ফাইল চিত্র।
কেন্দ্র ও রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার পরিকাঠামো বেসরকারি সংস্থাকে ব্যবহার করতে দিয়ে চার বছরে ৬ লক্ষ কোটি টাকা রাজকোষে আনার পরিকল্পনা করেছে মোদী সরকার। যার বিরোধিতা করেছে কংগ্রেস, তৃণমূল, সিপিএম-সহ বিরোধী দলগুলি। মুখ খুলেছে আরএসএসের শ্রমিক সংগঠন বিএমএস-ও। কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গাঁধীর অভিযোগ, এই পদক্ষেপের মাধ্যমে ‘বন্ধু’ শিল্পপতিদের হাতে জাতীয় সম্পত্তি তুলে দিতে চাইছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এ নিয়ে বুধবার বিরোধীদের তীব্র আক্রমণ করলেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। তাঁর পাল্টা অভিযোগ, নিজেদের আমলে জমি, খনির মতো জাতীয় সম্পদ বেচে আর্থিক সুবিধা নিয়েছে কংগ্রেস। রাহুল কি আদৌ সম্পত্তি কাজে লাগিয়ে রাজস্ব সংগ্রহের (মনিটাইজেশন) অর্থ জানেন?
যে সমস্ত পরিকাঠামো ব্যবহারের দায়িত্ব বেসরকারি সংস্থার হাতে দেওয়া হবে, তার তালিকা সোমবার প্রকাশ করেছে কেন্দ্র। সে দিনই নির্মলা দাবি করেছিলেন, কেন্দ্র বেসরকারি সংস্থাকে ওই সমস্ত সম্পত্তি বেচে দিচ্ছে না। বহু সরকারি সম্পত্তি অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে বা যথেষ্ট ব্যবহার হচ্ছে না। অথচ তা থেকে সরকারের আয়ের সুযোগ রয়েছে। সেগুলিই বেসরকারি সংস্থাকে ব্যবহার করতে দেওয়া হবে। নির্দিষ্ট সময় পরে আবার কেন্দ্রের হাতে ফিরে আসবে ওই সব সম্পদ। বিরোধীদের অবশ্য দাবি, এই পদক্ষেপ করে বিক্রির রাস্তাই চওড়া করছে কেন্দ্র। রাহুলের বক্তব্য, অতীতে বিমানবন্দর-সহ বহু পরিকাঠামোর ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, সুবিধা পাচ্ছেন হাতে গোনা কয়েকজন ‘বন্ধু’ শিল্পপতি।
এ দিন মুম্বইয়ে সাংবাদিক বৈঠকে এক প্রশ্নের উত্তরে নির্মলার বক্তব্য, সরকারি সম্পদ ব্যবহার করে আয়ের রাস্তায় হেঁটেছিল কংগ্রেসও। ২০০৮ সালে মুম্বই-পুণে এক্সপ্রেসওয়ে থেকে ৮০০০ কোটি টাকা তুলেছিল ইউপিএ সরকার। নয়াদিল্লি রেল স্টেশন পরিচালনা করতে দেওয়ার জন্য চেয়েছিল প্রস্তাব। নির্মলার কথায়, ‘‘উনি (রাহুল) যদি সত্যিই মনিটাইজ়েশনের বিরোধী হন, তা হলে সেই সময়ে কেন নয়াদিল্লি রেল স্টেশনের রিকোয়েস্ট ফর প্রোপোজ়াল ছিঁড়ে ফেললেন না? মনিটাইজ়েশনের অর্থ কি উনি বোঝেন?’’ কমনওয়েলথ গেমসের সময়ে কংগ্রেসের ‘বন্ধুদের’ সুবিধা পাইয়ে দেওয়া হয়েছিল বলেও নির্মলার অভিযোগ।
বেসরকারি সংস্থাকে সরকারি সম্পত্তি ব্যবহার করতে দেওয়া নিয়ে কেন্দ্রকে অবশ্য বিঁধেছেন বিশ্ব ব্যাঙ্কের মুখ্য অর্থনীতিবিদ কৌশিক বসুও। টুইটারে তাঁর বক্তব্য, এটা ঠিক যে কেন্দ্র সম্পত্তি বিক্রি করছে না। লিজ় দিচ্ছে। কিন্তু সরকারের সঙ্গে যখন বেসরকারি ক্রেতার ঘনিষ্ঠতা বাড়ে তখন তার ফল খারাপ হয়। ভাড়ার দামে বিক্রি হয়ে যায় সরকারি সম্পত্তি। যে ভাবে রাশিয়ায় মুষ্টিমেয় কিছু ক্ষমতাবান সরকারি সম্পত্তি হস্তগত করেছিল।