প্রকাশ: বৃহস্পতিবার গাড়ি মেলায় এই এসইউভি-র উদ্বোধন ঘিরে উৎসাহ ছিল চোখে পড়ার মতো। ছবি: দেবপ্রিয় সেনগুপ্ত
পাঁচ বছরের মধ্যে গাড়ি তৈরির ক্ষেত্রে বিশ্বে শীর্ষ স্থান দখল করতে পারে ভারত, দাবি সড়ক পরিবহণ মন্ত্রী নিতিন গডকড়ীর। তবে বৃহস্পতিবার সর্বভারতীয় গাড়ি মেলায় (অটো এক্সপো) দাঁড়িয়ে একই সঙ্গে তার অভিযোগ, দেশে গাড়ি দুর্ঘটনার পরিসংখ্যান উদ্বেগজনক। ফলে নির্মাতা সংস্থাগুলিকে সুরক্ষা ব্যবস্থায় জোর দিতে হবে। তাঁর বার্তা, এ নিয়ে শিল্পের উপরে জোর করে কিছু চাপাতে চায় না সরকার। দুর্ঘটনা রুখতে গাড়িতে এয়ারব্যাগের ব্যবহার নিয়ে মাথা তোলা বিতর্কের প্রেক্ষিতে মন্ত্রীর এই মন্তব্য তাৎপর্যপূর্ণ, বলছে সংশ্লিষ্ট মহল। কারণ, এর আগেও সব গাড়িতে এয়ারব্যাগের মতো সুরক্ষা দেওয়ার পক্ষে সওয়াল করেছেন নিতিন। কিন্তু শিল্পের একাংশের মতে, ভারতে কম দামি গাড়ির ক্রেতা বেশি। নানা কারণে হালে যেগুলির দাম বেড়েছে। এয়ারব্যাগ তাকে আরও ঠেলে তুলবে। অথচ সব রকম গাড়িতে এর প্রয়োজন না-ও হতে পারে।
গাড়ির শিল্পের নতুন ভাবনা ও পরিকল্পনা তুলে ধরতে এই মেলার আয়োজন করে গাড়ি সংস্থাগুলির সংগঠন সিয়াম, যন্ত্রাংশ শিল্পের সংগঠন অ্যাকমা এবং বণিকসভা সিআইআই। পথ সুরক্ষা নিয়েও নানা কর্মসূচি নেয় তারা। এ দিন আনুষ্ঠানিক ভাবে মেলাটি উদ্বোধনের পরেই নিতিন এবং ভারী শিল্পমন্ত্রী মহেন্দ্র নাথ পাণ্ডে পথ দুর্ঘটনার প্রসঙ্গ তোলেন। পরে সিয়াম ও সুরক্ষা যন্ত্রাংশ ব্যবসায় যুক্ত রোজ়মার্টা টেকনোলজিসের উদ্যোগে আয়োজিত সুরক্ষা সংক্রান্ত প্যাভিলিয়নের উদ্বোধন করেন নিতিন। এ দিনও মারুতি-সুজ়ুকি, এমজি মোটর-সহ একাধিক সংস্থা নতুন গাড়ি বা ভাবনা ভিত্তিক মডেল প্রদর্শন করেছে মেলায়।
মহেন্দ্রর দাবি, বিশ্বে যত গাড়ি চলে, তাতে ভারতের ভাগ ১%। অথচ দুর্ঘটনায় মৃত্যুর ক্ষেত্রে ১১%। নিতিন জানান, বছরে পাঁচ লক্ষ দুর্ঘটনায় দেড় লক্ষ মানুষের মৃত্যু হয় এখানে। সেই সূত্রেই তাঁর বার্তা, আমজনতাকে সচেতন করার দায়িত্ব নেবে সরকার। গাড়ির সুরক্ষা ব্যবস্থাকে পাকাপোক্ত করুক শিল্প। তাঁর কথায়, ‘‘গাড়িতে এয়ারব্যাগ থাকলে হয়তো দাম বাড়বে। কিন্তু জীবনের দামের চেয়ে তা গুরুত্বপূর্ণ নয়।’’ মারুতির-সুজ়ুকির অন্যতম কর্তা শশাঙ্ক শ্রীবাস্তব পরে বলেন, ‘‘আমরা গাড়িতে প্রয়োজনীয় সুরক্ষা ব্যবস্থা রাখি। তবে নতুন নিয়ম চালু হলে তা মেনে চলার জরুরি।’’
নিতিনের অবশ্য দাবি, ভবিষ্যতে আমেরিকার থেকেও ভাল হবে ভারতের রাস্তাঘাট। এর পরেই সহাস্যে মন্তব্য, ‘‘উন্নত রাস্তা হবে বিহার, উত্তরপ্রদেশ, উত্তর-পূর্বাঞ্চলেরও।’’ পুরনো গাড়ি বাতিল করে তার উপাদান পুনর্ব্যবহারের পক্ষেও সওয়াল করেছেন তিনি। দাবি করেছেন, এতে খরচ প্রায় ৩৩% কমবে। বার্তা দিয়েছেন ইথানল, হাইড্রোজ়েনের মতো বিকল্প জ্বালানির প্রযুক্তি বিস্তারেরও।