প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম। ফাইল চিত্র।
ডলারের নিরিখে ভারতীয় মুদ্রার দাম পড়ে চলেছে। সেই সঙ্গে টানা ন’মাস খুচরো বাজারের মূল্যবৃদ্ধির হার রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক নির্ধারিত সহনসীমার (৬%) উপরে। এই অবস্থায় টাকার দাম এবং দেশের আর্থিক পরিস্থিতি নিয়ে মোদী সরকারকে তীব্র আক্রমণ করল কংগ্রেস। তাদের অভিযোগ, অর্থনীতির দিকে নজর দেওয়ার বদলে বিজেপি সর্বক্ষণ রয়েছে ভোটের মেজাজে। প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরমের পরামর্শ, টাকার পতন ঠেকাতে প্রধানমন্ত্রী অবিলম্বে বিশেষজ্ঞদের সাহায্য নিন।
বুধবার আমেরিকার মুদ্রার নিরিখে টাকা রেকর্ড তলানিতে নামে। ১ ডলার ৮৩ টাকা ছোঁয়। বৃহস্পতিবার সকালের লেনদেনে আরও বেড়ে তা ৮৩.২৯ টাকা হয়। তবে শেষ বাজারে কিছুটা শক্তি ফিরে পায় ভারতীয় মুদ্রা। দিনের শেষে ডলার দাঁড়ায় ৮২.৭৯ টাকা। ২০২২ সালে টাকার দাম প্রায় ১০% কমেছে। সম্প্রতি আমেরিকা সফরে গিয়ে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন মন্তব্য করেছিলেন, আসলে টাকা দুর্বল হচ্ছে না। ডলার শক্তিশালী হচ্ছে। যা নিয়ে দেশে যথেষ্ট জলঘোলা হয়েছে। এ দিন একগুচ্ছ টুইটে চিদম্বরমের বক্তব্য, ‘‘টাকার অবিরাম পতনের সামনে সরকারকে অসহায় দেখাচ্ছে। পড়তে থাকা টাকা মূল্যবৃদ্ধি, চলতি খাতে ঘাটতি এবং সুদের হারের উপরে বিরূপ প্রভাব ফেলবে। এখন কেন্দ্রের উচিত পণ্ডিত এবং অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের সাহায্য নেওয়া। আমার পরামর্শ, পরবর্তী পদক্ষেপ করার ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী এখনই সি রঙ্গরাজন, ওয়াই ভি রেড্ডি, রাকেশ মোহন, রঘুরাম রাজন, মন্টেক সিংহ আহলুওয়ালিয়াকে নিয়ে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বসুন।’’
এ দিন কংগ্রেস সভাপতি নির্বাচনে জয়ী মল্লিকার্জুন খড়্গে হিন্দিতে টুইট করেছেন, ‘‘অর্থমন্ত্রী বলেছেন, টাকা দুর্বল হয়নি। ডলার শক্তিশালী হয়েছে। শুধু বিবৃতি দিয়ে কাজ হবে না। কেন্দ্রীয় সরকারকে দ্রুত সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ করতে হবে।’’ কংগ্রেস মুখপাত্র অংশুল অভিজিৎ মনে করিয়ে দেন, ২০১৪ সালে মোদী সরকার যখন ক্ষমতায় এসেছিল তখন ডলারের দাম ছিল ৫৮.৪০ টাকা। এখন তা ৮৩ টাকা ছুঁয়েছে। ২০১৩ সালে নরেন্দ্র মোদী যখন গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন, তখন পড়তে থাকা টাকা নিয়েই তৎকালীন ইউপিএ সরকারের উদ্দেশে আক্রমণ শানিয়েছিলেন। বলেছিলেন, দেশের নিরাপত্তা এবং টাকার দাম কোনও কিছু নিয়েই দিল্লির হেলদোল নেই। অথচ এখন চিন ভারতীয় ভূখণ্ডে ঢুকে পড়ছে। টাকা রেকর্ড তলানিতে। অভিজিতের আরও অভিযোগ, নির্মলার মন্তব্য দায়িত্বজ্ঞানহীন। যে সমস্ত উন্নত দেশে মাথাপিছু আয় বেশি ও জনসংখ্যা কম, তাদের সঙ্গে মুদ্রার দামের তুলনা টানা যুক্তিপূর্ণ নয়।