যেন ‘হট কেক’। দোকানের তাকে তুলতে না-তুলতেই নিমেষে উধাও। কেউ একসঙ্গে কিনছেন ৩০টা! কেউ দোকানিকে নিজের জন্য অন্তত একটা সরিয়ে রাখার অনুরোধ জানাচ্ছেন নতুন স্টক ঢোকার আগেই। ডেঙ্গুর সৌজন্যে এই রমরমা চাহিদা মশা তাড়ানোর রোল-অন, মলম, জেল-সহ বিভিন্ন পণ্যের। যার হাত ধরে রকেটের মতো চড়ছে এগুলির বাজার।
কলকাতা-সহ রাজ্য জুড়ে সর্বত্রই এখন হয় অজানা জ্বর, নয়তো ডেঙ্গি নিয়ে কানাকানি। পুরসভা কবে মশা তাড়ানোর তেল ছড়াবে, সেই অপেক্ষায় থেকে ঝুঁকি নিতে আপত্তি আমজনতার। ফলে মশার কামড়ের হাত থেকে বাঁচতে বিভিন্ন সংস্থার মলম, রোল-অন, স্প্রে, প্যাচ ইত্যাদির পেছনে ছুটছেন তাঁরা।
দক্ষিণ কলকাতার ওষুধের দোকানের এক কর্মীর দাবি, চাহিদা অন্তত ৫০ গুণ বেড়েছে। আর এক দোকানির হিসেব, আগে ২০টা রোল-অন ১৫ দিনে বিক্রি হতো, এখন তা এক দিন, এমনকী কখনও কখনও দু’ঘণ্টার মধ্যেই শেষ!
আরও পড়ুন:চাপে কাজ করা যাচ্ছে না, প্রতিবাদ চিকিৎসকদের
সাধারণ মানুষ মনে করছেন, ঘরে তা-ও মশা আটকাতে ধূপ বা তেল ব্যবহারের চল আছে। কিন্তু ডেঙ্গির বাহক এডিস ইজিপ্টাই দিনের বেলায় কামড়ায়, যখন বেশির ভাগ মানুষই থাকেন বাইরে। বিশেষত স্কুল পড়ুয়া বাচ্চাদের নিয়ে দুশ্চিন্তায় ঘাম ছুটছে অভিভাবকদের। সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, এ অবস্থায় মশা যাতে গায়ে বসতে না-পারে সেটাই নিশ্চিত করতে চাইছেন সকলে। মলম, রোল-অন, স্প্রে, প্যাচের মতো পণ্য তাই মোক্ষম অস্ত্র হয়ে উঠছে। এক ক্রেতা যেমন বলছেন, ‘‘লাগালেই যে মশা কামড়াবে না, সেই গ্যারান্টি কেউ দিচ্ছে না। কিন্তু ঝুঁকি নিয়ে লাভ কী? যদি লাগিয়ে কাজ হয়, তাই কিনছি।’’
বিক্রির বিশদ তথ্য না-দিলেও, ডাবর, গোদরেজের মতো সংস্থা জানাচ্ছে, মশা তাড়ানোর পণ্যগুলির বিক্রি বহু গুণ বেড়েছে। ডাবর ইন্ডিয়ার বিপণন-প্রধান (হোম কেয়ার) প্রশান্ত অগ্রবাল বৃহস্পতিবার বলেন, ‘‘আমাদের এই বাজার বৃদ্ধির হারে পূর্বাঞ্চলই শীর্ষে। কারণ ক্রেতারা নিজেরাই সুরক্ষিত থাকতে চাইছেন।’’ ভারত ও সার্ক অঞ্চলে গোদরেজ কনজিউমার প্রোডাক্টসের প্রধান সুনীল কাটারিয়ার দাবি, পণ্যের চাহিদা এতই বেড়েছে যে, কোথাও সাময়িক ভাবে জোগান ফুরোতে পারে।