নিয়ম অনুযায়ী, কর্মী ও অফিসারদের প্রতিনিধি পরিচালন পর্ষদে থাকার কথা প্রায় সমস্ত সরকারি ও রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কেই। কিন্তু দীর্ঘ দিন ধরে সেখানে কর্মী ও অফিসারদের মধ্যে থেকে ডিরেক্টর নিযুক্ত করা হচ্ছে না। কোনও কোনও ব্যাঙ্কে ওই দুই পদ তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে খালি পড়ে রয়েছে। এ সংক্রান্ত ফাইল প্রধানমন্ত্রীর দফতরে রয়েছে বলে ইউনিয়ন নেতাদের জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি।
ব্যাঙ্কিং আইন অনুযায়ী, প্রতিটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের পরিচালন পর্ষদে এক জন কর্মী-ডিরেক্টর এবং এক জন অফিসার-ডিরেক্টর নিযুক্ত হওয়ার কথা। এক সময়ে দেশের মোট ২৬টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের মধ্যে এক মাত্র আইডিবিআই ছাড়া বাকি সবগুলির পরিচালন পর্ষদেই কর্মী এবং অফিসারদের থেকে ডিরেক্টর ছিল। কিন্তু এখন তাদের একটিতেও কর্মী বা অফিসার ডিরেক্টর নেই। উল্লেখ্য, হালে স্টেট ব্যাঙ্ক তাদের সহযোগী ব্যাঙ্কগুলিকে নিজেদের সঙ্গে মিশিয়ে নেওয়ায় দেশে এখন রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ২১টি।
অল ইন্ডিয়া ব্যাঙ্ক এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রাজেন নাগর জানান, ‘‘আমরা দু’বছর ধরে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীকে কর্মী-ডিরেক্টরের খালি পদ পূরণের জন্য দাবি করে আসছি। গত সেপ্টেম্বরেও তাঁর সঙ্গে কথা বলেছি। উনি সব সময়েই বলেছেন যে, ফাইল তাঁরা ছেড়ে দিয়েছেন। সেটি এখন প্রধানমন্ত্রীর দফতরে আটকে রয়েছে।’’
ব্যাঙ্কে কর্মী এবং অফিসারদের থেকে ডিরেক্টর নিয়োগ বন্ধ থাকায় তীব্র ক্ষোভ তৈরি হয়েছে কর্মী এবং অফিসার ইউনিয়নগুলির মধ্যে। ব্যাঙ্কিং শিল্পে অফিসারদের সংগঠন আইবকের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জয় দাসের অভিযোগ, ‘‘কেন্দ্রে বর্তমান সরকার আসার পর থেকে পর্ষদে কর্মী-ডিরেক্টর নিয়োগ বন্ধ।’’
তাঁর মতে, ‘‘একটি ব্যাঙ্কের সঙ্গে অন্যটিকে মেশানো বা ব্যাঙ্ক বিলগ্নিকরণের ব্যাপারে কেন্দ্র যে-সব কথা দীর্ঘ দিন ধরে বলছে, তা নিয়ে পর্ষদে আলোচনা হয়। তা যাতে ব্যাঙ্কের কর্মীরা জানতে না-পারেন, তার জন্যই সেখানে কর্মী এবং অফিসারদের থেকে ডিরেক্টর নিয়োগ বন্ধ করে দিয়েছে কেন্দ্র।’’
ইউকো ব্যাঙ্কের পরিচালন পর্ষদের প্রাক্তন কর্মী-ডিরেক্টর পার্থ চন্দ বলেন, ‘‘যখন ডিরেক্টর ছিলাম, তখন অনেক খবরই আগাম জানতে পারতাম। যে সব সিদ্ধান্ত ব্যাঙ্কের এবং তার গ্রাহকদের স্বার্থের পরিপন্থী বলে মনে হত, তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতাম। কিন্তু এখন যা অবস্থা, তাতে ওই ধরনের সিদ্ধান্ত বিনা বাধায় পাশ করিয়ে নেওয়া যাবে।’’