের জল মুছতে দেখা গিয়েছিল সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা বিজয় শেখর শর্মাকে। পরে শেয়ার দরে এই পতনের প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, এক দিনের লোকসান দেখে গোটা ছবিটা বোঝা যায় না।
এ দিন সেনসেক্সও পড়েছে ৩৭২.৬৮ পয়েন্ট। থেমেছে ৫৯,৬৩৬-এ। তিন দিনে হারিয়েছে ১০৫৪.৬৮।