প্রতীকী চিত্র।
করোনার প্রথম ঢেউয়ের ধাক্কায় চল্লিশ বছরে এই প্রথম কমেছে দেশের জিডিপি। তার উপরে ফের লেগেছে অতিমারির দ্বিতীয় ধাক্কা। এই অবস্থায় অর্থনীতি সামাল দিতে ফের কেন্দ্রের কাছে টাকা ছাপিয়ে খরচ বাড়ানোর সওয়াল করল বণিকসভা থেকে বিরোধী শিবির। দাবি জানাল, গরিব মানুষকে দেওয়া হোক নগদ আর্থিক সাহায্য।
দু’দিন আগেই নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, গরিবকে সাহায্য ও প্রতিষেধক কেনার অর্থের বন্দোবস্ত করতে তিনি কিছু দিন টাকা ছাপানোর পক্ষে। মঙ্গলবার কংগ্রেস নেতা ও প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম বলেন, “গত বছরই বলেছিলাম, অর্থনীতির জন্য বড় দাওয়াই দরকার। চাই বাড়তি খরচ, গরিবদের সরাসরি আর্থিক সাহায্য এবং রেশন বিলির মতো ব্যবস্থা। কিন্তু সরকার কান দেয়নি। তার জেরেই গত অর্থবর্ষে জিডিপি ৭.৩% কমেছে। অর্থমন্ত্রী ও মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা অর্থনীতির দ্রুত ঘুরে দাঁড়ানোর মিথ্যে গল্প বলেছেন।” তাঁর তোপ, অভিজিৎ টাকা ছাপানোর কথা বলছেন। অথচ অর্থমন্ত্রী তাঁর ভুল নীতির পক্ষে সওয়াল করছেন। আজ জিডিপি কমা ও বেকারত্ব বৃদ্ধিকে প্রধানমন্ত্রীর ‘হল অফ শেম’ তকমা দিয়েছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধী।
অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে টাকা ছাপানোর পক্ষে সওয়াল করেছিলেন সিআইআই-এর সভাপতি উদয় কোটাকও। বলেছিলেন গরিবের হাতে নগদ দেওয়ার কথা। আজ একই দাবিতে ফিকি-র সভাপতি উদয় শঙ্করের বক্তব্য, বিক্রি বাড়াতে নগদ সাহায্য প্রয়োজন। নজর দিতে হবে শহরের গরিব মানুষ, ছোট-মাঝারি শিল্পের দিকে।
অর্থনীতিবিদদের মতে, অতিমারি পরবর্তী বৃদ্ধির জন্য বিক্রি ও লগ্নি পাকাপাকি ভাবে ঘুরে দাঁড়ানো দরকার বলে জানিয়েছে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের বার্ষিক রিপোর্ট। আর শিল্প বলছে, এ দফায় করোনা ছড়াচ্ছে গ্রাম ও ছোট শহরগুলিতে। অর্থনীতির বিভিন্ন সূচক ফের নিম্নমুখী। শঙ্করের বক্তব্য, গতবার সাধারণ পরিবারের ভরসা ছিল সঞ্চিত অর্থ। লকডাউনের পরে জমে থাকা চাহিদার ফলে বিক্রি বেড়েছিল। কিন্তু এ বার স্বাস্থ্য খাতে খরচের জন্য সঞ্চয় কমেছে। বহু পরিবারের আয়ের রাস্তা স্থায়ী ভাবে বন্ধ হয়েছে।
অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন অবশ্য ইঙ্গিত দিয়েছেন, সরকার এখনই নতুন দাওয়াইয়ের কথা ভাবছে না। বাজেটে ঘোষণার রূপায়ণই শুরু হয়নি। চিদম্বরমের প্রশ্ন, বাজেট তো ফেব্রুয়ারিতে পেশ হয়েছে। অর্থমন্ত্রী এত দিন কী করছিলেন!