প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম। ফাইল চিত্র
এক দিকে মোদী সরকারের মন্ত্রীরা তাঁদের জমানার ন’বছরের ‘সাফল্য’কে তুলে ধরে প্রচার চালাচ্ছেন। অন্য দিকে বিরোধীরা, বিশেষত কংগ্রেস কেন্দ্রের বিরুদ্ধে নিয়মিত আক্রমণ শানাচ্ছে কর্মসংস্থান, মূল্যবৃদ্ধি, আদানি কাণ্ডের মতো বিষয়গুলি তুলে ধরে। সোমবার দেশে চড়া মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে সরব হয়েছিলেন কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ। মঙ্গলবার আর এক নেতা এবং প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম পণ্যের বর্ধিত দামের জন্য দায়ী করলেন মোদী আমলে জ্বালানির চড়া দরকে। তাঁর অভিযোগ, মানুষকে দুর্ভোগের মধ্যে ঠেলে দিয়ে জ্বালানির উপরে চাপানো উঁচু কর থেকে মুনাফা লুটছে সরকার।
তেল ও রান্নার গ্যাসের মতো অপরিহার্য জ্বালানির চড়া দামে গত ক’বছর ধরেই জেরবার গোটা দেশ। কেন্দ্র এ জন্য এক সময় বার বার আঙুল তুলেছিল বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের ঊর্ধ্বমুখী দামের দিকে। এখন সেই যুক্তিতেই তাদের পাল্টা বিঁধে বিরোধীদের অভিযোগ, অশোধিত তেল যেমন উঠেছিল, তেমনই পড়েছে।করোনার সময়ে যখন সেই দর তলানি ছুঁয়েছিল, তার সুবিধা পৌঁছয়নি মানুষের কাছে। উল্টে বাড়ানো হয় পেট্রল-ডিজ়েলের শুল্ক। বর্তমানে ফের দাম পড়ছে। বহু দিন ধরেই তা ব্যারেল পিছু ৮০ ডলারের নীচে। মঙ্গলবার অশোধিত তেল ব্রেন্ট ক্রুড নেমে আসে ৭৪ ডলারে। আর ডব্লিউটিআই হয় প্রায় ৭০ ডলার। বিরোধীদের ক্ষোভ, অথচ এ বারও সাধারণ মানুষ দেশে তেলের আমদানি খরচ কমার সুবিধা পাচ্ছেন না। কংগ্রেসের বক্তব্য, অশোধিত তেলের দাম পড়লে কেন ভারতে সে ভাবে তার প্রতিফলন ঘটে না, সে প্রশ্নের স্পষ্ট জবাব মেলেনি মোদী সরকারের তরফে। অথচ চড়া শুল্কের হাত ধরে রাজকোষ ভর্তি হয়।
এ দিন চিদম্বরমের কটাক্ষ, ২০১০-১৪ সালের মধ্যে পেট্রলের দামের বিনিয়ন্ত্রণ ঘটলেও ২০১৪-র সেপ্টেম্বর থেকে সেই সংস্কার আসলে বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘২০১৪-২০২১ সালের মধ্যে অশোধিত তেল ব্যারেলে ৬০ ডলারেরও নীচে নেমেছিল। রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত শুরুর সময়ে তা সর্বোচ্চ হয়। তার পরে আবার তা ৭৫ ডলারে নেমেছে। তবুও সরকার সেই সুবিধা নাগরিকদের দেয়নি। অবশ্যই মানুষের (জীবনের) বিনিময়ে কেন্দ্র চড়া কর এবং সেসের মাধ্যমে মুনাফা করছে। এ রকম কৃত্রিম ভাবে পেট্রল-ডিজ়েলের দাম চড়া থাকার কারণেই মূল্যবৃদ্ধির হার চড়া।’’
তথ্য বলছে, গত বছরের ৮ জুন ব্রেন্টের দর ছিল ব্যারেলে প্রায় ১২৪ ডলার। গত ১৭ মার্চ ৭২.৪৭ ডলার। মঙ্গলবার রাতে ছিল ৭৪.১৫ ডলার।