প্রতীকী ছবি।
সংসদের বাদল অধিবেশন শুরু হতেই ফের রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক বিক্রি নিয়ে উদ্বেগ মাথা তুলল। ব্যাঙ্ক শিল্পের ইউনিয়নগুলির আশঙ্কা, মোদী সরকার সেই লক্ষ্য পূরণে আইন সংশোধনের বিল আনতে পারে এ বার। ফলে সোমবার অধিবেশনের প্রথম দিনেই ব্যাঙ্ক বেসরকারিকরণ নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে রাস্তায় নামার হুমকি দিল তারা। হুঁশিয়ারি, সব রকম ভাবে আন্দোলনের ধার বাড়ানো হবে। বিল আনলেই ডাকা হবে ধর্মঘট। আন্দোলনের কথা বলেছে কংগ্রেসও।
এমনিতে বাদল অধিবেশনে আলোচ্যসূচির প্রাথমিক তালিকায় ব্যাঙ্ক বেসরকারিকরণ নেই। প্রস্তাবে মন্ত্রিসভার সিলমোহরও পড়েনি এখনও। উপরন্তু কেন্দ্রের ইঙ্গিত, এ ব্যাপারে কোনও তাড়াহুড়ো নেই তাদের। কিন্তু সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, সরকারকে বিশ্বাস করা যাচ্ছে না। অধিবেশনে আচমকা বিলটি তুলে দেওয়া হতে পারে। পাশ করিয়ে নেওয়া হতে পারে ঠিক মতো আলোচনা ছাড়াই। যেমন বিমা সংস্থা বেসরকারিকরণের ক্ষেত্রে হয়েছিল।
বিরোধীদের অভিযোগ ছিল, গত অগস্টে পেগাসাস, কৃষি আইন-সহ নানা বিষয়ে বিরোধীদের তুমুল বিক্ষোভ-প্রতিবাদের মধ্যে আলোচনা ছাড়া লোকসভায় ধ্বনি ভোটে পাশ হয় সাধারণ বিমা ব্যবসা (জাতীয়করণ) আইনের সংশোধনী বিল। যেখানে রাষ্ট্রায়ত্ত বিমা সংস্থায় সরকারের হাতে বাধ্যতামূলক ভাবে অন্তত ৫১% অংশীদারি রাখার শর্ত তুলে নিয়ে বেসরকারিকরণের পথ তৈরি করা হয়। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক বেচতে দু’টি আইন সংশোধন জরুরি। ব্যাঙ্ক জাতীয়করণ আইন, ১৯৬৯ এবং ব্যাঙ্কিং সংস্থাগুলি অধিগ্রহণ এবং সম্পত্তি হস্তান্তর আইন, ১৯৭০ ও ১৯৮০। সংসদের গত অধিবেশনেই সংশোধনী বিল আনার কথা ছিল।
ব্যাঙ্ক শিল্পের সংগঠন এআইএনবিওএ-র সাধারণ সম্পাদক সঞ্জয় দাস বলেন, “বিক্ষোভ-আন্দোলনের আশঙ্কায় সম্ভবত সংসদের আলোচ্যসূচিতে ব্যাঙ্ক বেসরকারিকরণ রাখা হয়নি। কিন্তু সরকার বিলটি তুলতে পারে। তাই সমস্ত ইউনিয়নই বেসরকারিকরণের প্রতিবাদে সংসদ চলাকালীন আন্দোলনের বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। আমরা আজ কলকাতা-সহ দেশ জুড়ে বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করেছি।’’
কর্মী-অফিসারদের ন’টি সংগঠনের যৌথ মঞ্চ ইউএফবিইউ-র আহ্বায়ক গৌতম নিয়োগী জানান, “২১ জুলাই দিল্লিতে ধর্না হবে। বিলটি তোলা হলেই ব্যাঙ্ক ধর্মঘট-সহ বড় মাপের আন্দোলনে নামবেন কর্মীরা।’’ আইবকের রাজ্য সম্পাদক শুভজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, “রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক বিক্রি আমজনতার কী কী ক্ষতি করবে তার প্রচার করছি টুইটারে। জেলাতেও ঘুরব। সে জন্য আজ বাসযাত্রার কর্মসূচি চালু হচ্ছে।’’ এইআইবিইএ-র সভাপতি রাজেন নাগরের মতে, বিক্রির পাশাপাশি একটির সঙ্গে অন্যটি মেশানোর সিদ্ধান্তও হতে পারে। সংসদে আলোচনারও দরকার হবে না। বিজ্ঞপ্তি জারি করলেই হবে।