বার্তা: সাংবাদিক বৈঠকে অর্থমন্ত্রী। নয়াদিল্লিতে বৃহস্পতিবার। পিটিআই
নগদের অভাব কোথাও নেই। বাজারে কেনাকাটা হচ্ছে। প্রত্যন্ত এলাকায় চাহিদা যথেষ্ট। ব্যাঙ্কগুলিও দরাজ হাতে ঋণ দিচ্ছে। আজ বেসরকারি ব্যাঙ্ক ও অন্যান্য ঋণদাতা সংস্থার সঙ্গে বৈঠকের পরে এই দাবি করলেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। বললেন, ব্যাঙ্কের কর্তারাই তাঁকে এ সব জানিয়েছেন। এমনকি কেউ নাকি চাহিদার অভাব রয়েছে বলেননি। তার পরেই তাঁর আশ্বাস, অতএব চলতি অর্থবর্ষের দ্বিতীয়ার্ধেই উজ্জ্বল হবে অর্থনীতির ছবি। যা শুনে তাজ্জব বনে যাচ্ছেন বিরোধীরা। অনেকেরই প্রশ্ন, এপ্রিল-জুন ত্রৈমাসিকে বৃদ্ধি যখন ৫% হয়ে ছ’বছরের তলানি ছুঁয়েছে, অর্থনীতির ঝিমুনি নিয়ে যখন শিল্প থেকে অর্থনীতিবিদ সবাই উদ্বিগ্ন, তখন অর্থমন্ত্রী এমন দাবি করলেন কী ভাবে? কেউ বললেও, তা বিশ্বাস করার কারণই বা কী?
নির্মলার কথায়, ‘‘বৈঠক টনিকের মতো কাজ করেছে। ইতিবাচক কথা শুনেছি। একজনও বলেননি কোথাও কোনও উদ্বেগের কারণ আছে।’’ তাঁর দাবি, বাজারে চাহিদা ফেরার বার্তা পেয়েছেন তিনি। এমনকি প্রত্যন্ত অঞ্চলেও। ক্ষুদ্র ঋণ সংস্থাগুলিও সে কথা বলেছে। কাজেই দু’একটি ক্ষেত্রে এখন সমস্যা থাকলেও অর্থনীতি চাঙ্গা হয়ে উঠবে অচিরেই।
বিক্রি নাগাড়ে কমায় বহু গাড়ি সংস্থা সাময়িক উৎপাদন বন্ধ রাখছে। বৃহস্পতিবারই অশোক লেল্যান্ড বলেছে সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মিলিয়ে পাঁচ দিন চেন্নাই কারখানায় কাজ হবে না। কিন্তু নির্মলার দাবি, বেসরকারি ব্যাঙ্কের কর্তারা তাঁকে বলেছেন, বাণিজ্যিক গাড়ি বিক্রির কমা একেবারেই ব্যবসার ওঠাপড়া। এমন হয়ে থাকে। ২০১০ সালেও হয়েছিল। ৩-৬ মাসের মধ্যেই তা বাড়তে শুরু করবে। এর আগে যাত্রিবাহী গাড়ি প্রসঙ্গে নির্মলা বলেছিলেন, নতুন প্রজন্ম ওলা-উবরে বেশি চড়ে বলে বিক্রি কমছে। আজ বলেছেন, এ জন্য দায়ী ক্রেতাদের মনোভাব। টাটা মোটরসের জাগুয়ার ল্যান্ড রোভারও নভেম্বরে ব্রিটেনের কারখানায় এক সপ্তাহ উৎপাদন বন্ধ রাখবে জানিয়েছে।
বেসরকারি ব্যাঙ্ক কর্তারা অবশ্য মানছেন, বেসরকারি লগ্নি বা বড় প্রকল্পের জন্য ঋণের চাহিদা নেই। যে কারণে কোটাক মহীন্দ্রা ব্যাঙ্কের প্রধান উদয় কোটাকের মন্তব্য, ‘‘বেসরকারি লগ্নির বৃদ্ধি জরুরি।’’ তবে ব্যাঙ্কগুলির দাবি, কম দামের সরকারি আবাসন প্রকল্পে যথেষ্ট সাড়া মিলেছে। তাই এগুলির সংজ্ঞা ৪৫ লক্ষ থেকে বাড়িয়ে ৫০ লক্ষ টাকা করা হোক।
লগ্নি টানতে অর্থমন্ত্রী রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলিকে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের রেপো রেট অনুযায়ী সুদ ধার্যের নির্দেশ দিয়েছিলেন। বেসরকারি ব্যাঙ্কগুলির ইঙ্গিত, তারাও সে পথে হাঁটবে। তবে আমানতে সুদ কমাবে কি না, তা নিয়ে কোটাকের বক্তব্য, ‘‘কেউ আমাদের আটকে রাখেনি। প্রতিটি ব্যাঙ্ক নিজের মতো সিদ্ধান্ত নেবে।’’