ছবি এএফপি।
অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে কিছু দিন আগে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলিতে অবিলম্বে ৭০ হাজার কোটি টাকা পুঁজি ঢালার কথা বলেছেন। বৃহস্পতিবার রিজার্ভ ব্যাঙ্কের বার্ষিক রিপোর্ট সামনে আসার পরে দেখা গেল, গত অর্থবর্ষে (২০১৮-১৯) ভারতীয় ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থায় হওয়া প্রতারণার অঙ্ক তার থেকেও একটু বেশি। প্রায় ৭১,৫৪২ কোটি। তার আগের বছরে ওই অঙ্ক ছিল ৪১,১৬৭.০৪ কোটি টাকা।
সাম্প্রতিক কালে দেশের বিভিন্ন ব্যাঙ্কে একের পর এক প্রতারণার অভিযোগ সামনে আসার পরে অস্বস্তি বেড়েছিল মোদী সরকারের। এ বার সেই অস্বস্তি আরও কয়েক দফা বাড়িয়ে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের বার্ষিক রিপোর্ট জানিয়ে দিল, গত অর্থবর্ষে বিভিন্ন ব্যাঙ্কে প্রতারণা-জালিয়াতির ঘটনা বেড়েছে আরও অনেকখানি, প্রায় ১৫%। টাকার অঙ্কের নিরিখে বৃদ্ধির হার ৭৪%। শুধু তাই নয়, প্রতারণা সবচেয়ে বেশি হয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলিতেই। ৩,৭৬৬টি ঘটনায় প্রায় ৬৪,৫০৯ কোটি টাকা। যেখানে তার আগের বছর ২,৮৮৫টি ঘটনায় নয়ছয়ের অঙ্ক ছিল ৩৮,২৬০ কোটি। প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতেই রাষ্ট্রায়ত্ত পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কে ধরা পড়েছিল নীরব মোদীর ১৩,০০০ কোটি টাকার ঋণ প্রতারণা।
সংশ্লিষ্ট মহলে প্রশ্ন, কেন্দ্র বার বার নজরদারিতে জোর দেওয়ার কথা বললেও, প্রতারণা এতখানি বাড়ল কী করে? অনেকেই আশঙ্কা প্রকাশ করে বলছেন, অনুৎপাদক সম্পদের জেরে নাকাল ব্যাঙ্কগুলিতে পুঁজি নয়ছয় রোখা না গেলে তাদের আর্থিক খুঁটিই বা মজবুত হবে কী করে! তা সে সরকার যতই তহবিল জোগাক।
শীর্ষ ব্যাঙ্কের রিপোর্ট অনুযায়ী, গত অর্থবর্ষে যে সব প্রতারণার ঘটনা ঘটেছে, তার সিংহভাগ জুড়েই আছে ঋণ। আরবিআই বলেছে, ব্যাঙ্ক লেনদেনে নজরদারির ব্যবস্থা উন্নত করতে বিভিন্ন তথ্য ভাণ্ডারের মধ্যে সংযোগ বাড়ানোর বিষয়টি খতিয়ে দেখছে তারা। কর্পোরেট বিষয়ক মন্ত্রক ও বিভিন্ন সংস্থার হাত মিলিয়েই। তার পরে করা হবে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ।