লগ্নির অঙ্ক নয়। ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্পকে (এমএসএমই) চিহ্নিত করতে দেখা হবে তাদের বছরে ব্যবসার অঙ্কের হিসেবই। সোমবার এই মর্মেই লোকসভায় সংশোধনী বিল পেশ করেছেন মন্ত্রী গিরিরাজ সিংহ। ২০১৫ সালের এই সংক্রান্ত অন্য একটি বিল এ দিন প্রত্যাহার করেছেন তিনি।
এত দিন কারখানা ও যন্ত্রপাতিতে মূলধন লগ্নির নিরিখে চিহ্নিত করা হত এমএসএমই। এ বার সেই প্রথায় বদল আনতে চাইছে কেন্দ্র। তাদের প্রস্তাব, বার্ষিক ব্যবসার অঙ্কের ভিত্তিতে এ বার ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি সংস্থাগুলির শ্রেণিবিন্যাস করা হোক। যুক্তি, সংশ্লিষ্ট মহলের সঙ্গে আলোচনায় দেখা গিয়েছে, লগ্নির হিসেবে শিল্পের শ্রেণিবিন্যাস করতে হলে সেই লগ্নির খুঁটিনাটি যাচাই করে দেখতে হয়। যা খরচ সাপেক্ষ। শিল্পের প্রসারের ক্ষেত্রেও এই প্রক্রিয়ার বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। পাশাপাশি প্রস্তাবিত বিল অনুযায়ী, ব্যবসার অঙ্কের ভিত্তিতে শিল্পের সংজ্ঞা তৈরি হলে জিএসটির সাহায্যেই সেই হিসেব পাওয়া সহজ। এতে গোটা ব্যবস্থায় স্বচ্ছতাও আসবে।
প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ায় মার্চেন্ট চেম্বারের অন্যতম কর্তা সঞ্জীব কোঠারি ও এই শিল্পে যুক্ত গৌতম রায় কেন্দ্রের পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন। কিন্তু ফসমির প্রেসিডেন্ট হিতাংশু গুহর দাবি, এই নিয়ম চালু হলে আদতে সংস্থাগুলির সমস্যাই হবে। কারণ, ছোট সংস্থাগুলিকে রক্ষাকবচ দিতে তাদের সরকারি বরাত দেওয়া হয়। ৩৫৮টি পণ্য তাদের জন্যই নির্দিষ্ট রয়েছে। কিন্তু নতুন নিয়মে লগ্নি কম হলেও তাদের ব্যবসার অঙ্ক বেশি হতেই পারে। তখন তারা আর সরকারি বরাত পাবে না। সে ক্ষেত্রে বড় সংস্থাগুলির সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা মুশকিল হবে তাদের।
এ দিকে, ৪ অগস্ট জিএসটি পরিষদের পরবর্তী বৈঠক। সেখানে এমএসএমই নিয়ে আলাদা ভাবে আলোচনা হওয়ার কথা। অভিযোগ, নোটবন্দি ও তড়িঘড়ি জিএসটি চালুর ফলে এই ব্যবসাগুলিই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। ফলে তাদের আর কী কী সুবিধা দেওয়া যায়, তা নিয়ে আলোচনা হতে পারে বৈঠকে। অনেকেই বলছেন, ব্যবসায় ধাক্কার ফলে কেন্দ্রের প্রতি অসন্তোষ বেড়েছে ছোট-মাঝারি ব্যবসায়ীদের। অনেকের মতে, সেই কারণেই হয়তো ভোট বছরে তাঁদের মন পেতে তৎপর হয়ে উঠেছে নরেন্দ্র মোদী সরকার।