—প্রতীকী চিত্র।
বাজারে খাদ্যপণ্যের দাম এখনও চড়া। গত বছর বৃষ্টি অনিয়মিত হওয়ায় আরও চড়ার আশঙ্কাও রয়েছে। অর্থনীতিবিদেরা বহু বার বলেছেন, তেল সস্তা হলে পরিবহণের খরচ কমায় দাম খানিকটা নামতে পারে। তবে তাতে লাভ হয়নি। বৃহস্পতিবার এ নিয়ে কেন্দ্রকে ফের দুষল বিরোধী শিবির। দাবি করল, বিশ্ব বাজারে ১৯ মাসে ৩১% কমেছে অশোধিত তেলের দর। অথচ ভারতে মোদী সরকার বেলাগাম লুঠপাট চালিয়ে যাচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, বিরোধীদের ইঙ্গিত পেট্রল-ডিজ়েলের উঁচু উৎপাদন শুল্কের দিকে। যা রাজকোষ ভরাচ্ছে মোদী সরকারের। অশোধিত তেলের ব্যারেল বহু দিন ধরে ৮০ ডলারের নীচে থাকায় রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থাগুলির লাভও বেড়েছে। সুরাহা পৌঁছোয়নি শুধু সাধারণ মানুষের ঘরে। দেড় বছরের বেশি বহু জায়গায় পেট্রলের লিটার ১০০ টাকার উপরে, ডিজ়েলও ৯০ টাকা পার। কলকাতায় আইওসি-র পাম্পে যথাক্রমে ১০৬.০৩ এবং ৯২.৭৬ টাকা। অথচ বুধবার তেলমন্ত্রী হরদীপ সিংহ পুরী বলেছেন, বিশ্ব বাজার অস্থিরতার মধ্য দিয়ে চলছে। তেলের দাম কমানোর আগে সেই বাজার স্থিতিশীল হওয়া জরুরি। লোকসভা ভোটের মুখে এই বিষয়টিই তাই বিরোধীদের অন্যতম অস্ত্র।
সম্প্রতি সরকারি সূত্র জানায় ভোটের মুখে লিটারে পেট্রল-ডিজ়েল কমতে পারে অন্তত ৪-৬ টাকা। এ নিয়ে বিভিন্ন মন্ত্রকের মধ্যে কথা চলছে। কেন্দ্র উৎপাদন শুল্ক কমাতে পারে। তেল সংস্থাগুলিকেও বার্তা দেওয়া হতে পারে দাম কমানোর। পুরীর অবশ্য দাবি, দাম কমানো নিয়ে সরকার কখনও সংস্থাগুলিকে নির্দেশ দেয় না। তাদের সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনাও হয়নি। বরং তাঁর বক্তব্য, এই অশান্ত সময়ে সরকারের প্রাথমিক দায়িত্ব জোগান ও দামের ক্ষেত্রে নিশ্চয়তা তৈরি করা।
কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে এবং দলের মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সূরযেওয়ালার প্রশ্ন, ১৯ মাসে অশোধিত তেলের দর ৩১% কমেছে। কিন্তু ভারতে পেট্রল-ডিজ়েলের দাম কমিয়ে আমজনতাকে রেহাই দিতে অস্বীকার করা হচ্ছে কেন? খড়্গের তোপ, তেল সংস্থাগুলি লিটার পিছু পেট্রলে ৮-১০ টাকা এবং ডিজ়েলে ৩-৪ টাকা লাভ করছে। লুঠ করে চলেছে মোদী সরকার। তবু মন্ত্রীরা বলছেন, দাম কমানো নিয়ে সংস্থাগুলির সঙ্গে আলোচনা হয়নি!
কংগ্রেসের দুই নেতারই দাবি, চড়া তেলের দর মূল্যবৃদ্ধির অন্যতম কারণ। মোদী সরকার সাফল্যের ঢাক পেটালেও, তা আসলে ফাঁকা আওয়াজ। খড়্গে বলেন, বিজেপির ‘অচ্ছে দিন’-এর মিথ্যে প্রতিশ্রুতি আর ফাঁপা বিজ্ঞাপনের মধ্যেই আমজনতার সঞ্চয় ৫০ বছরের তলানিতে ঠেকেছে। সূরযেওয়ালার বক্তব্য, বিজেপির ডেকে আনা নজিরবিহীন বেকারত্ব ও মূল্যবৃদ্ধি পরিবারের সঞ্চয়ে কোপ ফেলছে। অথচ ব্যাঙ্কে সুদ বাড়ায় পরিবারগুলির ধারের বোঝা বাড়ছে। আর্থিক সঙ্কটের দেশের অর্ধেক মানুষ বিমা বন্ধ করেছেন।