উর্জিত পটেল
ঠিক যেমনটা মনে করা হয়েছিল, তেমনটাই। এ বারও ঋণনীতিতে সুদ অপরিবর্তিত রাখল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। মূলত মূল্যবৃদ্ধির ঝুঁকির কথা ভেবে।
বৃহস্পতিবার গভর্নর উর্জিত পটেলের নেতৃত্বাধীন ঋণনীতি কমিটির এই সিদ্ধান্তের জেরে আপাতত রাস্তা প্রশস্ত হল না ঋণে সুদ কমার। কেন্দ্রীয় অর্থনীতি বিষয়ক দফতরের সচিব সুভাষ চন্দ্র গর্গ অবশ্য ঋণনীতিকে স্বাগত জানান। অগস্ট থেকেই সুদ এক জায়গায় বেঁধে রেখেছে শীর্ষ ব্যাঙ্ক।
বিশ্ব বাজারে বাড়তে থাকা অশোধিত তেলের দর, রাজকোষের উপর বাড়তি খরচের চাপ এবং খাদ্যশস্যের চড়া দামের জেরে আগামী দিনে মূল্যবৃদ্ধি মাথাচাড়া দেওয়ার আশঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছে না রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। মনে করছে তা থাকবে লক্ষ্যমাত্রার (৪%) উপরেই। আর সেই কারণেই নতুন অর্থবর্ষের প্রথম ঋণনীতিতে সুদের হারে স্থিতাবস্থা বজায় রাখার সিদ্ধান্ত। একই রাখা রেপো রেট (যে হারে বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলি আরবিআইয়ের থেকে স্বল্প মেয়াদে ধার নেয়) ও রিভার্স রেপো রেট (যে হারে আরবিআই বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কের থেকে ধার নেয়)। তবে আরবিআই জানিয়েছে, ব্যাঙ্কগুলি তাদের সম্পদ ও দায়ের হিসেব কষে জমা ও ঋণে সুদের হার বদলাতে পারবে।
ভরসা ফিরল জিডিপিতে
বৃদ্ধির হিসেব-নিকেশের জন্য মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদনকেই (জিডিপি) ফের মাপকাঠি ধরতে চায় আরবিআই। শীর্ষ ব্যাঙ্কের ডেপুটি গভর্নর বিরল আচার্য এ দিন জানান, গ্রস ভ্যালু অ্যাডেড বা জিভিএ পদ্ধতির বদলে তাঁরা পুরনো মতেই ফিরছেন। কারণ, তা আন্তর্জাতিক পদ্ধতির সঙ্গে মানানসই। উল্লেখ্য, জিভিএ পদ্ধতিতে বৃদ্ধির হিসেব দেওয়া হয় সরবরাহের দৃষ্টিকোণ থেকে। পণ্য ও পরিষেবার মোট যুক্তমূল্য বা গ্রস ভ্যালু অ্যাডেড অনুসারে। উৎপাদনের মোট মূল্য থেকে বাদ দেওয়া হয় কাঁচামাল, যন্ত্রাংশ ইত্যাদির খরচ। আর জিডিপি মাপা হয় ক্রেতার চাহিদার ভিত্তিতে।
মূল্যবৃদ্ধির ঝুঁকি
চলতি অর্থবর্ষের প্রথম ছ’মাসের জন্য আরবিআই মূল্যবৃদ্ধির লক্ষ্য কমিয়ে ধরেছে ৪.৭-৫.১%। দ্বিতীয় ভাগে ৪.৪%। স্বাভাবিক বর্ষার হাত ধরে খাদ্য সামগ্রীর দাম কমার আশাতেই তা নামানো হয়েছে। কিন্তু লক্ষ্য তা ৪ শতাংশে বেঁধে রাখা। তা ছাড়া, কমিটির আশঙ্কা চাষিদের বাড়তি সহায়ক মূল্য দেওয়া হলে তা টেনে তুলতে পারে মূল্যবৃদ্ধিকে। অশোধিত তেলের দাম ব্যারেলে ৭০ ডলার ছোঁয়াও মূল্যবৃদ্ধির আশঙ্কা বাড়াচ্ছে।
নিজস্ব ডিজিটাল মুদ্রা
বিটকয়েনের মতো ডিজিটাল মুদ্রা ব্যবহারে রাশ টানার উপর জোর দিয়েছে আরবিআই। খতিয়ে দেখছে নিজস্ব ডিজিটাল মুদ্রা চালুর বিষয়টিও। এই ‘সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ক ডিজিটাল কারেন্সি’ চালু করা নিয়ে তারা রিপোর্ট জমা দেবে জুনের মধ্যে।