কথায় বলে, বাঙালির পায়ের তলায় সর্ষে। বাক্স-প্যাঁটরা বেঁধে ‘পশ্চিমে’ ঘুরতে যাওয়ার উদাহরণেরও কমতি নেই। পর্যটকদের গতিবিধি যত বাড়ে, বিস্তৃত হয় পর্যটন ব্যবসা। সেই ব্যবসার টানে বিভিন্ন রাজ্য পাখির চোখ করছে পশ্চিমবঙ্গের পর্যটকদের। তাদের প্রতিনিধিদের বক্তব্য, প্রতি বছর তাঁদের রাজ্যে বাড়ছে বাঙালি পর্যটকের সংখ্যা। তাই নজর এ রাজ্যে।
নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে আনন্দবাজার পত্রিকার পর্যটন মেলা ‘ট্যুরিস্ট স্পট’-এর আজ, রবিবারই শেষ দিন। সেখানে আসা ভিন রাজ্যগুলির লক্ষ্য এ রাজ্যের ‘সম্ভাবনাময়’ বাজার। যেমন, কলকাতায় রাজস্থান পর্যটন দফতরের ডিরেক্টর ভানওয়ার লাল জানালেন, সেখানে ভিন রাজ্যের পর্যটকদের তালিকায় পশ্চিমবঙ্গ প্রথম পাঁচের মধ্যে রয়েছে। পর্যটনের প্রসার হলে বাড়বে কর্মসংস্থানও। তাই ব্যবসা বাড়াতে কলকাতায় বন্ধ হয়ে যাওয়া তাঁদের দফতরের কার্যালয়টি এ বছরেই ফের চালু করবেন তাঁরা।
গুজরাতে পশ্চিমবঙ্গের পর্যটকের সংখ্যা বছরে ৫% হারে বাড়ছে, দাবি সে রাজ্যের পর্যটন নিগমের ম্যানেজার (মার্কেটিং) কিংশুক বিশ্বাসের। তিনি জানান, ২০১৮-১৯ সালে সেখানে এ রাজ্যের পর্যটকের সংখ্যা ছিল প্রায় ৬ লক্ষ। তাঁর কথায়, ‘‘এই বাজারকে কী ভাবে উপেক্ষা করব?’’
তবে বাঁধা গতের বাইরেও পা ফেলার আগ্রহ বাড়ছে পর্যটকদের মধ্যে, বলছেন কেন্দ্রীয় পর্যটন মন্ত্রকের পূর্বাঞ্চলীয় অধিকর্তা সাগ্নিক চৌধুরী। তাঁর কথায়, ‘‘বাঙালিরাও এখন অনেক ছকভাঙা।’’
লক্ষদ্বীপের পর্যটন দফতরের ডিরেক্টর এস আস্কর আলি জানালেন, তিনটি দ্বীপে পর্যটনের প্রসারে যৌথ উদ্যোগে প্রায় ৮৫০ কোটি টাকা লগ্নি হবে। শীঘ্রই আরও কয়েকটি দ্বীপেও যাওয়ার সুযোগ পাবেন পর্যটকেরা। তাঁর আশা, ভবিষ্যতে সেখানেও আরও বাড়বে পশ্চিমবঙ্গের পর্যটকের সংখ্যা। বছর চারেক ধরে পশ্চিমবঙ্গ-সহ পূর্বাঞ্চলকে তাঁরা বাড়তি গুরুত্ব দিচ্ছেন বলে জানালেন গোয়ার পর্যটন দফতরের ডিরেক্টর সঞ্জীব গাদকার।
অসমের পর্যটন দফতরের ডেপুটি সেক্রেটারি কাবেরী বি শর্মার দাবি, তাঁদের রাজ্যে দেশীয় পর্যটকদের প্রায় ৬০ শতাংশই পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা। তাই ব্যবসার প্রসারে এই পড়শি রাজ্যের উপরে তাঁদের ভরসা যথেষ্ট।