ফাইল চিত্র।
ভারতে জ্বালানির চাহিদার ৮৫ শতাংশই আমদানি নির্ভর। রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধের জেরে বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের দাম ফের চড়তে শুরু করায় খরচ বাড়ছে দেশের। সংশয় তৈরি হচ্ছে জোগান নিয়েও। পরিবহণ খরচ চড়ার পাশাপাশি কন্টেনার জোগানের সঙ্কটও মাথা তুলেছে। সব মিলিয়ে জ্বালানির আমদানি নির্ভরতা কমানোর এই সব কারণ তুলে ধরেই ফের বিকল্প জ্বালানির গাড়ি ব্যবহারে জোর দিলেন কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণ মন্ত্রী নিতিন গডকড়ী। পাশাপাশি দাবি করলেন, ছ’মাসের মধ্যে ফ্লেক্স-ফুয়েল ইঞ্জিনযুক্ত গাড়ি তৈরির বিষয়ে সংস্থাগুলি তাঁকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। পেট্রলের মতো সাবেক জ্বালানির পাশাপাশি পুরোদস্তুর এক বা একাধিক বিকল্প জ্বালানিতেও (ইথানল বা মিথানল) চলতে সক্ষম গাড়ির ইঞ্জিনই হল ফ্লেক্স-ফুয়েল ইঞ্জিন।
নিতিন দীর্ঘ দিন ধরে ফ্লেক্স-ইঞ্জিন চালুর জোরালো বার্তা দিচ্ছেন গাড়ি শিল্পকে। সম্প্রতি নেটে এবং কলকাতায় বণিকসভা সিআইআইয়ের (পূর্বাঞ্চল) বার্ষিক সভায় এবং পরে আর একটি অনুষ্ঠানেও অশোধিত তেলের জোগানের সমস্যার কথা তোলেন তিনি। কলকাতার সভায় নিতিনের দাবি, পুরোদস্তুর পেট্রল অথবা ইথানল দিয়ে চলার মতো ফ্লেক্স-ইঞ্জিনের গাড়ি ছ’মাসের মধ্যে আনার কথা বলেছে টয়োটা। হুন্ডাই, সুজ়ুকি-ও আশ্বাস দিয়েছে। অন্য সভাতেও তিনি জানান, সম্প্রতি দেশের সমস্ত গাড়ি সংস্থার শীর্ষ-কর্তা ও সংস্থাগুলির সংগঠন সিয়ামের প্রতিনিধিদের সঙ্গে তাঁর বৈঠকেও ছ’মাসের মধ্যে ফ্লেক্স-ফুয়েল ইঞ্জিনের গাড়ির উৎপাদন শুরুর প্রতিশ্রুতি মিলেছে। টিভিএস মোটর, বজাজ অটো ইতিমধ্যেই এমন দু’চাকার গাড়ি উৎপাদন প্রক্রিয়া শুরু করেছে। পাশাপাশি বুধবার টয়োটার হাইড্রোজেন জ্বালানির একটি গাড়ির পাইলট প্রকল্প চালু হবে দিল্লিতে।
তবে লক্ষণীয় ভাবে তিনি জানিয়েছেন, ফ্লেক্স ইঞ্জিন তৈরির জন্য সরকার একটি পরামর্শ বার্তা (অ্যাডভাইজ়রি) দিয়েছে গাড়ি শিল্পকে। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, আসলে এ নিয়ে এখনই কতটা তাড়াহুড়ো করা সম্ভব, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে শিল্পের অন্দরেই। কারণ গত কয়েক বছরে নানা নতুন মাপকাঠি মেনে গাড়ি তৈরির জন্য বিপুল লগ্নি করেছে সংস্থাগুলি। করোনায় আরও গাড্ডায় পড়েছে গাড়ি শিল্প। তাই নির্দেশ নয়, আপাতত পরামর্শই দিচ্ছে কেন্দ্র।