শেষ পর্যন্ত অর্থনীতির সেই বেহাল দশার কথা স্বীকার করে নিলেন মোদী সরকারের এক শীর্ষ কর্তা নীতি আয়োগের সিইও অমিতাভ কান্ত। ছবি: পিটিআই।
অর্থনীতির ঝিমিয়ে পড়া নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। মন্ত্রকের কর্তাদেরও নির্দেশ দিয়েছেন কোনও প্রশ্নের উত্তর না দেওয়ার জন্য। কিন্তু ঘুরপথে হলেও শেষ পর্যন্ত অর্থনীতির সেই বেহাল দশার কথা স্বীকার করে নিলেন মোদী সরকারের এক শীর্ষ কর্তা। নীতি আয়োগের সিইও অমিতাভ কান্ত। যদিও তাঁর দাবি, অর্থনীতির গতি নাকি কমেছে এক গুচ্ছ সংস্কারের কারণেই।
অমিতাভের মতে, জিএসটি, দেউলিয়া বিধি, আবাসন নিয়ন্ত্রণ আইনের মতো এক গুচ্ছ সংস্কারের কারণেই গতি কমেছে অর্থনীতির চাকায়। যা শুনে বিরোধীরা বলছেন, এই প্রথম সরকারের কেউ অন্তত এ কথা স্বীকার করলেন। মেনে নিলেন যে, নোট বাতিল, ত্রুটিপূর্ণ জিএসটির মতো ভুল পদক্ষেপের ফলেই আসলে ভুগতে হচ্ছে দেশের অর্থনীতিকে।
এত দিন অর্থনীতির শ্লথ গতি নিয়ে শিল্পমহল নীরব ছিল। কিন্তু হালে একে একে মুখ খুলতে শুরু করেছেন বিভিন্ন সংস্থার কর্ণধাররাও। যেমন, এলঅ্যান্ডটি-র নন-এগ্জ়িকিউটিভ চেয়ারম্যান এ এম নায়েক, এইচডিএফসি-র চেয়ারম্যান দীপক পারেখ প্রমুখ। পারেখের মতে, অর্থনীতির হাল দেখেই ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে ব্যাঙ্কগুলি ঝুঁকি নিতে চাইছে না। ফলে ব্যাঙ্ক ছাড়া অন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানে নগদের অভাব ঘটছে।
নায়েকের মন্তব্য এবং অর্থনীতিতে মন্দ গতির অন্যান্য প্রমাণ তুলে ধরে আজ মোদী সরকারকে ফের নিশানা করেছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধী। তাঁর অভিযোগ, বিজেপির কাজই বহু দিনের পরিশ্রমে তৈরি জিনিস ভাঙা। রেলে ৩ লক্ষ কর্মী কমানোর পরিকল্পনা, গাড়ি বিক্রি দু’দশকে সব থেকে কমে যাওয়া, বিএসএনএল-এমটিএনএলের ১.৯৮ লক্ষ কর্মীর জুলাইয়ে বেতন না হওয়ার মতো নানা উদাহরণ তুলে ধরেছেন তিনি।
অর্থনীতি চাঙ্গা করতে কান্তের দাওয়াই, নগদের জোগান বাড়াতে হবে। চাঙ্গা করতে হবে বেসরকারি লগ্নি। বিলগ্নিকরণের পথে হাঁটতে হবে আরও বেশি করে। জরুরি কাঠামোগত সংস্কারও। অর্থনীতিবিদদের প্রশ্ন, কান্ত যখন সংস্কারের প্রয়োজন বুঝছেন, তখন ভোটে বিপুল জয়ের পরেও বাজেটে তার চিহ্ন দেখা গেল না কেন? অর্থমন্ত্রী অবশ্য উত্তর দিতে নারাজ।