প্রতীকী ছবি
চাহিদার সঙ্গে উৎপাদনের সামঞ্জস্যের অভাবে আন্তর্জাতিক বাজারে সম্প্রতি অশোধিত তেলের দর হয়েছিল সাত বছরের সর্বোচ্চ। তার থেকে কিছুটা নামলেও এখনও সেই দড় যথেষ্ট চড়া। সেই দামে ভারসাম্য আনার জন্য সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন পশ্চিম এশিয়ার তেল উৎপাদনকারী দেশগুলির গোষ্ঠী ওপেক এবং তাদের সহযোগী দেশগুলিকে উৎপাদন বাড়ানোর জন্য চাপ দিচ্ছিল আমেরিকা। তা সত্ত্বেও বৃহস্পতিবারের বৈঠকে ওই দেশগুলি নিজেদের আগের অবস্থানে অনড় থাকার সিদ্ধান্ত নিল। জানিয়ে দিল, আপাতত ডিসেম্বর পর্যন্ত দিনে চার লক্ষ ব্যারেল করে উৎপাদন বাড়াবে তারা। ফলে বিশ্ব বাজারে এখনই তেলের দাম দ্রুত কমার সম্ভাবনা নেই বলেই মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।
করোনার শুরুতে যখন সারা বিশ্বের অর্থনীতি কার্যত থমকে গিয়েছিল, তখন তেলের চাহিদাও নেমে আসে তলানিতে। ফলে ধস নামে অশোধিত তেলের দামে। সেই দামকে ফের বাড়াতে উৎপাদন ছাঁটাইয়ের পথে হাঁটে সৌদি আরব, রাশিয়া-সহ তেল উৎপাদনকারী দেশগুলি। পরবর্তী দেড় বছরে অর্থনীতি অনেকটা ঘুরে দাঁড়িয়ে তেলের চাহিদা বাড়লেও তার সরবরাহ যথেষ্ট বাড়েনি। ফলে চাহিদার চাপে বাড়তে বাড়তে ব্যারেল প্রতি ব্রেন্ট ক্রুডের দাম পৌঁছে যায় ৮৫-৯০ ডলারের আশেপাশে। এ দিন সন্ধ্যায় তা ৮২ ডলার ছিল। পাশাপাশি, তেলের অভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন সংস্থাগুলি প্রাকৃতিক গ্যাসের দিকে ঝোঁকায় দাম বেড়েছে সেটিরও।
অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানোর পরে ওপেক ও তার সহযোগী দেশগুলি সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, এ বছরের শেষ পর্যন্ত দিনে অতিরিক্ত চার লক্ষ ব্যারেল করে অশোধিত তেল উৎপাদন করা হবে। কিন্তু সেই সিদ্ধান্ত আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে খুশি করতে পারেনি। তিনি উৎপাদন আরও বাড়ানোর কথা বলেন। কিন্তু সেই আবেদনে তখন সাড়া দেয়নি ওপেক। সম্প্রতি রোমে জি-২০ গোষ্টীভুক্ত দেশগুলির বৈঠকে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলেন বাইডেন। সেই সময়ে ইটালির রাজধানীতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও উপস্থিত ছিলেন। ঠিক হয়, ওপেক ও তার সহযোগী দেশগুলির উপরে চাপ বাড়ানো হবে। সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ করেছে বাইডেন প্রশাসন। তবে তাতে এবারও ফল মিলল না।